চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা

বিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, দেশে দেশে কড়াকড়ি

বিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গেছে। ফলে ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন করে নিয়মের কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করেছিলেন, দ্বিতীয় দফায় করোনাভাইরাস ফিরে আসতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার প্রভাব পড়তেও শুরু করেছে। তারা বলছেন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে দ্বিতীয় দফায় আরও ভয়াবহ চেহারা নিতে পারে করোনা।
গত মাস থেকে ক্রমেই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল ইউরোপ। জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালিতে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু হয়েছিল। খুলে গিয়েছিল রেস্তোরাঁ, স্কুল, অফিস। খুলে দেওয়া হয়েছিল সীমান্তও। কিন্তু নতুন করে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ায় ফের কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ফ্রান্স। বাইরে বেরুলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কেউ মাস্ক না পরলে বড় অঙ্কের জরিমানা করা হচ্ছে। জার্মানিতেও করোনা কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল করা হয়েছিল। গরমে বহু মানুষ বেড়াতেও যাচ্ছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়াতে নতুন করে করোনার দাপট শুরু হয়েছে।

নিউজিল্যান্ড আগেই নিজেদের করোনাহীন রাষ্ট্র বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। নতুন করে সেখানে কয়েকটি ছাড়া আর করোনা সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। অস্ট্রেলিয়াও করোনার সঙ্গে যুদ্ধে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। লকডাউনও তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেলবোর্নে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ফলে সেখানে আবারও আংশিক লকডাউন জারি করা হয়েছে। মেলবোর্নেও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে সিডনির দিকে দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রকোপ পৌঁছয়নি।
অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, আপাতত মেলবোর্নের দিকেই প্রশাসন দৃষ্টি রেখেছে। নতুন নিয়ম দুই সপ্তাহ অন্তত জারি থাকবে। তারপর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এশিয়ার পরিস্থিতি সংকটজনক। ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে করোনা ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে। ভারতে প্রতিদিন রেকর্ড সংখ্যক রোগী বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগস্টে ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে। ফলে বেশ কিছু রাজ্য নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে। দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাইসহ বিভিন্ন শহরের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনা বাড়লেও মৃত্যুর হার কমেছে। চীনেও নতুন করে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দফায় এখন পর্যন্ত ৪৯ জন আক্রান্ত হয়েছে। তবে দেশের সর্বত্র চিত্রটি এক নয়। বেইজিংয়ে করোনার প্রকোপ কম। শিনজিয়াং প্রদেশেই মূলত সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ফলে সেখানেও নতুন বিধি তৈরি করেছে প্রশাসন।
হংকংও জানিয়েছে, সেখানে করোনার প্রকোপ আগের চেয়ে বেড়েছে। কঠিন নিয়ম তৈরি করে করোনা মোকাবিলার কথা জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা সংক্রমণ অনেক বেশি। মার্চ মাস থেকে সেখানে লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। কিন্তু তাতেও করোনার সংক্রমণ আটকানো যায়নি। জুন-জুলাই মাসে লকডাউনের কড়াকড়ি অনেকটাই শিথিল করা হয়। এবং তার জেরে সংক্রমণের পরিমাণও লাফিয়ে বেড়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকাও নতুন করে লকডাউনের কথা ভাবছে। তবে দ্বিতীয় দফার লকডাউন এলাকাভিত্তিক হতে পারে বলে প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নতুন করে করোনা নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হলেও যুক্তরাষ্ট্রে পরিস্থিতি সেই তিমিরেই। নিউইয়র্কের পর দেশের একাধিক রাজ্যে করোনা সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে। এখনো সব চেয়ে বেশি সংক্রমণ এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। সব মিলিয়ে গোটা পৃথিবীই দ্বিতীয় দফার করোনা সংক্রমণ নিয়ে নতুন করে চিন্তিত।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button