নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ১২টি দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২টি পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে কয়েক হাজার দেশীয় পর্যবেক্ষক বাংলাদেশের এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। দেশটির সিনিয়র এক কর্মকর্তা বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে বলে আশাপ্রকাশ করে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

আসন্ন ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের তীব্র উদ্বেগের মধ্যে চলতি সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনও পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না বলে জানায়। একই সঙ্গে তারা বাংলাদেশের নির্বাচন ও নির্বাচনী ফলাফল নিয়েও কোনও মন্তব্য করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। ইইউর এই অবস্থানের পর বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি-না এমন গুঞ্জন শুরু হয়।

শনিবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র এক ডজন পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে। প্রত্যেকটি দলে দু’জন করে পর্যবেক্ষক থাকবেন। যারা দেশের অধিকাংশ স্থানে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে চাইছেন। তার পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রধান খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাবন্দী রয়েছেন। তবে খালেদা তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে বিএনপি। বিএনপির অনেক নেতাকর্মীও বন্দী রয়েছে।

কারচুপির অভিযোগ এনে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচন বয়কট করেছিল বিএনপি। তবে দলটি বলছে, এবারের নির্বাচনে অংশ নেবে তারা। নির্বাচন অবাধ হবে না উল্লেখ করে তারা ডিসেম্বরের নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকের দাবি জানিয়ে আসছে।

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা উইলিয়াম মোয়েলার বলেছেন, বাংলাদেশে ১২টি পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রত্যেকটি দল দুই সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে। মার্কিন এই নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন।

চলতি সপ্তাহে মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ সরকার অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার ওপর জোর দিয়েছে। আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। আর এই অবাধ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আমরা পর্যবেক্ষকদের অর্থায়ন করছি।
সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শনের কথা উল্লেখ করে মোয়েলার বলেছেন, ওই সময় ভোটারদের দমন করা হয়েছিল। বর্তমানেও সেই ধরণের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আমরা আশা করছি, জাতীয় নির্বাচনে এ ধরনের সঙ্কট দেখতে পাবো না।

গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চমাত্রার রাজনৈতিক মেরুকরণ, ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও রাজনৈতিক পরিবেশ সঙ্কোচনের মাঝে বাংলাদেশের এবারের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

মোয়েলার বলেছেন, ব্যাঙ্কক ভিত্তিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদী বালাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। এছাড়াও নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশের প্রায় ১৫ হাজার পর্যবেক্ষককে যৌথভাবে অর্থায়ন করবে ইউএস অ্যাজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ ও সুইস সরকার।

মার্কিন এই কর্মকর্তা বলেন, দেশীয় পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশজুড়ে ছড়িয়ে যাবেন; কিন্তু প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে পৌঁছাতে সক্ষম নাও হতে পারেন তারা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button