খ্রিস্টান এক নারীর হিজাব পরার কাহিনী

JC Aganজেসি এগান একজন খ্রিস্টান। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়ে স্থানীয় একটি গীর্জায় শিশুদের নিয়ে কাজ করেন তিনি। এ বছর ইস্টারের আগে খ্রিস্টানরা যখন চল্লিশ দিন ধরে উপোষ থাকেন সে সময় তিনি হিজাব পরার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর জেসি এগানের যেসব অভিজ্ঞতা হয়েছে সেগুলো তিনি একটি ব্লগে ডায়েরির আকারে লিখেছেন, যা খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। স্বামীর সাথে সংসারে দু’টো বাচ্চা আছে তার। ১২ বছরের বিবাহিত জীবন। হিজাব পরার কারণ সম্পর্কে তিনি বললেন, এমনিতেই একদিন হিজাব পরেছিলেন তিনি। সেটা ছিল পহেলা ফেব্রুয়ারি। তখনই তার মনে হয়েছিল লেন্টের চল্লিশ দিন হিজাব পরলে ক্যামন হয়? তিনি বলেন, “আমার ছোট্ট মেয়েটি মাথায় হিজাবসহ যখন আমাকে দেখলো তার খুব একটা অসুবিধা হয়নি। কিন্তু আমার ছেলেকে যখন হিজাব পরে ওর স্কুল থেকে ওকে তুলতে গেলাম তখন সে আমার কাছ থেকে দৌড়ে চলে গেল।” জেসি এগান কেন হিজাব পরলেন-এই প্রশ্নে তিনি জানালেন যে, নারীরা কেন হিজাব পরেন সেটাই তিনি বুঝতে চেয়েছেন। “আমি জানি ইরানে অনেক নারী আছেন যারা হিজাব পরাকে বাধ্যতামূলক করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাদের এই অবস্থানকে আমি সমর্থন করি। আমি মনে করি, কোনো নারী যদি হিজাব পরতে চায় তাহলে তার সেটা পরার অধিকার থাকা উচিত।” স্থানীয় অনেক মুসলিম নারী জেসি এগানের এই উদ্যোগকে সমর্থন করেছেন। তাদেরই একজন সায়রা রাতানসি বলেন, “এটা একটা চমৎকার ঘটনা। এই কাজটা হয়তো তার জন্যে অনেক কঠিন। কিন্তু এর ফলে অমুসলিম বহু নারী এই হিজাব সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।” মুসলিম এই নারীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল খ্রিস্টান জেসি এগান যে কাজটা করেছেন তিনি কি সেরকম কিছু করতে প্রস্তুত আছেন? তিনি জানান যে, চল্লিশ দিনের জন্যে তিনি তার হিজাব খুলে ফেলতে পারবেন না। হিজাব পরে জেসি এগান একদিন দেখা করলেন স্থানীয় একটি গীর্জার একজন ধর্মযাজকের সঙ্গে। তাকে তিনি জানালেন যে, চল্লিশ দিনের জন্যে তিনি হিজাব পরছেন। ধর্মযাজক ডাস্টিন হাইট জেসি এগানের এই উদ্যোগকে বেশ ভালোভাবেই সমর্থন করেছেন। তিনি বলেন, এটা একটা দারুণ ব্যাপার। জেসির প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন ছিল। অনেকেই হয়তো তার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকাবে। কিন্তু আমি যতোটা জেনেছি তাকে খুব বেশি নেতিবাচক অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়নি। জেসি এগান জানালেন, হিজাব পরে দিনের বেলায় তিনি যখন বাইরে গেছেন তখন বহু মানুষই তার দিকে তাকিয়ে থেকেছেন। “আমি দেখেছি অনেক খ্রিস্টান এ বিষয়ে আসলেই খুব খারাপ খারাপ মন্তব্য করেছেন। ইন্টারনেটে তারা আমাকে আক্রমণ করেও কথা বলেছেন।” তবে জেসি এগান বলেছেন, হিজাব পরার কারণে তাকে যারা আক্রমণ করেছেন তাদের ভালোবাসার জন্যেও তিনি নিজেকে সতর্ক করে দিয়েছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button