বাংলাদেশে জ্বালানিতে বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠ সময়

Gasবাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটারের সমুদ্র সীমা জয় করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের সুযোগ নিয়ে এসেছে। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক শঙ্কা, দারিদ্র্য পরিস্থিতি এবং অর্থনীতিতে উচ্চ ভর্তুকির কারণে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই একে বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচনা করছেন। ফলে জ্বালানি সংক্রান্ত অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ সীমিতই থেকে যাচ্ছে। অথচ এখনই বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠ সময়। শুক্রবার দ্য ডিপ্লোমেট-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সাগর অঞ্চল গবেষক ও রেডিও সাংবাদিক জ্যাক ডেটশ এসব কথা লিখেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এত সমস্যা নেই যে বিনিয়োগকারীরা এখানে আসতে চাইবেন না। অথচ গত বছর বাংলাদেশের অফশোর গ্যাস ক্ষেত্র থেকে অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস নিজেদেরকে গুটিয়ে নিয়েছে কম উত্পাদনের যুক্তি দেখিয়ে।
এদিকে বাংলাদেশের জাতীয় তেল কোম্পানি পেট্রোবাংলা অফশোরের গ্যাস উত্তোলনে ২০১২ সালের নিলামে দুটি কোম্পানিকে আকর্ষণ করেছে। একটি হলো ভারতের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশন। অন্যটি কনোকো ফিলিপস।
গত এপ্রিলে নির্ভেজাল অফশোরে তেল ব্লক নিয়ে পেট্রোবাংলা একটি নিলাম করেছে। এতে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো অনশোরে প্রবেশাধিকারের সুযোগ কম ও পেট্রোবাংলার কঠিন শর্তাবলী নিয়ে সমালোচনা করেছে। এ বছরের শুরুতে কনোকো ও রাশিয়ার স্ট্যাট অয়েল যৌথভাবে বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রে তেল ব্লকের বিষয়ে বিড করেছে। পরবর্তীতে গভীর সমুদ্রের আরও দুটি তেল ব্লকে চুক্তি করার চেষ্টা করে কনোকো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সমুদ্র সীমা হিসাব করে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদের পরিমাণ ২০০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। যা এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহত্। এগুলো উত্তোলনে এ বছরের শেষ দিকে পেট্রোবাংলা নতুন আরও ১৮টি তেল ও গ্যাস ব্লক নিলামে তুলবে। এর ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রাকৃতিক গ্যাস উত্পাদনে বৃহত্ একটি দেশ হবে বলে উল্লেখ করেছেন সেঞ্চুরি ফাউন্ডেশনের পলিসি এসোসিয়েট নেইল ভাটিয়া। ত
বে মান্যার এনার্জির হেড অব কনসাল্টিং রবিন মিলস বলেছেন, বাংলাদেশ বৃহত্ প্রাকৃতিক গ্যাস উত্পাদনকারী দেশ হবে কিনা তা নির্ভর করছে ২০০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট মজুদের সঠিকতার উপর। যেহেতু এই পরিমাণ গ্যাস থাকার বিষয়টি ধারণা করা হচ্ছে কিন্তু এর সঠিকতা নিশ্চিত নয় তাই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাবে না। তবে ভূতাত্ত্বিক ও প্রকোশলগত তথ্যের ভিত্তিতে এ মজুদের সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি।
বাংলাদেশের এখনই জ্বালানি উত্তোলন ও এর সঠিক মজুদ সম্পর্কে যথাযথ জরিপ করা প্রয়োজন। কিন্তু গভীর সমুদ্র থেকে গ্যাস কিংবা তেল উত্তোলনে বাংলাদেশের সক্ষমতার অভাব রয়েছে। তাছাড়া এজন্য যে বিনিয়োগ প্রয়োজন তাও বেশ কঠিন। এদিকে জ্বালানি উত্তোলনে কিছু পরিবেশগত ঝুঁকি রয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি  দেয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। তবে সাগরে মিথেন ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে বাংলাদেশকে কিছু দক্ষ জনশক্তি বিদেশ থেকে আনতে হবে। নেইল ভাটিয়া বলেছেন, এ সমস্যা দূর করা সম্ভব কনোকো ও স্ট্যাট অয়েলের সাথে উত্পাদনমূলক চুক্তির মাধ্যমে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button