ব্রিটেনের বনে অন্ধকার চোখের ‘রহস্য-মানবী’

UKভূতে বিশ্বাস করেন? প্লিজ, প্রশ্নটা শুনেই মুখ ঘুরিয়ে নেবেন না। আপনাকে ভূতে বিশ্বাস করানোর কোনো তাগিদ এই প্রতিবেদনের নেই। মঙ্গল গ্রহে পানি খোঁজার যুগে ভূতপ্রেত নিয়ে আলোচনা সন্ধ্যাবেলায় মুড়ি-বেগুনি খেতে খেতে নিতান্তই বিনোদন হতে পারে মাত্র। তবুও ব্রিটেনে সম্প্রতি যা ঘটেছে, তার কোনো বৈজ্ঞানিক যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না অতিবড় বাস্তববাদীরাও।
কিছু দিন আগে ব্রিটেনের গহন জঙ্গল ক্যানক চেজ-এ দেখা গিয়েছে এমন এক বালিকাকে, চোখদুটি যার নিকষ কালো। অনেকটা গোরুর মতো। এতটাই কালো যে, চোখ আদৌ আছে কিনা, বোঝার সাধ্য নেই। সঙ্গে রক্তশূন্য ফ্যাকাশে শরীর। বিস্ময়ের বিষয় হলো, মেয়েটিকে ওই জঙ্গলে দেখা গেল প্রায় ৩০ বছর পর। কিছুক্ষণ দেখা দেয়ার পরই ছুটতে ছুটতে হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে সে। ব্রিটেনের একটি প্রথম সারির দৈনিকে রিপোর্টটি প্রকাশিত হতেই জানা গেছে, এই ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছেন আরও অনেকেই।
কে ওই রহস্যময়ী বালিকা? কেন এত বছর পর তার আবির্ভাব? এ কি কোনও ভয়াবহ বিপর্যয়ের অশনি সঙ্কেত? হাজার প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে বেড়াচ্ছেন অতিপ্রাকৃতিক অনুসন্ধানকারীরা।
মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ক্যানন চেজ। ব্রিটেনের বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। স্ট্যাফোর্ডশায়ারের এই পাহাড়ি জঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে বেড়াতে যান দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুুরা।
সম্প্রতি সেখানে ছুটি কাটাতে যান ইংল্যান্ডের নামকরা অতিপ্রাকৃতিক অনুসন্ধানকারী লি ব্রিকলে। ক্যানন চেজে তার চর্মচক্ষে দেখা অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ব্রিটেনের পত্রিকা ‘হাফিংটন পোস্ট’-কে। ব্রিকলে-র দাবি, জঙ্গলে তিনি এমন এক বালিকাকে দেখেছেন, যার নিকষ কালো অন্ধকার চোখ ও রক্তশূন্য শরীর মৃতদেহের সমতুল্য। ব্রিকলে-র দিকে সে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিল। তারপরই তীব্র গতিতে মিলিয়ে যায় জঙ্গলের অন্দরে। ব্রিকলে-র মতে, এই বালিকা কোনো অতৃপ্ত আত্মা।
অতিপ্রাকৃতিক ঘটনা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা করছেন ব্রিকলে। তার লেখা কয়েকটি বই খুবই জনপ্রিয়। এর আগেও ব্রিকলে-র অনেক দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইংল্যান্ডের বহু বাস্তববাদী সরেজমিনে তদন্ত করতে গিয়ে নিশ্চিত প্রমাণ পেয়েছেন। ইতিমধ্যে ব্রিকলে-কে একই অলৌকিক অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন আরো নয়জন। হাফিংটন পোস্ট-এ ব্রিকলে দাবি করেছেন, ক্যানন চেজ-এর গহন জঙ্গলে মধ্যে রাস্তায় আজ থেকে প্রায় ৩২ বছর আগে একই রকম ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলেন তার এক আত্মীয়াও।
কেমন সেই অভিজ্ঞতা?
ব্রিকলে-র বয়ান অনুযায়ী, ১৯৮২ সালের ঘটনা। তার আত্মীয়া বেড়াতে গিয়েছিলেন ক্যানন চেজ-এর জঙ্গলে। তখন পড়ন্ত বিকেল, সন্ধ্যা নামছে। হঠাৎ ওই নারী দেখতে পান, একটি মেয়ে উল্টো দিক থেকে দৌড়ে আসছে। মেয়েটির বয়স বড় জোর ৬ থেকে ৮ বছর। সে চেঁচাচ্ছিল, ‘মা আমাকে বাঁচাও।’ এরপর ঘন ঝোপঝাড়ের সামনে মেয়েটি থেমে ঘুরে তাকাল। দেখা গেল, মেয়েটির। নিকষ কালো চোখ এবং ফ্যাকাশে মুখ। সে যেন এক চলমান মৃতদেহ। কিছুক্ষণ মহিলার দিকে তাকিয়ে থাকার পরই ফের মিলিয়ে গেল সে। স্বাভাবিকভাবেই মেয়েটির পিছু নেননি ব্রিকলে-র আত্মীয়া।
বস্তুত, অনলাইন ফিকশন ফোরাম ক্রিপিপাস্তা উইকি-তেও কালো চোখের মানুষদের কথা রয়েছে। উত্তর আমেরিকার বেশ কয়েকটি প্রত্যন্ত ঝিল বা হ্রদের ধারে নাকি এই ধরনের মানুষ দেখা গেছে বলে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেই সব মানুষ রক্তশূন্য। মৃতদেহের মতো ফ্যাকাশে আর গোটা চোখই যেন তমসাময়।
আপাতত ক্যানন চেজ-এর ওই রহস্যময়ীকে নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন ব্রিকলে-সহ ব্রিটেনের বেশ কয়েকজন অতিপ্রাকৃতিক অনুসন্ধানকারী।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button