টাওয়ার হেমলেটস নির্বাচন: জনগণের প্রনিধিত্বের যোগ্য কে?

এনাম চৌধুরী: টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের নির্বাচন আগামী ৫ মে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। লেবার, আস্পায়ার, কনজারভেটিব ও লিবডেম এর সাথে আরো অনেক গুলো দলের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ ভাবে কাউন্সিল বা জাতীয় নির্বাচনের রাজনৈতিক দল গুলোর নাম পর্যায়ক্রমে লেখা হলে সেখানে আস্পায়ার পার্টির নাম স্বাভাবিক ভাবে শেষেই আসে বা আসার কথা কিন্তু পার্টিগত অবস্থান পর্যালোচনা করলে এবং এই বারা’র রাজনৈতিক অবস্থানে লন্ডন বারা অব টাওয়ার হেমলেটসে আস্পায়ার পার্টির স্বীকৃত অবস্থান দ্বিতীয় বৃহত্তম পার্টি। এই বারা’য় একযুগের ও বেশী বসবাস করার সুযোগে যে অভিজ্ঞতা লাভ করেছি এবং এবারের কাউন্সিল নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার ও আস্পায়ার পার্টির প্রার্থী প্রকৃত অর্থে এই বারা’র জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে কতটুকু যোগ্য আজকের লেখায় একজন নাগরিক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
এক:
পৃথিবীর এমন কোনো নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠান কি আছে যেখানে অর্থ সাশ্রয়ের অজুহাতে তার নিজের নাগরিকের জন্য চলমান সেবা কার্যক্রম বন্দ্ব করে দিয়ে অন্য এলাকার সেবা প্রতিষ্ঠান গুলোকে ঋণ দিয়ে নিজের আর্থিক দাপট দেখানোর মতো হীন কাজ কাজ করতে পারে ? যুক্তরাজ্যের (লন্ডনের) টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিল সেই কাজটি করে ঋণ প্রদানকারী কাউন্সিল হিসেবে আজব এক নাগরিক সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেকে জানান দিয়েছে ! যে বাড়াটি লন্ডনের স্বীকৃত ‘সব চেয়ে বঞ্চিত কাউন্সিল গুলোর একটি।’আজব সব কাজ করে এই কাউন্সিলের ক্ষমতাসীনরা যেমন নাগরিকদের নিজেদের ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে, তেমনি নাগরিক সেবা বন্দ্ব রেখেই ব্যাঙ্কে থাকা রিজার্ভ অর্থের মুদ্রাস্ফীতির জন্য ১১ মিলিয়ন পাউন্ড ধ্বংস করে দিয়েছে। অথচ এই বিশাল অংকের প্রতিটি পেন্স কাউন্সিলের নাগরিক সেবায় ব্যয় করে নাগরিকের জীবন মানে বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে পারতো। টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের সেবার মান নিয়ে কথা বলার মতো জায়গা কি আছে ? এ বারা’র কাউন্সিলদের সেবার মান নিয়ে কিংবা ব্যবস্থাপনার ত্রুটি নিয়ে প্রশ্ন করলে অনেকেই সেটার জবাব নানা কায়দায় এড়িয়ে যান ! টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের কনজারভেটিভ পার্টি তাদের এক টুইটার পোস্টে বলেছে,“অন এভরী ফ্রন্ট, লেবার মেয়র বিগস হেজ ফেইল্ড রেসিডেন্ট!”
টাওয়ার হেমলেট্স কনজারভেটিভ পার্টি টুইটারে কাউন্সিল পরিচালনায় জন বিগসকে ব্যর্থ উল্লেখ করে বলেছে তার ব্যর্থতার কিছু দিক তুলে ধরেছে এভাবে-ফেইল্ড অফস্টেড ইন্সপেকশন অর্থাৎ শিক্ষার মান উন্নয়নে পুরোটাই ব্যর্থ। ক্ষেত্রে ২৯ পার্সেন্ট কাউন্সিল টেক্সট ইন্ক্রিস, কাউন্সিলের নিয়মিত বা জরুরী কাজে নিয়োজিত কর্মীদের নির্ধারিত কাজের জায়গায় গাড়ি নিয়ে প্রবেশ পথ রুদ্ধ করে দিয়ে জীবন কে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া, রেগুলার বিন কালেকশন করতে চরম ব্যর্থ, লন্ডনের অন্যান্য কাউন্সিল গুলোর মধ্যে জন বিগস এর টার্মে বিন কালেকশনের রেংকিং-এ টাওয়ার হেমলেট্স এর রেংকিং সব চেয়ে নিন্ম পর্যায়ে এবং হাউজিং টার্গেট-এ ব্যর্থ !”
ক্রাইমরেইট ডট ক ডট ইউকের তথ্য অনুযায়ী লন্ডনের ৩৩ টি কাউন্সিলের মধ্যে ক্রাইম রেটে শীর্ষ দশটির একটি কাউন্সিল হলো টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিল।
ট্রাস্ট ফর লন্ডন ডট অর্গ ডট ইউকে-তে যদি কেউ খুঁজে দেখেন, তবে সব চেয়ে মারাত্মক যে তথ্যটি গোটা পৃথিবী জানতে পারবে সেটা হলো, লেবার পার্টির মনোনীত একাধিক বারের প্রার্থী ও মেয়র জন বিগস এর নেতৃত্বাধীন লন্ডনের টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিল এর ৫৬ পার্সেন্ট শিশু দারিদ্র পরিবারের মধ্যে বসবাস করে ! আরেকটি মারাত্মক তথ্য হলো এই কাউন্সিলের জনগণের ৮৭ মিলিয়ন টাকা ব্রিটেনের ১৪ টি কাউন্সিলকে ঋণ দেয়া হয়েছে। নিজের সন্তান ও বয়স্ক মানুষ গুলোকে অভুক্ত রেখে, ক্রাইম বন্ধ করতে জনগণকে সহায়তা করবে যে পুলিশ সেই পুলিশের সংখ্যা কমিয়ে দিয়ে, কিশোর-যুবকদের মনো বিকাশের কেন্দ্র ইয়ুথ সেন্টার গুলো বন্ধ করে দিয়ে অর্থাৎ সার্ভিস বন্ধের মহোৎসব পালন করে নিজেকে সফল বলা জন বিগস কি মানষিক ভাবে ঠিক আছেন ?
বারাটির সফলতার গল্প শোনাতে শোনাতে যারা মুখে ফেনা তুলে তারা কি কারণে জন বিগস কে সমর্থন করছেন সেটা তাদের বিবেকই ভালো বলতে পারে। মাত্র ৭ বছর আগেও যে কাউন্সিলটির কাজে ব্রিটেনের অন্যান্য কাউন্সিল গুলো অনুসরণ করার মতো অনেক কিছুই পেয়েছে সেই কাউন্সিল এখন টপ ক্রাইম কাউন্সিলের শীর্ষ গুলোতেও টপ!
দুই:
টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের নির্বাচন আগামী মাসে। নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা রীতিমত চরমে। লেবার, কনজারভেটিভ ও লিবডেম এর মতো পুরানো শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রার্থিতা ঘোষণা করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্ধুতে এসেছে নতুন রাজনৈতিক দল এস্পায়ার পার্টি। সবার সাথে পাল্লা দিয়ে তারাও ভোটারদের দরোজায় দরোজায় কড়া নাড়ছেন। নির্বাচনে নিবন্দিত রাজনৈতিক দল হিসেবেও টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলে এস্পায়ার পার্টি স্বীকৃত দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। জাতীয় ভাবে এই দলটি আলোচনায় না থাকলেও এই পার্টিকে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁকে নিয়ে জাতীয় ভাবেই শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা আলোচনা-সমালোচনা করে যাচ্ছেন দেদারছে। তবে এখানে বিস্ময়ের বিষয় হলো যাকে নিয়ে এতো সমালোচনা সেই ব্যক্তি টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের সাবেক লেবার লীডার ও কাউন্সিলর এবং পরবর্তীতে প্রথম এক্সিকিউটিভ মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দলের মনোনয় পেয়েও বঞ্চিত বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত দুই বারের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানকে নিয়ে বারা’র নাগরিকদের মধ্যে উচ্ছাসের কোনো কমতি নেই। দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারে পদ হারালেও প্রথম নির্বাহী মেয়র হিসেবে লুৎফুর রহমানের নাগরিক সেবার কার্যক্রম টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের নাগরিকদের বিরাট অংশের কাছে বিস্ময়কর সফলতা হিসেবেই বেঁচে আছে। সেই সাথে লুৎফুর রহমানের নির্বাহী মেয়রের পদ হারানোর বিষয়টিও তারা কখনো ভালো ভাবে গ্রহণ করেন নাই। যে কারণে নির্ধারিত সময়ের পর এবার সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের প্রার্থিতার ঘোষণা যেমন তার বিশাল অংশের সমর্থকদের মধ্যে চ্যালেজ্ঞ ও উচ্ছাস এনে দিয়েছে, তেমনি বিস্ময় দেখা দিয়েছে লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে আকস্মিক একটি মহলের সিন্ডিকেট অপপ্রচারের ধরণ দেখে। লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে যারা অপপ্রচার করছেন তাদের এই অপপ্রচারের ধরণ এমন যে, লুৎফুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হলে এই কাউন্সিল তালেবান কাউন্সিলে পরিণত হয়ে যাবে। লুৎফুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হলে এই কাউন্সিল কয়েক যুগ পেছনে ফিরে যাবে। অথচ, এই লুৎফুর রহমান নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর টাওয়ার হেমলেটসের নাগরিকদের সেবায় যে অভুতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়েছিল সেটা শুধু জাতীয় ভাবে স্বীকৃতিই অর্জন করেনি, ন্যাশনাল গভর্মেন্টের কাছ থেকে আর্থিক ভাবেও পুরস্কৃত করা হয় তাঁর নেতৃত্বাধীন টাওয়ার হেমলেট্স বারাকে। আর সেই পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ছিল ৭৪ মিলিয়ন পাউন্ড। এটি ছিল টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের অর্থনৈতিক সম্মাননা অর্জনের ইতিহাসে বিরল এক স্বীকৃতি।
টাওয়ার হেমলেটস কাউন্সিল এর মালবারি হাউসের যে অফিসটি রয়েছে সেটির বার্ষিক রেন্ট ১৬ মিলিয়ন পাউন্ড। মেয়র হওয়ার পর লুৎফুর রহমান ভাড়া বাঁচানোর মাধ্যমে কাউন্সিলের নাগরিকদের টেক্সের অর্থ সাশ্রয়ের জন্য মাত্র ৮ পয়েন্ট ৫ মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে বারা’র হার্ট খ্যাত হোইটচ্যাপলে রয়েল লন্ডন হসপিটালের পুরোনো বিল্ডিংটি কিনে নেন। যেখানে বছরে মালবারি হাউসের বার্ষিক ভাড়া ছিল ১৬ মিলিয়ন সেখানে লুৎফুর রহমান মেয়র থাকা কালীন কাউন্সিলের জন্য স্থায়ী ভবন কিনে নাগরিক সেবায় তার দূরদর্শীতার অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরী করে দেখিয়েছেন। কোঁথায় বছরে ১৬ মিলিয়ন আর কোঁথায় সারা জীবনের জন্য নিজেদের ভবন!
লুৎফুর রহমানের মেয়র থাকাকালীন সময় শিক্ষা ক্ষেত্রে টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিল পুরো দেশের আউটসেন্ডিং রেজাল্টে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে। শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় উৎসাহিত করতে আর্থিক মেয়র্স গ্রান্ট চালু করে ইউনিভার্সিটি, কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি করে দেন। ব্রিটেনের ইতিহাসে স্কুল গুলোতে “ফ্রি স্কুল মিল” নামের জনপ্রিয় কন্টেন্টের প্রবক্তা টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান।
তিন:
এই কাউন্সিলে আমার বসবাস একযুগেরও বেশী। সেই হিসেবে গত একযুগের ভোট, ভোটার ও প্রার্থীদের ব্যাপারে বারা’র বাহিরের নির্বাচন কেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী, বিশ্লেষক কিংবা আমীর-বাদশাদের মতো ধারণা না থাকলেও বলতে পারি আমার বাড়ির খবর আমি ভালোই জানি। মাঝে মাঝে টাওয়ার হেমলেটসের নির্বাচন নিয়ে মৌসুমী আলোচকদের আলোচনায় রীতিমত বিষম খাই। কখনো কখনো বলতে ইচ্ছে করে-মায়ের বাড়ির খবর মাসির (খালার) কাছে দেয়া একটু বেশী হয়ে যায় পন্ডিত জনেরা এবার একটু কান্তি দেন!
টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের বর্তমান ক্ষমতাসীনরা এবারের নির্বাচনে গত একযোগের নির্বাচনের চেয়ে একটু বেশী চাপে আছেন। আর সেটা বুঝতে পারবেন খুব সহজেই!
লিডিং পার্টির যে কোনো কাউন্সিলর প্রার্থী বা একটিভ সমর্থকে জিজ্ঞেস করবেন, ‘আপনি যে প্রার্থী হয়েছেন আপনার দলের নির্বাচিত মেয়র জন বিগস গত টার্মগুলোতে বিজয়ী হয়ে বারার জনগণের স্বার্থে কোন কোন উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন ?’
মেয়র জনবিগস কি টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের প্রথম এক্সিকিউটিভ মেয়র লুৎফুর রহমানের মত একটি জনপ্রিয় কাজ করেছেন যা বারার জনগণ প্রাণখুলে গ্রহণ করেছে এবং মেয়রের প্রশংসা করছে?
জনবিগস কি জনবান্ধব মেয়র হিসেবে বারার জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে মূল্যায়ন করেছেন অথবা নির্বাচিত কাউন্সিলর হিসেবে মেয়রের অন্যায় সিদ্ধান্তগুলোর বিরুদ্ধে সততার সাথে বিরোধিতা করার মতো সাহস আপনি বা আপনার সহকর্মী কাউন্সিলরদের কেউ কি দেখাতে পেরেছেন?
সেই প্রার্থী বা কাউন্সিলর এর জবাব দিতে গিয়ে তখন কি হবে জানেন? তিনি তা তারা বলবেন, টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলের সব জন বিগসের হাত ধরে হয়েছে ! জন বিগস জনপ্রিয় ! জনবিগস ঘর বানিয়েছেন এতোগুলো (অথচ বাস্তবে পুরো তথ্যই ডাহা অসত্য), জনবিগস বারার তরুণদের জন্য দারুন উদ্যোগী ছিলেন ! সব শেষ বলবেন, জন বিগস বারার হার্ট খ্যাত হোইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম ফলকে ইংরেজীর সাথে বাংলা নাম ফলক জুড়ে দিয়ে (রাতে যে ফলকে বাতি জ্বলে না) বাংলাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দারুন উচ্চতায় তুলে ধরেছেন !!
যদি জিজ্ঞেস করেন যে দিন কাউন্সিল মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল বাংলা শিক্ষার বাজেট কর্তন করে নেয়া হবে সেদিন কাউন্সিলর বা লেবার পার্টির একজন সমর্থক হিসেবে আপনি কি দায়িত্ব পালন করেছেন ? তখন জবাব দিবে এখানেও কোনো না কোনো ভাবে লুৎফুর রহমান জড়িত আছেন!!
নতুন প্রজন্মকে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলা থেকে দূরে রাখতে বাংলা শিক্ষার পথ রুদ্ধ করতে যিনি বাজেট কাট করলেন, দরজা-জানালা বন্ধ করে দিলেন বাংলার সেই মেয়র নির্বাচনের আগে দারুন এক কাজ করে দেখালেন ! অর্থাৎ গুঁড়া (মূল) কেটে দিয়ে আগায় পানি ঢালছেন মেয়র বিগস আর সাথে আমাদের নির্বাচনী মৌসুমী বিজ্ঞজনেরা কেউ নাম আর কেউ বে নামে এখন টাওয়ার হেমলেট্স এর বাসিন্দাদের নসিহতের সুমিষ্ট অমিয় বাণী শুনাচ্ছেন-পড়াচ্ছেন নানা মাধ্যমে। হোয়াটসআপ-মেসেঞ্জার কিংবা পত্রিকার পাতায় ইদানিং তুফান বইয়ে দিচ্ছেন ! কিছু লেখায় নসিহত পাচ্ছি টাওয়ার হেমলেট্স বারার তরুণ প্রজন্মকে নাকি মূল ধারার রাজনীতি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আর সেটা করছে নতুন কোন না কোনো দল!!
বিজ্ঞজনেরা ভুলে গেছেন, টাওয়ার হেমলেট্স এর রাজনীতির গত দুই দশকের কথা ! এই কাউন্সিলে লেবার পার্টির অবস্থান সব সময় শক্তিশালী এবং প্রথম এক্সিকিউটিভ মেয়র হিসেবে কে হওয়ার কথা ছিলো ? লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে যিনিই হতেন তিনিই মেয়র হবেন কথা ছিলো এমনটিই। কোনটা ভিলেজ পলিটিক্স টাইপের মতো নোংরা রাজনীতি আর দাম্বিকতার খেসারত টাওয়ার হেমলেটসের রাজনীতিতে নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করলো ২০১০ সালে। লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথম এক্সিকিউটিভ মেয়র হওয়ার কথা ছিলো লুৎফুর রহমানেরই কিন্তু ভাগ্য কোনো ভাবেই তার অনুকূলে ছিলো না। পার্টির কতিপয় ভিলেজ পলিটিশিয়ানদের পলিটিক্সের বলি হয়ে যৌবনের প্রথম ভালোবাসার রাজনৈতিক দল ছাড়তে হয় তাকে রীতিমত অসহায়ের মতোই ! বড় দল লেবার পার্টি সেদিন কর্মীদের মূল্যায়নকে মর্যাদা দেয়নি ! দেয়নি তাদের আবেগ-উচ্ছাসকে নূন্যতম মর্যাদা, তাই লুৎফুর রহমান লেবার পার্টি ছেড়ে নতুন দল গঠন করে নির্বাচনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন। টাওয়ার হেমলেটস এর নাগরিকরা পাশে দাঁড়ায় লুৎফুর রহমানের। লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে মেয়র হওয়ার কথা ছিলো লুৎফুর রহমানের কিন্তু হতে পারেননি, হয়েছিলেন এ বারা’র জনতার ভোটে নির্বাচিত প্রথম এক্সিকিউটিভ মেয়র। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে জনগণ যে ক্ষমতার শেষ শক্তি সেদিন মেয়র হিসেবে লুৎফুর রহমানের এক ভূমিধ্বস বিজয়ের মাধ্যমে ব্রিটেনের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ইতিহাসে নতুন যুগের সূচনা করেছিল।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে বলতে পারি, যে বিজ্ঞজনেরা বলেন, মূলধারা বা মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে আসা দরকার অথবা তারা আকারে-ইঙ্গিতে বুঝাতে চেষ্টা করেন লেবার, কনজারভেটিভ অথবা লিবডেম বড় পার্টি তাদের জন্য জবাব একটাই বিশেষ করে টাওয়ার হেমলেট্স এর রাজনীতিতে লেবার পার্টি ফ্যাক্টর ঠিকই তবে এর ভেতর কি পরিমান নোংরা রাজনীতি হয় সেটার জীবন্ত সাক্ষী সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান, টাওয়ার হেমলেট্স এর বাসিন্দারা। লেবার পার্টির অন্যায় সিদ্ধান্তকে এই বারার জনগণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে লুৎফুর রহমানকে মেয়র বানিয়েছিলো পরপর দুই বার। যে বিজ্ঞজনেরা আজকাল ফ্রি নসিহত বিতরণ করছেন উনাদের জন্য আমি এই কাউন্সিলের বাসিন্দা হিসেবে বলতে পারি, এই কাউন্সিলের বাহির থেকে আমদানি হয়ে গুরুজনের মতো জ্ঞান বিতরণ করতে পারবেন তবে বারা’র বাসিন্দাদের অন্তরের ভাষা বুঝতে পারবেন না। জনগণ যদি ছোট দল অথবা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে অথবা অতি সাধারণ কাউকে নির্বাচিত করে তবে সেখানে মেইনস্ট্রিমের নসিহত অতি নগন্য।
আর কেন লিভিংস্টোনের লন্ডন মেয়র কিংবা জর্জ গ্যালওয়ের এমপি হওয়ার কাহিনী মনে হয় ভুলেই গেছেন। জনগণ যাকেই গ্রহণ করবে তিনি জন প্রতিনিধি।ইয়েস ফর মেয়র কিন্তু দুই বারই বিজয়ী হয়েছে ! জনগণের ইচ্ছের কাছে কেউ হালে পানি পান নাই। মৌসুমী এসব নসিহত দাতাদের লেখায়, আকারে-ইঙ্গিতে বুঝাতে চান যে, যা হয়েছে সব কিছুর জন্য দায়ী লুৎফুর ! কি বিচার তাদের ? কি চমৎকার বিশ্লেষণ ! মেইনস্ট্রিম বড় দলের প্রতি কি চমৎকার ভালোবাসার বন্যা ? অথচ ঐ বড় দল বারার জনগণকে চ্যালেঞ্জ করছে বারবার। প্রথম চ্যালেঞ্জ করেছিল ইয়েস ফর মেয়র ভোটে, দ্বিতীয়বার (পরপর দুইবার) সরাসরি ভোটে, তৃতীয়বার রেফারেন্ডামে। একবারও উনারা জনগণের ন্যায় বিচার এর শক্তির কাছে সফল হতে পারেননি?
এখন নসিহত হিসেবে মেইনস্ট্রিম রাজনীতির কিছু পরামর্শ শুনে এবং লুৎফুর রহমানের প্রতি তাদের নেতিবাচক বক্তব্যগুলো পড়ে মনে পড়ছে একটি গল্পের কথা।
প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত একটি হরিণ শাবক পিপাসায় কাতর। হঠাৎ দেখলো পাশেই একটি বড় পুকুর। হরিণ শাবকটি চার দিকে খেয়াল করে পুকুর ঘাটে পানি খেতে নামলো। তখনো পানি পান করেনি হরিণ শাবকটি। চেষ্টা করছিলো মাত্র। হঠাৎ পেছন থেকে আওয়াজ শুনতে পেলো-এই হরিণের বাচ্চা কার হুকুমে এখানে পানি পান করার চেষ্টা করছিস? এই অঞ্চল আমার! এখানে আমার হুকুমে সব কিছু হয়, আমার হুকুম ছাড়া তুমি পানি পান করবে সেটা হতেই পারে না। ভয়ে কাঁপছে হরিণ শাবক কিন্তু পিপাসায়ও প্রচন্ড কাতর, জবাব দিলো নেকড়ে মামা, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি পানি পান করিনি এবং করবোও না। ক্ষমা করে দাও আমি চলে যাই। প্রচন্ড রুদ্রমূর্তি নেকড়ে এবার জবাব দিলো, হরিণ শাবক আমি তোমাকে কি ভাবে যেতে দেই, তুমি আমার পুকুরের পানি ঘোলা করেছো ! বিস্ময়ে হতবাক হরিণ শাবক বললো, মামা আমিতো পুকুরের পানি স্পর্শই করিনি তা হলে কিভাবে পানি ঘোলা করলাম ? নেকড়ে জবাব দিলো, কি তুমি পানি ঘোলা করো নাই ? তাহলে তোমার বাবা এই অপকর্ম করেছে ! হরিণ শাবক বললো আমার বাবা অনেক বছর আগেই মারা গেছেন। আর তিনি এই এলাকাতেই বসবাস করতেন না। তাহলে তিনি কিভাবে পানি ঘোলা করলেন ? নেকড়ে বললো আমি মানলাম তুমি করো নাই, তোমার বাবাও এই কাজ করেন নাই কিন্তু তোমার দাদা বা তাঁর পূর্বপুরুষ এটা যে করেছেন সেটা আমি তোমাকে জানিয়ে দিলাম সেটাই ফাইনাল। তোমাকে শাস্তি পেতেই হবে ! কি দারুন বিচার ?
টাওয়ার হেমলেস্ট কাউন্সিলের বর্তমান অবস্থায়ও তাই। লুৎফুর রহমান ছোট পার্টির প্রার্থী অতএব লুৎফুর বারা’র ভবিষ্যতের জন্য খুবই মন্দ কেউ। তাই তাকে ঠেকাতে নেকড়ের মতোই বলতে হবে তুমি না হলে তোমার বাবা আর বাবা না হলে তোমার দাদা এই কাজ করেছে ? কি চমৎকার বিচার বিজ্ঞজনদের !! অথচ এই লুৎফুর হাউজিংয়ে টাওয়ার হেমলেট্স কাউন্সিলকে দেশ সেরা বানিয়ে মিলিয়নের অংকে বোনাসে পুরস্কৃত হয়েছেন ! দেশের স্কুল ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে নতুন ইনোভেটিভ আইডিয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ফ্রি স্কুল মিল (দুপুরের খাবার)’ দিয়ে সেটাকেও জনপ্রিয়তার উচ্চ শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন টাওয়ার হেমলেটসকে। মুখে বলে কিংবা পোস্টার, লিফলেটে চটকদার যা বলেন না কেন, সোশ্যাল হাউজিং নির্মাণে সত্যিকার অর্থে লুৎফুরকে যেকোনো কেউ পেছনে ফেলে যেতে পারেন নাই। সামাজিক অপরাধ প্রবণতা রুখতে কাউন্সিলের নিজস্ব অর্থে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করে রীতিমত চমক সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। ইয়ুথ সেন্টারগুলোতে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কিশোর-কিশোরীদের অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে রাখার প্রাণান্তর প্রচেষ্টা। এছাড়া একটি আধুনিক একুশ শতকের উপযোগী একটি বারা নির্মাণে যিনি ছিলেন প্রথম নির্বাহী মেয়র তাঁর বিষয়ে নূন্যতম মূল্যায়ন না করে একজন কর্মবীর ‘হিরো লুৎফুর রহমান’কে জিরো বানানোর অপপ্রচেষ্টায় মৌসুমী বুদ্ধিজীবীরা যেমন তৎপর তেমনি কথায়-কাজেও উনারা ইদানিং বেশ জানান দিচ্ছেন। লুৎফুর বিরোধিতায় বলা যায় তারা একই সুরে কোরাস করছেন সবগেলো সবগেলো আওয়াজে ! নির্বাচনী ট্রাইবুনালে বিচার করেছে মেয়র লুৎফুর রহমানের। লুৎফুর পদচ্যুত হওয়ার পর কমিউনিটির সেই তাদের উল্লাস আমরা দেখেছি এভাবেই যে এবং সেটাও বলতে দেখেছি আজীবন।
চার:
লুৎফুর ক্যারিশমায় হেরে যাওয়াদের যে ‘আমরা এবার পেরেছি।’
মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে টাওয়ার হেমলেট্স একটি ভয়ানক জায়গা বলা যায়, কারণ এখানে লুৎফুর রহমানের জায়গা হয়নি ! লেবার নেতা বা কর্মী লুৎফুর নাকি কাবার ইমামের সাথে মিটিং করে ফেলেছিলেন ! এর পর সবই ইতিহাস। মজার বিষয়টি আমরা দেখেছিলাম পপলার এন্ড লাইম হাউজ আসনের এমপি নির্বাচনের সময়ে কেউ আবার রীতিমত পার্লামেন্টে চলে যাচ্ছেন এমন অপেক্ষায় স্যুট-টাই এর অর্ডার সেরে ফেলেছিলেন। এরপর সম্ভাব্য প্রার্থী আপসানা বেগমের বিরুদ্ধে সিলেকশনে প্রার্থী ও দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু কাজ হাসিল করতে পারেন নাই। সব শেষে আপসানার বিরুদ্ধে হাউজিং সংক্রান্ত একটি মামলা যখন ট্রায়ালে উঠে তখন আবারো সেই মুখ গুলোর কাউকে কাউকে পার্লামেন্টে চলেই যাচ্ছেন এমন প্রস্তুতির প্রাথমিক হিসেব নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখেছি। রায়ের অপেক্ষায় ছিলেন, আপসানা বিদায় নিচ্ছেন কোর্ট এমন রায় দিবে এবং তিনি বা তার নিজের কেউ সেখানে এমপি হয়ে পার্লামেন্টে চলে যাবেন। না, সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। লুৎফুর রহমান ২০১০ সালের আগে থেকেই টাওয়ার হেমলেটস লেবার পার্টির একটি বিশেষ সিন্ডিকেটের টার্গেট হয়েছিলেন। ঐ সিন্ডিকেটটি ব্রিটিশ লেবার পার্টির কোনো স্বার্থে লুৎফুর রহমানকে টার্গেট করেনি। এরা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থেই লুৎফুর রহমানকে টার্গেট করেছিল এবং জাতীয় রাজনীতি (বিজ্ঞজনদের মূলধারার রাজনীতি) থেকে তাকে সরিয়ে দিয়েছিলো ভবিষ্যতের বাধা হিসেবেই। যার চূড়ান্ত ফলাফল হয়েছিল লুৎফুর রহমানের জন্য সোনায় সোহাগা আর সিন্ডিকেট রাজনীতির উদ্দ্যোক্তারা হারিয়ে গেছেন বললেই চলে। কারণ জনগণ বুঝে জনবান্ধব নেতা বা রাজিনীবিদ কে ? বিশেষ বিশেষ এলাকায় নেতাদের বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত সিন্ডিকেট বৈঠক করে কাকে দিয়ে কাকে আটকানো যায় সেই চিন্তায় যারা ব্যস্ত তাদের কি পরিণতি ভোগ করতে হয় সেটার সাক্ষী টাওয়ার হেমলেটস এর ভিলেজ স্টাইলের রাজনীতি। লুৎফুর রাজনীতির খেলায় মরতে মরতে শুধু বেঁচেই আছেন এমনটি নয়, তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে মাথা উঁচু করেই দাঁড়িয়ে আছেন। টাওয়ার হেমলেটস এর রাজনীতিতে নিজের অবস্থান চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নিজ ব্যক্তিত্বের স্বকীয়তা দিয়ে জনগণের হৃদয় জয় করে কেউ বিজয়ের মুকুট একাধিকবার অর্জন করতে পারেননি একমাত্র লুৎফুর রহমান ছাড়া। লেবার পার্টির প্রার্থী হিসেবে সেইভ সিট বেথনালগ্রীন এন্ড বো কিংবা পপলার লাইম হাউস পার্লামেন্টারী সিট লেবার পার্টির সেইভ সিট্ কিন্তু ব্যতিক্রম ঐ দুই সিটকে নিয়ে টাওয়ার হেমলেটস মেয়রাল সিটটি মূলধারার পার্টিটির জন্য রীতিমত গলার কাঁটা। নির্বাচন মৌসুমের বিজ্ঞজনদের কাছে জানতে ইচ্ছে করে ব্যক্তি ইমেজে লেবার, কনজারভেটিব কিংবা লিবডেমের মতো পার্টির বিপরীতে একজন ব্যক্তি ব্রিটেনের রাজনীতিতে অভাবনীয় জনপ্রিয়তা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিজয়ী হতে পেরেছেন এমন এক কথায় প্রশ্নের জবাব কি ? উত্তরটাও দিয়ে দিলাম-এ পর্যন্ত লুৎফুর রহমান। বিজ্ঞজনেরা বলতে পারবেন, গত বিষ বছরে রুশনারা আলী এবং আফসানা বেগম এমপি ছাড়া লেবার পার্টিতে বর্তমান প্রজন্মের কেউ কি পার্লামেন্টে যেতে পেরেছে ? আফসানার এমপি হতে গিয়ে তার নিজ দলের কারা বিরোধিতা করেছে এবং তাকে ঠেকাতে কারা শেষ কামড় দিতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছে সেটার বিষয়ে কি কিছু বলবেন ? পরিস্থিতিটা এমন যে, রুশনারা আলী এমপির বিকল্প কেউ এই সিটে নেই ! আর আপসানা বেগম এমপি সৌভাগ্যবতী এক লড়াকু তরুণী। নিজ দলের কতিপয় মেইনস্ট্রিম পলিটিশিয়ানের বিরুদ্ধেই এখানে তাকে লড়তে হয়েছে। বিজয়ী হয়ে লড়াই শেষ করলেও এরা তার পিছু ছাড়েনি। এমপি হওয়ার পর এক রাতও বলা যায় তাকে শান্তিতে ঘুমুতে দেয় নি। হাউজিং ফ্রডের কথিত অভিযোগ তোলে করতে নিয়ে যায়। এরপর যা হলো সব আমাদের বিশ্লেষক ও বিজ্ঞজনদের চোখের সামনে। এরপরও কি বলবেন যে টাওয়ার হেমলেটস এর সম্ভাবনাময় ও মেধাবী নতুন প্রজন্মের কেউ আপনাদের কথিত (টাওয়ার হেমলেটস এর জন্য) মূল ধারার রাজনৈতিক লিডিং দলে নিজের অবস্থান করে নিতে পারবে ?
পাঁচ:
টাওয়ার হেমলেটস কাউন্সিলে গত দুই দশকের ইতিহাস বিশ্লেষণ করে বলুন যে এই বারায় ‘ইয়াং মেয়র’ এর একটি পোস্ট আছে। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে একজনকে নির্বাচিত করা হয় কিন্তু এখন পর্যন্ত একজনও ইয়াং মেয়রও কি দেখাতে পারবেন যিনি এখানকার রাজনীতিতে উৎসাহ ছড়াচ্ছেন ?
এক কথায় এখানকার রাজনীতি কেউ ঠিকে থাকাটা যুদ্ধের সামিল। সেই যুদ্ধে জনগণের অপার ভালোবাসা নিয়ে দুই বার নির্বাচিত হয়েছিলেন লুৎফুর রহমান। সেইভ সিটের বড় দলের প্রার্থীদের বিপরীতে ছোট দল প্রার্থী লুৎফুর রহমান কে নিয়ে কেন এতো ভীতি সেটা বিজ্ঞ মৌসুমী আলোচকরা স্পষ্ট করছেন না ? তা হলে কি টাওয়ার হেমলেটস এর জনগণ ধরেই নেবে মেয়র লুৎফুর আপনাদের হার্টে ভয় ছড়িয়ে দিয়েছেন ? জনগণের হৃদয়ের ভাষা আপনারা বুঝতে পারছেন না অথবা আপনারা দলবাজি আর তেলবাজিতে বুস্ট থাকার পাশাপাশি নির্বাচন কালীন একদল অজ্ঞাত কথিত বিজ্ঞ-বিশেষজ্ঞ, জ্ঞাত-অজ্ঞাত পণ্ডিত নিয়ে আবারো অপপ্রচারের ভান্ডার নিয়ে নেমেছেন ? হিতে-বিপরীত হবে। জনগণ আপনাদের বুঝে ভালো ভাবে বুঝে। আপনারা অস্থির এবং জনগণের ভালোবাসা কি সেটা বুঝার মানসিকতা আপনাদের নেই। আপনাদের প্রতি বলছি,‘ভুত তাড়াতে ভুত না সেঁজে’ জনবান্ধব হোন এবং আত্মাকে প্রশস্ত করুন। আমি টাওয়ার হেমলেটস এর নাগরিক আপনাদের সু-কূ দুই চালের রাজনীতি আমার-আমাদের বুঝা হয়েছে। আপনাদের মতি-গতি বুঝা সহজ-সরলদের পক্ষে কঠিন। কখন না আপনারা আপসানা বেগম এমপি’র বিপরীতে যে ভাবে আমিনা আলীকে সিলেকশনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন নিয়ে সে ভাবে বিগস কে স্মল বানিয়ে ফেলেন। আপনাদের আছেন মৌসুমী বিজ্ঞজন কিংবা হেডমহীন অজ্ঞাত ভুত তাড়ানোর ভুত। -লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট, সম্পাদক দা সানরাইজ টুডে ডটকম

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button