মার্কিন পণ্যে বাড়তি কর বসিয়ে জবাব চীনের

economyআমদানি করা মার্কিন পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক বা কর আরোপ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপের জবাব দিয়েছে চীন। চলতি মাসের প্রথমদিকে বিদেশ থেকে আমদানি করা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্কের হার বাড়িয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
শূকরের মাংস ও ওয়াইনসহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ১২৮টি পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে চীন। সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া এই শুল্ক প্রায় তিনশ কোটি ডলারের আমদানির ওপর প্রভাব ফেলবে। চীনের পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালুমিনিয়াম ও শূকরের মাংসের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হলো। এছাড়া বাদাম, সতেজ ও শুষ্ক ফল, জিনসেং ও মদের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক বেড়েছে।
বেইজিং জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক আরোপ করায় যে ক্ষতি হয়েছে, সে কারণে ‘চীনের স্বার্থের সুরক্ষা ও ভারসাম্যের’ জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর আগে চীন জানিয়েছিল, তারা বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না, কিন্তু তাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারাও বসে থাকবে না। অপরদিকে ট্রাম্প বাণিজ্য যুদ্ধকে ‘ভালো’ অভিহিত করে এতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সহজ’ জয় হবে বলে দাবি করেছেন।
এদিকে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে আমদানি করা আরও হাজার হাজার কোটি ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। চীনের ‘অন্যায্য বাণিজ্য প্রথার’ জন্য মার্কিন কোম্পানগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সে কারণেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে দাবি মার্কিন কর্তৃপক্ষের। কিন্তু মার্কিন এ পদক্ষেপের প্রভাবে আরও পাল্টা পদক্ষেপ আসার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এভাবে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ বাণিজ্য যুদ্ধে পরিণত হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত ২২ মার্চ জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মেধাস্বত্ব চুরির অপরাধে চীনকে এই শাস্তি দেয়া হলো। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে পরবর্তী সময়ে যেসব বাণিজ্য সংক্রান্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে এটি তার মধ্যে অন্যতম।
ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের বিপুল পরিমাণে মেধাস্বত্ব চুরির ঘটনা অব্যাহত আছে।’ তিনি চীন থেকে আমদানিকৃত প্রায় ১০০টি পণ্যের ওপর ৬০ বিলিয়ন (ছয় হাজার কোটি) ডলার শুল্ক আদায়ের পরিকল্পনায় সই করার পর এ কথা বলেন। চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে ৩৭৫ বিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বিশ্বের ইতিহাসে যে কোনো দেশের জন্য এটা অনেক বড় ঘাটতি। এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’
এদিকে, বিশ্ব অর্থনীতির দুই মহাশক্তির এই যুদ্ধে কাঁপুনি ধরে গেছে বিশ্ববাজার ও করপোরেট দুনিয়ায়। যেমন ২০৩৬ সাল পর্যন্ত সাত হাজার বোয়িং বিমানের বরাত দিয়েছে শুধু চীনা সংস্থাই। তাই পুরোপুরি বাণিজ্য যুদ্ধ বাধলে, তার প্রভাব সর্বগ্রাসী হওয়ারই সম্ভাবনা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button