লেখক-সাংবাদিক মাওলানা রশীদ আহমদ এর দু’টি বই এখন বাজারে

জামিল আনসারি: নিউইয়র্ক প্রবাসী, তরুণ আলেম, লেখক-সাংবাদিক ও সংগঠক মাওলানা রশীদ আহমদ এর লেখা বই যথাক্রমে ‘কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা’ ও ‘মসজিদ ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা’ গ্রন্থ দু’টি এখন বাজারে। বই দু’টি প্রকাশ করেছে সিলেটের স্বনামধন্য প্রকাশনী পান্ডুলিপি প্রকাশন। আগামী সপ্তাহে নিউইয়র্কের মুক্তধারাসহ অন্যান্য লাইব্রেরিতে বইগুলো পাওয়া যাবে। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই লেখক ইয়র্ক বাংলা ম্যাগাজিনের সম্পাদক, নিউইয়র্ক-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাইটার্স ফোরাম অফ নর্থ আমেরিকা ইনক এর সাধারণ সম্পাদক।

দ্বীনের একজন সক্রিয় দা’ঈ এবং মসজিদভিত্তিক সমাজবিনির্মাণে নিবেদিতপ্রাণ এই সমাজকর্মী ১৯৭৭ ঈসায়ি সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার মানাউরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা মুশাহিদ বায়মপুরী (রাহ:) এর সুযোগ্য ছাত্র, উত্তর সিলেটের বরেণ্য আলেমে দ্বীন, মাওলানা মোঃ আব্দুল মতীন।যিনি বড় হুজুর নামে সর্বমহলে পরিচিত এবং মাতা মোছাম্মৎ হালিমা খাতুন।নিজ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণী কৃতিত্বের সাথে শেষ করে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের জামেয়া মুশাহিদিয়া খাগাইল মাদরাসায় তার দ্বীনি শিক্ষার হাতেখড়ি। এ ধারাবাহিকতায় কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ ক্লাস দাওরায়ে হাদীস সমাপন করেন। পাশাপাশি আঙ্গারজুর দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল এবং সিলেট সরকারী আলিয়া মাদরাসা থেকে আলিম, ফাযিল ও কামিল ফিল হাদীসও কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন। নিউইয়র্কে আসার প্রথম দিকে তিনি সিটি কলেজ অফ টেকনোলজিতে কিছুদিন পড়াশোনা করেন।
বর্তমানে শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি একটি কলেজে ‘‘আমেরিকান জার্নাল অফ হিউম্যানিটিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ’’ নিয়ে অধ্যয়ন করছেন। তিনি নব্বইয়ের দশক থেকে যুক্ত হন সিলেটে সাহিত্য ও সাংবাদিকতার সাথে। সিলেট শহরে অবস্থানকালে তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতাও করেন।
২০০৭ সালে প্রবাসে পাড়ি জমানোর পর নিউইয়র্কে গত এক যুগেরও বেশি সময় লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন সাহিত্য সাময়িকীর সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুল, ব্রুকলিন-এর প্রিন্সিপাল।
‘কুরআন সুন্নাহর আলোকে ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা’ মাওলানা রশীদ আহমদ-এর প্রথম গ্রন্থ।মসজিদ ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থ। প্রথম গ্রন্থটিতে লেখক ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহ কুরআন-সুন্নাহর আলোকে সহজ-বোধগম্য ভাষায় বুনিয়াদি শিক্ষার পাঁচটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন। যা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য খুবই। এই গ্রন্থটিকে লেখক পাঁচটি অধ্যায়ে উপস্থাপন করেছেন। মুসলিমদের দৈনন্দিন জীবনের সব কাজে ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলা অবশ্য কর্তব্য। একজন ঈমানদারের জন্য দ্বীনি শিক্ষার বিকল্প নেই।এই গ্রন্থ অধ্যয়নের মাধ্যমে মুসলিম নর-নারীদের মধ্যে দ্বীনী জ্ঞানচর্চা ও আল্লাহ তাআলার ভীতি সৃষ্টিতে লেখক আশাবাদী।
দ্বিতীয় বই ‘মসজিদ ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা’ গ্রন্থটিতে মসজিদ কেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থার পূর্ণাঙ্গ রূপদানের চেষ্টা করেছেন। সেখানে ইসলামের প্রাথমিক যুগে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা, দাওয়াতি কার্যক্রম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, বিচারসালিশসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যাবতীয় কর্ম সম্পাদন করা হতো মসজিদ থেকে। সেই মসজিদে নববীর আলোকে বর্তমান মসজিদগুলোকে ঢেলে সাজানোর রূপরেখা গ্রন্থটিতে তুলে ধরেছেন। মসজিদের ইমামদের পরিচিতি, যোগ্যতা, দক্ষতা পাশাপাশি তাদের সামাজিক অবস্থান, করণীয় ও বর্জনীয় কাজসমূহ সম্পূর্ণ রূপে তুলে ধরেছেন।
গ্রন্থ দু’টিতে লেখক অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে তথ্য ও তত্ত্বের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন। লেখকের বিষয়বস্ত নির্বাচন এবং লেখনীর ধারা খুবই সময়োপযোগি। বাংলাভাষি পাঠকদের জন্য বই দুইটি বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। গ্রন্থগুলোতে সমকালীন বাস্তবতায় পাঠকদের জন্য ইসলামের মৌলিকজ্ঞান অর্জনে সহায়ক হবে এবং জ্ঞানের জগতের মৌখিক চিন্তাধারাকে জাগ্রত করবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button