চীন থেকে স্পেন পর্যন্ত বিশ্বের দীর্ঘতম রেলপথ

Chainaবিশ্বের দীর্ঘতম রেলপথের প্রথম ভ্রমণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ পথে এক প্রান্তে আছে চীন আর অন্য প্রান্তে স্পেন। চীনের প্রথম ট্রেনটি ১৬ হাজার ১৫৬ মাইল পথ পরিভ্রমণ শেষে স্পেন থেকে দেশে ফিরেছে। ট্রেনটির এ ভ্রমণ সম্পন্ন করতে চার মাস সময় লাগে। ইকশিন’আউ কার্গো ট্রেন লাইনটি চীন থেকে কাজাকিস্তান, বেলারাস, পোলান্ড, জার্মানি ও ফ্রান্স হয়ে স্পেনে গিয়ে শেষ হয়েছে। মালবাহী ট্রেনটি চীন থেকে সস্তা দামের পণ্য বোঝাই করে নিয়ে যায়, আর ফিরে আসে দামি অলিভ ওয়েল বা জয়তুনের তেল নিয়ে।
চীনের পূর্বাঞ্চলের ইবউ শহর থেকে গত নভেম্বরে ৮২টি কনটেইনার নিয়ে মালবাহী ট্রেনটি যাত্রা শুরু করে। কনটেনারগুলো ক্রিস্টমাসের নানা অলঙ্কার ও সাজগোজের জিনিসপত্র, মনোহারি পণ্যসামগ্রী ও হস্তশিল্প পণ্যে ভরা ছিল। ১৪ ডিসেম্বর ট্রেনটি মাদ্রিদে পৌঁছায়। পথে হাজার হাজার ছোট ছোট দোকান ও খ্রিস্টমাস মার্কেট সস্তা দামের এসব চীনা পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে।
ইকশিন’আউ রেলপথ চালুর আগে চীন ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য অপর্যাপ্ত সাগর ও বিমানপথকে ব্যবহার করা হত, যার অর্থ হলো ইউরোপে চীনা পণ্যের উচ্চ দাম।ট্রেনটি পরিচালনাকারী ইবউ সিএফ ইন্টারন্যাশনাল লজিস্টিকসের ম্যানেজার লি হুইহুয়ান বলেন, ‘এ মালবাহী ট্রেন বিশ্বের বৃহত্তম ক্ষুদ্রপণ্যের বাজার ইবউ এবং ইউরোপের বৃহত্তম ক্ষুদ্রপণ্য বাজার মাদ্রিদের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করবে।’
গত সপ্তাহান্তে ট্রেনটি জয়তুনের তেল ও অন্যান্য স্পেনিশ পণ্যসামগ্রী নিয়ে ইবউতে ফিরে আসে। ক্রমবর্ধমান ধনবান চীনাদের কাছে এসব পণ্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
এর আগের রেকর্ড সৃষ্টিকারী ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ের চেয়ে এ রেলপথ ৪৫০ মাইল দীর্ঘ। ওই রেলপথ রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলের ভ্লাদিভস্তোকের সাথে মস্কোকে সংযুক্ত করেছে। রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে ইকশিন’আউ রেলপথ চালুকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এ পথে চলার সময় চীন থেকে স্পেন পর্যন্ত কনটেইনারগুলোকে তিন বার লাইন পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়। কারণ পথের ধারের সাতটি দেশের রেল লাইন ভিন্ন ভিন্ন গেজের। তৎসত্ত্বেও সমর্থকেরা আশা করছেন, এ রেলপথ চীন ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি করবে, যা বর্তমানে দৈনিক ১০০ কোটি ডলার। নতুন রেলপথের উভয় প্রান্তের ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করেন, এ ট্রেন যোগাযোগ সাগরপথের চেয়ে দ্রুত পণ্য পরিবহনের সুযোগ এনে দিয়েছে এবং বিমানের মালবহনের চেয়ে খরচ অনেক কম।
লোডিং গ্যালারি
ইবউ শহরটিতে ১২ লাখ মানুষ বসবাস করে। এ শহরটি এখন আধুনিক চীনের ব্যাপক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। শহরটির ক্ষুদ্র পণ্যসামগ্রীর মার্কেট ত্বরিতগতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং ২০১৪ সালে মোট আমদানি-রফতানির পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৩৭০ কোটি ডলার, ১২ মাসে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২৮.৬ শতাংশ।
চীনের রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বার্তাসংস্থা সিনহুয়া জানায়, বিশ্বের খ্রিস্টমাস অলঙ্কার ও সাজসরঞ্জামের শতকরা ৬০ ভাগই ইবউর খ্রিস্টমাস মার্কেটে বেচাকেনা হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button