সিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া ঐকমত্য

Syriaসিরিয়াকে রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া একটি চুক্তিতে উপনীত হয়েছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, সিরিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সম্ভাবনা এখনও বহাল রয়েছে। ওদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেছেন, আগস্টে সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে জাতিসংঘ তদন্ত প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। সিরিয়াকে নিয়ে জেনেভাতে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনার তৃতীয় এবং শেষদিনের শেষে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ বলেছেন, ঐকমত্য এবং সমঝোতার পরিপ্রেক্ষিতেই তারা চুক্তি করার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, এ চুক্তির আওতায় সিরিয়াকে অবশ্যই এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের রাসায়নিক অস্ত্রের সমন্বিত তালিকার সংখ্যা পাঠাতে হবে। এ ক্ষেত্রে সিরিয়া যদি এ তালিকা পাঠাতে অপারগ হয় তাহলে সামরিক অভিযানের ব্যাপারে তারা নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন চাইবেন।
কেরি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদ জাতিসংঘ পর্যবেক্ষদের রাসায়নিক অস্ত্র পরিদর্শন করার অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে নভেম্বর পর্যন্ত সময় পাবেন। ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই তাকে সব ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কেরি বলেন, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদের ব্যাপারে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা আলোপ-আলোচনা করেছেন। এ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই তারা একমত হয়েছেন, সিরিয়াকে অবশ্যই সব রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলতে হবে। সিরিয়ার যেসব স্থানে রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়, সেসব স্থানে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শন করতে দেয়ার জন্য সিরিয়াকে অবশ্যই অনুমতি দেয়ার ব্যাপারেও তারা একমত হয়েছেন।
কেরি বলেন, রাসায়নিক অস্ত্র নির্মূল করতে বিশেষ মান বজায় রাখতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এই ফ্রেমওয়ার্ক পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে সিরিয়ার যে কোন ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি পুরোপুরি দূর করা সম্ভব। তিনি বলেন, রাসায়নিক অস্ত্র বিস্তারের ঝুঁকি রয়েছে বলে এ ফ্রেমওয়ার্ক বিশ্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। কেরি বলেন, বিশ্ব এখন আশা করবে আসাদ সরকার তাদের প্রতিশ্রুতির প্রতি সচেষ্ট থাকুক। এখানে ছেলেখেলার কোন সুযোগ নেই। এর অংশ হিসেবে আসাদ সরকারকে অনতিবিলম্বে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষদের রাসায়নিক অস্ত্র পরিদর্শনের অনুমতি দেয়া উচিত।
এদিকে শুক্রবার জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মহাসচিব মুন বলেছেন, আগস্টে সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, এ কথা জাতিসংঘ তদন্ত প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার ধারণা প্রতিবেদনটি ব্যাপক হবে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে, এটি প্রতিবেদনে বিস্তৃতভাবে উঠে আসবে। তবে প্রতিবেদন পাওয়ার আগে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে আমি কিছু বলবো না, সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২১শে আগস্ট দামেস্কের প্রান্তে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ঘৌতা এলাকায় চালানো এ হামলার জন্য কারা দায়ী, তা এ প্রতিবেদনের আওতাবহির্ভূত হওয়ায় সে সম্পর্কে কোন মন্তব্য করেননি মুন। তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে’ অপরাধী বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ঘৌতায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে ১৪শ’রও বেশি বেসামরিক মানুষকে হত্যার দায়ে আসাদ সরকারকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। অভিযোগ অস্বীকার করে সরকার এর দায় বিদ্রোহীদের ওপর চাপিয়েছে। বান বলেন, আমি নিশ্চিত সবকিছু পরিষ্কার হওয়ার পর এ বিষয়ে জবাবদিহিতার প্রক্রিয়াটি শুরু হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button