ব্রিটেনে হিজাব পরার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে

Hijabহিজাব পরার কারণে নিগৃহীত হওয়ার আশঙ্কা সত্ত্বেও ব্রিটিশ মুসলিম যুবতীদের মধ্যে হিজাব পরার আগ্রহ ও পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হিজাবধারী মুসলিম নারীদের পরিচয় জানার কারণে তাদের ওপর বেশকিছু সহিংস হামলার ঘটনা সত্ত্বেও মুসলিম নারীদের মধ্যে হিজাব পরার পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
লেইটন ইসলামিক ইয়ুথ সেন্টারের সেচ্ছাসেবক এবং একটি সুপার সপের সহকারী সামরিন ফারুক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমি যে হিজাব পরিধান করছি পরিস্থিতি যাই হোক, আমি এটা অব্যাহত রাখব। ১৮ বছর বয়সী ঐ মুসলিম যুবতী লন্ডনের রাস্তায় নিগৃহীত হওয়ার পরও হিজাব পরা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
লন্ডনে মুসলমানদের পরিচালিত একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ২৫ বছর বয়সী মাস্টার্স ডিগ্রিধারী শানজা আলী বলেন, তিনি পাকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং তার পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মা- হিজাবের ব্যাপারে কখনই শঙ্কিত নন। তিনি এবং তার ২০ বছর বয়সী বোন সান্দাস- উভয়ই হিজাব পরেন।
শানজা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে এ ব্যাপারে আমি আমার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  আমি কোনো অবস্থাতেই হিজাব পরিত্যাগ করব না। ইস্ট লন্ডনের ওয়ালথামাস্টোতে পরিবারের সাথে বসবাস করেন শানজা। যেখানে বসবাসরত আধুনিক মুসলমানদের ঘরের দেয়ালে নামাযের পার্টি ঝোলানো থাকে।
তিনি বলেন, কখনো কখনো আপনার চুল ঢাকতে আপনি হয়তো ভুলে যেতে পারেন, কিন্তু আপনি কখনোই এটা ভুলে যাবেন না কেন আপনি পর্দা করছেন। আপনার মনে রাখতে হবে, আপনার বাহ্যিক বেশভুষার চেয়ে আপনার চারিত্রিক দিকটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। হিজাব সেসব মুসলিম নারীর জীবনমান সহজ করে দেয়, যারা তাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে চায়। আপনি যদি বিভিন্ন নাইট ক্লাবে যেতে না চান অথবা পানাসক্ত না হন অথবা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়াতে না চান, তাহলেও এ হিজাব আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এছাড়া একজন ভালো মানুষ হওয়ার বিষয়টিকে স্মরণ করিয়ে এবং অপরের সাথে ভালো আচরণের শিক্ষা দেয়।
মুসলিম ইউম্যান্স নেটওয়ার্ক ইউকের চেয়ারম্যান শাহিস্তা গোহির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলা এবং যুক্তরাজ্যে ৭/৭ হামলার পর মুসলিম নারীদের মধ্যে হেডস্কার্ফ পরার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঐ হামলার পর মুসলমানরা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে ব্যাপক নজরদারির মধ্যে রয়েছে।
রয়টার্সকে তিনি বলেন, কিছু মুসলিম যুবতী একে ভিন্নভাবে দেখতে পারে সেটা আলাদা বিষয়। তিনি বলেন, বৃটেনে পুরো মুখ ঢাকার ঘটনা খুব কম। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। কিন্তু এটা বৃটিশ ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের সাথে পুরোপুরি খাপ খায় না।
মুসলিমবিরোধী ঘৃণ্য সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও যারা সহিংসতার সাথে জড়িত, তাদের বেশিরভাগই নারীবিদ্বেষী। মুসলিম নারীরা হিজাব পরতে পছন্দ করেন। ইস্ট লন্ডনের হগকনির ১৭ বছর বয়সী ছাত্রী ইয়াসমিন নাভসা বলেন, হিজাব তাকে আলাদা বৈশিষ্ট্য দিয়েছে। অনইসলামের সৌজন্যে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button