ম্যাকমিলান ‘ওয়ার্ল্ড বিগেস্ট কফি মর্নিং’ ২৮ সেপ্টেম্বর

মুসলিম কমিউনিটিকে অংশগ্রহণের আহবান

ব্রিটেনের মুসলিম কমিউনিটি দানশীল। বিভিন্ন খাতে প্রতি বছর দান করেন প্রায় ৫শ মিলিয়ন পাউন্ড। এর মধ্যে শুধু রামাদ্বানেই দান করা হয় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি। এসব দানের অধিকাংশই বিভিন্ন চ্যারিটি সংস্থার মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয়। এবার এই দানশীল কমিউনিটির কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছে ব্রিটেনে ক্যান্সার রোগীদের সেবায় কাজ করা চ্যারিটি সংস্থা ম্যাকমিলান।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ‘ওয়ার্ল্ড বিগেস্ট কফি মর্নিং’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে মুসলিম কমিউনিটিতে এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

গত ৩০ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে ইস্ট লন্ডন মসজিদের বারাকা খান গ্যালারীতে এক ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। বারাকা খান ফাউন্ডেশন ও ম্যাকমিলানের যৌথ উদ্যোগে যুক্তরাজ্যের বড় বড় মসজিদকে সাথে নিয়ে এই ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে মুসলিম কমিউনিটি থেকে ১শ হাজার পাউন্ড সংগ্রহের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বারাকা খান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইকবাল খান এই ক্যাম্পেইনে ১০ হাজার পাউন্ড দান করার ঘোষণা দেন। এতে বক্তব্য রাখেন ম্যাকমিলান এর সিইও লিন্ডা থমাস, বারাকা খান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইকবাল খান, মুসলিম কাউন্সিল অব বৃটেনের সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান, ইস্ট লন্ডন মস্ক ও লন্ডন মুসলিম সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক দেলওয়ার খান। শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ইসলামি সংগীত শিল্পী নওশাদ মাহফুজ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ম্যাকমিলান এর সিইও লিন্ডা থমাস বলেন, ক্যান্সার রোগীদের সেবায় আমাদের সেবাগুলো কেন মুসলিম কমিউনিটির কাছে আশাতীতভাবে পৌঁছছে না তা আমরা খুঁজে দেখছি। ভাষাগত কিছু সমস্যা আছে। এই সমস্যা কাটাতে আমরা ট্রান্সলেশন সুবিধা বৃদ্ধি করেছি। অন্যান্য সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধান খুঁজে বের করা চেষ্টা করছি। তিনি ম্যাকমিলানের সেবাগুলো গ্রহণ করতে মুসলিম কমিউনিটির প্রতি আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, ক্যান্সার যে কোনো মানুষের হতে পারে। ক্যান্সার হওয়ার কোনো বয়স নেই। ম্যাকমিলান জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষকে সেবা দিয়ে থাকে। দানশীল মুসলিম কমিউনিটির প্রতি আমাদের আহবান, মরণব্যাধী ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসুন। আপনাদের দানের মাধ্যমে একজন ক্যান্সার রোগী সুস্থ হয়ে ওঠতে পারেন।

এমসিবির সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান বলেন, ব্রিটেনের ৫শ মসজিদ আমাদের সদস্য। বছরের একটি দিন আমরা ননমুসলিমদের জন্য ভিজিট মাই মস্ক কর্মসূচি পালন করে থাকি। প্রথমবার মাত্র ২০টি মসজিদের অংশগ্রহণে এই ক্যাম্পেইন শুরু হলেও গত বছরের ভিজিট মাই মস্ক কর্মসূচিতে ২শ মসজিদ অংশগ্রহণ করেছে। আমরা ভিজিট মাই মস্ক কর্মসূচির মাধ্যমে মুসলিম কমিউনিটিকে ম্যাকমিলানের সেবাসমুহের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টি করা চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, ক্যান্সার রোগীদের সেবায় কাজ করার এটি একটি বড় সুযোগ। তিনি এই সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য বারাকা খান ফাউন্ডেশন ও ম্যাকমিলানকে ধন্যবাদ জানান।

ইকবাল খান বলেন, তাঁর মেয়ে বারাকা খান ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর জীবনের শেষ দুইটি বছর ম্যাকমিলানের সেবায় বেঁঁচেছিলো। ওই দুই বছর সে ম্যাকমিলানের জন্য ফান্ডরেইজিংয়ে নিজেকে নিবেদিত করে দিয়েছিলো। বারাকা খান তাঁদের পরিবারের জন্য আশির্বাদ হিসেবে এসেছিলো।
উল্লেখ্য, লেখিকা বারাকা খান ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে তাঁর মাস্টার ডিগ্রী গ্রহণের মাত্র দুই দিন আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর ২ বছর ৯ মাস বেঁচেছিলেন। ওই সময় ম্যাকমিলানসহ বিভিন্ন চ্যারিটির জন্য ৬শ হাজারেরও বেশি ফান্ডরেইজিং করেন। তাঁর মৃত্যুর পর পিতা ইকবাল খান প্রতিষ্ঠা করেন বারাকা খান ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশনের নামে ইস্ট লন্ডন মসজিদের ননমুসলিম ভিজিটর সেন্টারের নামকরণ করা হয় বারাকা খান ভিজিটর সেন্টার। বারাকা খান ফাউন্ডেশন লন্ডনে বিভিন্ন সেবামুলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button