সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

‘নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের কেউ বেঁচে নেই’

Nazib Malaysiaমালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানটি দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে এবং এর কোন যাত্রী বেঁচে নেই বলে  নিশ্চিত করেছে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক  নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের স্বজনদের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান। এর মাধ্যমে ১৬ দিন ধরে ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে নিখোঁজ মালয়েশিয়ার এমএইচ ৩৭০  বিমানটির অস্তিত্ব জানা গেল।
এর ৫ দিন আগে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে দুটি ভাসমান বস্তুর ছবি প্রকাশ করে অস্ট্রেলিয়ার স্যাটেলাইট। সেটির সূত্র ধরেই অনুসন্ধান চালায় অস্ট্রেলিয়া। সোমবার সেই স্থানের সন্ধান পায় অস্ট্রেলিয়ার বিমান। সাথে সাথে সেখানে এই ভাসমান বস্তু উদ্ধারে  জাহাজ পাঠায় অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। সেখানেই মিলে নিখোঁজ বিমানের ধ্বংসাবশেষ।
অস্ট্রেলিয়া সেই ধ্বংসাবশেষের উদ্দেশ্যে জাহাজ পাঠানোর সময় এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী টনি আ্যাবোট বলেন, ভাসমান দুটি বস্তুর একটি গোলাকার ধূসর বর্ণের এবং অন্যটি চতুর্ভূজাকার কমলা রংয়ের। আ্যাবোট তখন আরো বলেন, আমরা জানি না, ভাসমান বস্তুটি নিখোঁজ বিমানের কীনা। তবে এটা নিখোঁজ বিমানের হতে পারে।
মালয়েশিয়ার পরিবহন মন্ত্রী হিসামউদ্দীনও একই সময়ে বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভাসমান বস্তু দুটি উদ্ধার করতে সক্ষম হবে উদ্ধারকারী দল।
এদিন ভারত মহাসাগরে গভীরে দক্ষিণ অঞ্চলে ‘একটা কিছু’ দেখতে পায় ফ্রান্স; সেটিকেও ১৬ দিন আগে হারিয়ে যাওয়া মালয়শিয়ার বিমান এমএইচ৩৭০ এর ধ্বংসাবশেষ বলে ধারণা করা হয়। বিমানটির খুঁজে অন্য ২৬টি দেশের সঙ্গে ফ্রান্সও তাদের উপগ্রহ নিয়োজিত করেছিল। সেই উপগ্রহ চিত্রেই বিমানের ধ্বংষাবশেষের মতো একটা বিশেষ বস্তর দেখা মিলেছে।
বিষয়টি ফ্রান্স মালয়শিয়া কর্তৃপক্ষকে জানায়। মালয়শিয়া সেই চিত্র ও তথ্য সরাসরি অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার একদিন আগেই চীনও একই অঞ্চলে একই ধরণের ‘বস্তুর’ দেখা পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।
তারও আগে অস্ট্রেলিয়ার উপগ্রহে একই ধরনের ছবি ধারণ করায়, সেটিকে নিখোঁজ বিমানের ধ্বংসাবশেষ বলে ধারণা জোরালো হচ্ছিল। প্রায় পাশাপাশি স্থানে একই ধরনের চিত্র পাওয়া যাওয়ায় নিখোঁজ বিমানটি নিয়ে অনুসন্ধানকারী দেশগুলোর মধ্যে আশার সঞ্চার হচ্ছিল।
সোমবার সেই ধ্বংসাবশেষের দিকে জাহাজ পাঠানোয় সেই ধারণা আরো শক্তিশালী হয়।  প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার র‍্যায়াল এয়ারের এক বৈমানিক অভিযান চালানোর সময় এসব বস্তু দেখতে পান।
অস্ট্রেলিয়ার সেই চালক জানান, দেখে মনে হচ্ছিল, অনেকগুলো টুকরো ভেসে রয়েছে এই অঞ্চলে। একটি বড় টুকরোর গায়ে বেল্ট বা স্ট্র্যাপ বাঁধা রয়েছে। সাধারণত বিমানের পেটের দিকে এ ধরনের প্যালেট থাকে।
মালয়শিয়ার বিমানটি গত ৮ মার্চ ২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের আকাশ থেকে রহস্যজনকভাবে হারিয়ে যায়। বিমানটি তখন মালয়শিয়ার রাজধানী কুয়ালা লামপুর থেকে চীনের রাজধানী বেইজিং যাচ্ছিল।
হারানোর পর থেকেই বিমানটি নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলতে থাকে। বিভিন্ন সময়ে এই বিমানের সন্ধানে বাংলাদেশসহ ২৬টি দেশ জল-স্থল-অন্তরীক্ষে তল্লাশি চালায়।
নিখোঁজ উড়োজাহাজটিতে ১৪টি দেশের ২৩৯ যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ১৫২ জন চীনের, ৩৮ জন মালয়েশিয়ার, ১২ জন ইন্দোনেশিয়ার, ৬ জন অস্ট্রেলিয়ার, ৫ জন ভারতের, ৩ জন আমেরিকান নাগরিক ছিলো। এছাড়াও বিমানটিতে ১২ জন ক্রু ছিল। যে দুজন শিশুর  কথা এর আগে বলা হয়েছিলো তাদের একজন চীনের অন্যজন যুক্তরাষ্ট্রের।
সোমবার বিকালে মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানান, তারা আর কেউ বেঁচে নেই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button