শেষ হলো ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচন

ইউরোপে ইইউবিরোধীদের শক্তি বাড়লো

EUশেষ হলো ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচন। চারদিন ধরে চলা এই নির্বাচনে জয় এবার রক্ষণশীলদের। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অভিবাসনবিরোধী দলগুলোর অবস্থানও খুব শক্তিশালী। জানাচ্ছে বুথ ফেরত সমীক্ষা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অফিসিয়াল প্রোজেকশন বলছে, লুক্সেমবুর্গের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার-এর রক্ষণশীল শিবির ‘ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি’ সংসদের ৭৫১টির মধ্যে ২১১টি আসন পেতে যাচ্ছে। এর পরে থাকবে জার্মানির রাজনীতিক মার্টিন শুলৎসের নেতৃত্বাধীন সামাজিক গণতন্ত্রী শিবির। তারা ১৯৩টি আসন পেতে পারে। আর ইইউ বিরোধী দলগুলো সব মিলিয়ে প্রায় ১৩০টির মতো আসন পাবে। নতুন বার্তা।
ফ্রান্সে মোট ভোটের প্রায় ২৫ শতাংশ পেয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছে ইইউবিরোধী ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা এনএফ। দলটি চায় ফ্রান্স ইউরো বাতিল করুক এবং ইইউ থেকে বের হতে গণভোটের আয়োজন করুক। এনএফ পার্টির এমন উত্থানকে ‘রাজনীতির ভূমিকম্প’ বলে আখ্যায়িত করেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে, এনএফ পার্টির প্রধান লে পেন বলেছেন, “জনগণ পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা আর বাইরের শক্তি তথা ইইউ কমিশনার, অনির্বাচিত আমলাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে চায় না। নিজেদের ভাগ্য তারা নিজেরাই নির্ধারণ করতে চায়।”
ফ্রান্সের এই ফলাফল তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের আসন বণ্টন হয় ২৮টি দেশের জনসংখ্যার প্রেক্ষিতে। সে হিসেবে ফ্রান্স থেকে এবার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৪ জন সাংসদ ইউরোপীয় সংসদে বসবে। আর এনএফ ২৫ শতাংশ ভোট পাওয়ার মানে হলো ইউরোপীয় সংসদে এবার ফ্রান্সের প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন প্রতিনিধি থাকবেন যারা চরমভাবে ইইউ বিরোধী।
বৃটেন থেকেও ইইউবিরোধী দল ইউকেআপি ভালো করার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ইইউ সংসদে বৃটেনের আসন সংখ্যা ৭৩টি। ওই সংসদে সবচেয়ে বেশি আসন প্রাপ্য জার্মানির, ৯৬টি। আশার কথা সেখানে ইইউ বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত ‘অলটারনেটিভ ফর ডয়েচলান্ড’ পেয়েছে প্রায় সাত শতাংশ ভোট। জার্মানিতে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ। যদিও তাদের প্রাপ্ত ভোট সংখ্যা ২০০৯ সালের চেয়ে এবার কমে গেছে।
গ্রিসে সরকারের ব্যয় সংকোচ নীতির বিরোধী হিসেবে পরিচিত চরম বামপন্থি সিরিজা পার্টি সবচেয়ে বেশি ভোট পেতে চলেছে। সংসদে গ্রিসের প্রতিনিধি সংখ্যা এবার ২১। ডেনমার্কে ২৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছে অভিবাসন বিরোধী ডেনিশ পিপলস পার্টি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে চরম ব্যয় সংকোচ নীতি গ্রহণ করায় ইইউ তথা ইউরোর প্রতি মানুষের বিরূপ মনোভাব এসেছে।
এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ছিল প্রায় চারশো মিলিয়ন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছে প্রায় ৪৩.১১ শতাংশ। ২০০৯ সালে সংখ্যাটা ছিল ৪৩ শতাংশ। সে হিসেবে কিছুটা হলেও এবার ভোট দেয়ার হার বেড়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button