স্বাধীনতার পর নজিরবিহীন ধস ভারতের অর্থনীতিতে

নানামুখি সমস্যা এমনিতে জর্জরিত ভারত। বর্তমানের বিশ্বে করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ভারতে। এর মধ্যে এই ভাইরাসের ধাক্কায় বড় ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে ভারতের জন্য। সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তথা এপ্রিল-জুনে দেশটির অর্থনীতি নজিরবিহীনভাবে ২৩.৯% সংকুচিত হয়েছে, যেটা গত চল্লিশ বছরে দেখা যায়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর, বস্তুত দেশটিতে অর্থনীতির এতটা গভীর সংকোচন স্বাধীনতার পরেই আর কখনো হয়নি। এর পর জুলাই-সেপ্টেম্বরেও যদি অর্থনীতির সংকোচন অব্যাহত থাকে, যার সম্ভাবনা খুব বেশি, তা হলে সামনে তাহলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।
রেটিং সংস্থা ক্রিসিলের আশঙ্কা, ‘স্বাধীনতার পর এই নিয়ে চতুর্থবার মন্দার সম্মুখীন ভারত এবং এই মন্দা হয়তো সবচেয়ে তীব্র হবে। সংস্থাটি মনে করে, পরের প্রান্তিকগুলিতে অর্থনীতি যদি খানিকটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে তা হলেও পুরো অর্থবছরে ভারতীয় অর্থনীতি ৫% সংকুচিত হতে পারে।
গত ২৫ মার্চ থেকে দেশজোড়া লকডাউনের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পোৎপাদন হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায়। ১ জুন থেকে ধীরে ধীরে লকডাউন ওঠা শুরু হলেও ব্যবসা-বাণিজ্য, কলকারখানায় উৎপাদন, কর্মসংস্থান তৈরিতে তেমন গতি আসেনি।
পরিসংখ্যানে স্পষ্ট, কৃষি ছাড়া বাকি সব শিল্প ক্ষেত্রেই বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং বা কলকারখানায়, উৎপাদন কমেছে আশাতীত। শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রেই ৩.৪% বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে।
সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, গত বেশ কিছু মাস ধরে মানুষের ভোগব্যয় কমছে এবং গত এপ্রিল-জুন মাসে ওই ব্যয় অর্ধেকের বেশি (৫৪.৩%) কমে গিয়েছে। অথচ, ২০১৯ সালের ওই ত্রৈমাসিকে দেশে ভোগব্যয় বেড়েছিল ৫৬.৪%।
আয়, কর্মসংস্থান হারিয়ে মানুষ ভোগব্যয় কমানোর ফলে বাজার থেকে ক্রেতা চাহিদা উবে গিয়েছে। গাড়ি-বাড়ির মতো অত্যাবশ্যক নয় এমন পণ্যের বিক্রি কমেছে সবচেয়ে বেশি।
এই অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রতিদিন বেকার হচ্ছে শত শত মানুষ। আর অনেক কৃষণ আত্মহত্যা করেছে। শিক্ষিত বেকাররা হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সব মিলিয়ে ভারতের অর্থনীতির সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রাও থমকে দাঁড়িয়েছে। -আনন্দবাজার

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button