আমার কণ্ঠরোধের চেষ্টা হচ্ছে : ফরহাদ মজহার

কবি, কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার অভিযোগ করেছেন, আমার কণ্ঠরোধের চেষ্টা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগপন্থি সাংবাদিক ইউনিয়নের বিবৃতির প্রতিবাদ করে ফরহাদ মজহার এই অভিযোগ করেছেন।
বিবৃতিতে ফরহাদ মজহার বলেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একটি অংশের বিবৃতি দেখে আমি স্তম্ভিত, বিমূঢ় এবং হতবাক। সারাদেশে সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ খুবই দুঃখজনক। গণমাধ্যমের ওপর কেন এই ধরণের হামলা হয়, আমি ২৮ অক্টোবর রাতে ‘একুশের রাত’ টক শোতে তারই ব্যাখা ও বিশ্লেষণ হাজির করেছি। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ যেভাবে ব্যাখা করেছেন তা যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তারা নিজেরা তাদের নিজেদের বিবেককে প্রশ্ন করলেই বুঝবেন। তারা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে এই বিষোদ্গার করছেন। গণমাধ্যমের ওপর দুঃখজনক হামলার যে ব্যাখা ও বিশ্লেষণ আমি করেছি তার সাথে তারা একমত না হলে ভিন্ন ব্যখ্যা হাজির করতে পারেন। একেই বলে বাক, ব্যাক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, একেই বলে গণতন্ত্র চর্চা। কিন্তু সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তা না করে আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণের দাবিই শুধু করছেন না, আমার কন্ঠরোধ করতে চাইছেন। তারা এতোই প্রতিহিংসাপরায়ন হয়েছেন যে সারাদেশের সাংবাদিকদের ওপর হামলার জন্য আমামকে এককভাবে দায়ী করে আমাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্যাতনের জন্য উস্কানি ও হুমকি দিচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার যে নজির তারা সৃষ্টি করেছেন তা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে কলংকজনক, নিন্দনীয় ও প্রতিহিংসামূলক অধ্যায় হিসেবে চিরকাল চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই বক্তব্য গণতন্ত্রমনা সাংবাদিক সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না, এটা পরিষ্কার। গত দু’দিন ধরে টেলিভিশান ও অন্যান্য গণমাধ্যমে এদেরই কেউ কেউ আমার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, মিথ্যাচার ও বিকৃত ব্যখ্যা করে যাচ্ছে তাতে নাগরিক হিসাবে আমি উদ্বিগ্ন এবং আমার নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করি। তিনি বলেন, আমি সুস্পষ্টভাবে সেদিনের টকশোতে বলেছি, ‘আমি এর আগে যে বোমার কথা বলেছি এই অর্থে কথাটা বলেছি যে আমি স্বভাবতই কখনই চাইব না কেউ পটকা, নিন্দা বা ঢিলও যেন গণমাধ্যমের ওপর ছুঁড়ুক। এটা কথার কথা, ৎযবঃড়ৎরপ। আলোচনা করার জন্য, যাতে আমরা বুদ্ধিজীবীরা গণমাধ্যমের কর্মীরা বুঝতে পারি যে এই বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শেখ হাসিনা বা খালেদা জিয়া একমাত্র দায়ী নয়। আমরা, আমাদের ভুমিকার কারণে আজকে এই পরিস্থিতি আমরা তৈরি করেছি।
ফরহাদ মজহার বলেন, আমি নিজেকে গণমাধ্যমের একজন সদস্য হিসেবেই কথাগুলো বলেছি। গণমাধ্যমেকে অবশ্যই নিজেকে আত্ম-সমালোচনা করতে হবে। কিভাবে করতে পারে আন্তরিক ভাবেই উপলব্ধি করেই কথাগুলো বলেছি। গণতন্ত্রমনা ও মানবাধিকারের বিশ্বাসী যে কোন সাংবাদিক ও নাগরিক তা উপলব্ধি করবেন। আমার এই সারকথা বাদ দিয়ে খণ্ডিত ও বিকৃত ভাবে আমার বক্তব্য হাজির করার আমি তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, আমি আরো বলেছি, ‘আমি অত্যন্ত আন্তরিক ভাবে গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার পক্ষে। গণ মাধ্যমের ওপর কোনো প্রকার নিয়ন্ত্রণ কারও থাকা উচিত না, যদি না যিনি মত প্রকাশ করছেন, যার বিরুদ্ধে করছেন ওতে যেন কারও অপমান বা অমর্যাদা না হয়।
ফরহাদ মজহার বলেন, টেলিভিশন টক শোতে আমি কী বলেছিলাম তা পর্যালোচনা না করে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ যে অসহনশীল বক্তব্য দিয়েছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। একজন নাগরিকের শুধুমাত্র টেলিভিশনের একটি টক শোতে একটি বিশ্লেষণমূলক বক্তব্যকেই বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সকল হামলার জন্য দায়ী করা সাংবাদিক নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। সাংবাদিকের কাজ হচ্ছে সত্য উদ্ঘাটন করা, কিন্তু তারা নিজেরাই মিথ্যাচার করছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button