কওমী মাদরাসা নিয়ে ষড়যন্ত্র করলে আওয়ামী লীগ নিজেই ধ্বংস হয়ে যাবে : পীর সাহেব চরমোনাই

Chormunaiইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মাওলানা মুফতী সাইয়েদ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মসজিদ-মাদরাসা আছে থাকবে। এই দেশ মসজিদের দেশ, এটি মাদরাসার দেশ। যারা মাদরাসা-মসজিদের ওপর হাত দিতে চাইবে, তাদের সেই হাত জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মুসলিম ইনিস্টিটিউট মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর আয়োজিত থানা প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন।
চরমোনাইয়ের পীর সাহেব আরও বলেন, একদিকে সরকার একতরফাভাবে ‘কওমী মাদরাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ’ করে রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির স্বীকৃতি দিতে চায়, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র জয় ‘মাদরাসা কমানোর জন্য আন্দোলনে নেমেছি’ বলে ঘোষণা দিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ দু’শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কওমী মাদরাসার স্বতন্ত্রধারাকে বিনষ্ট এবং ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছে। পীর সাহেব সরকারের আলেম-ওলামা, মসজিদ-মাদরাসা, দাড়ি-টুপির বিরুদ্ধে এই অঘোষিত যুদ্ধের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
পীর সাহেব চরমোনাই মসজিদ-মাদরাসা নিয়ে অতীত সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর রাজনীতিক ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, এ দেশের মানুষের রক্ত-মাংস এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের সাথে মাদরাসা ও ওলামায়েকেরামের অবদান জড়িত। বিগত ৪২ বছরে ঘুরে ফিরে রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি-দুঃশাসন ছাড়া ভাগ্যপীড়িত জনগণকে আর কিছুই উপহার দেয়নি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’দলই মাদরাসা-মসজিদ ও ওলামায়েকেরামকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে মাত্র। তিনি আগামী নির্বাচনে আওয়ামী ও বিএনপির দুর্নীতি-দুঃশাসনের অপরাজনীতি পরিহার করে ইসলামকে বিকল্প শক্তি হিসেবে বিজয়ী করার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, বর্তমান সরকারের ওপর বাহাত্তরের কমিউনিস্ট নাস্তিক্যবাদী প্রেতাত্মা ভর করেছে। এরা মরহুম শেখ মুজিবের মতো তার কন্যাকেও স্বৈরতন্ত্রী একদলীয় বাকশালের মতো বিপজ্জনক পথে নিয়ে যেতে সচেষ্ট। দেশের শতকরা ৯০ এমনকি আওয়ামী লীগেরই অধিকাংশ সমর্থক নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে হলেও কমিউনিস্ট নেতাদের প্ররোচনায় এই ব্যবস্থা বাতিল করে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সবার অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না উল্লেখ করে পীর সাহেব বলেন, নৌকা এবার ডুববে আর ভেসে ওঠবে না এই ভয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে।
পীর সাহেব চরমোনাই সম্মেলন থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত দলীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। প্রার্থীগণ হচ্ছেন, চট্টগ্রাম-১ আসনে মাওলানা আবদুল্লাহ আল-হারুন কাউসার, চট্টগ্রাম-২ আসনে কাজী সালেহ আহমদ, চট্টগ্রাম-৩ আসনে আলী আজগর চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৪ আসনে মাওলানা হাবিবুল্লাহ নদভী, চট্টগ্রাম-৬ আসনে এডভোকেট আবদুল্লাহ আল-হারুন, চট্টগ্রাম-৭ আসনে হাফেজ মাওলানা ইবরাহীম, চট্টগ্রাম-৮ আসনে মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-৯ আসনে শাহজাহান ভূইয়া, চট্টগ্রাম-১০ আসনে মুহাম্মদ লোকমান হোসেন সওদাগর, চট্টগ্রাম-১২ আসনে মাওলানা এরফানুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে মাওলানা আবদুল হামিদ, চট্টগ্রাম-১৪ আসনে মুফতী দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনে মাওলানা ফরিদ আহমদ আনসারী, কক্সবাজার-২ আসনে মাওলানা জসীম উদ্দীন নদভী, কক্সবাজার-৩ আসনে হাফেজ মাওলানা ফারুক, খাগড়াছড়ি-১ আসনে ডাঃ মুহাম্মদ  আনোয়ার হোসেন ও রাঙ্গামাটি-১ আসনে এনামুল হক মৃধা বাচ্চু।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কাশেম মাতাবরের সভাপতিত্বে থানা প্রতিনিধি সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইমতিয়ায আলম। উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম, উপদেষ্টা মাওলানা জসিম উদ্দীন ফারুকী, সেক্রেটারি মুহাম্মদ আল-ইকবাল, মাওলানা ইসমাঈল হুসাইন জিহাদী, অধ্যাপক মাওলানা রফিকুল আলম, মুফতী দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা হাবীবুল্লাহ নদভী, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ রফিক, মাওলানা বুরহান উদ্দীন আল-বারী, মাওলানা মনসুরুল হক জিহাদী, ডাঃ রেজাউল করীম, আবদুর রহীম মোল্লা, শ্রমিক নেতা ওয়ায়েজ হোসাইন ভূঁইয়া, মাস্টার আবদুল মতীন, মাওলানা আমজাদ হোসাইন, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম জিহাদী, মুহাম্মদ ইবরাহীম খলীল ও ছাত্রনেতা মুস্তাক আহমদ প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button