ইউরোপিয়ানদের কঠোর হুঁশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের

ইউরোপের দিকে ঘনিষ্ঠ নজর রাখছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ইরানের বিরুদ্ধে যে অবরোধ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র তাকে পাশ কাটিয়ে ওই দেশটির সঙ্গে বিকল্প পথে অর্থ লেনদেনের পন্থা খুঁজছে ইউরোপ, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের ওই অবরোধকে হেয় করা না হয়। এমন উদ্যোগের বিষয়ে ইউরোপকে সতর্ক করেছেন ট্রাম্প।

এ বিষয়ে ইউরোপিয়ানদের প্রতি নোটিশ দিচ্ছে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হচ্ছে, যদি তারা ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের ইতি ঘটানোর চেষ্টা করেন, তাহলে তাদের ওপর কড়া জরিমানা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইরানের সঙ্গে ব্যবসাকে সহজ ও স্বাভাবিক করতে ওই পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। যদি তারা এক্ষেত্রে সফল হয় বা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়, তাহলে আন্তঃআটলান্টিক সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দিতে পারে।

পরিকল্পনার বিষয়ে কথা বলেছেন ইউরোপিয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মঘেরিনি। তিনি বলেছেন, তাদের এমন একটি বিকল্প সিস্টেমের প্রস্তুতি অগ্রসর অবস্থায় রয়েছে। ব্রাসেলসে গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে মাহা কোচিজানসিক বলেছেন, আমরা খুব শিগগিরই এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারবো বলে আশা করছি।
ইউরোপিয় ইউনিয়নের সম্ভাব্য ঘোষণা দেয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা শুক্রবার এপি’কে বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ পূর্ণাঙ্গ বাস্তায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবরোধ অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে সিনেটর টম কটন বলছেন, একটি পথ বেছে নিতে হবে। আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি ইরানের সঙ্গে নাকি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন, ব্যবসা করবেন। আমি আশা করি আমাদের ইউরোপিয়ান মিত্ররা প্রজ্ঞার সঙ্গে তা বাছাই করবেন।

২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময়ে ইরানের সঙ্গে তিনি পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্যোগে যোগ দেয় চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও বৃটেন। এই চুক্তির অধীনে ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য তার বিরুদ্ধে দেয়া অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই চুক্তিকে ভয়ঙ্কর ও একপেশে চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। গত বছর তিনি ওই চুক্তি বাতিল করেন। ইরানের ওপর নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আরোপ করেন। তারপর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে নানা রকম ব্যবস্থা নেয়া অব্যাহত আছে। কিন্তু ইরানে রয়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ। অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে তাদের। অবরোধের ফলে সেই সব ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ জন্য ইউরোপিয় ইউনিয়নের ওইসব দেশ থেকে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রকাশ্যে বিরোধিতা করা হয় ইরান চুক্তি বাতিলের সময়। কিন্তু ট্রাম্প সে কথায় কান দেন নি। ফলে ইউরোপিয় ইউনিয়ন এখন বিকল্প পথ খুঁজছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button