ব্রিটেনের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় সিলেটের ইকবাল আহমদ

iqbal-ahmedসিলেটের ওসমানীনগরের কৃতি সন্তান ব্রিটেনের শিল্পপতি ইকবাল আহমদ ব্রিটেনের শীর্ষ ধনীদের একজন। ব্রিটেনের অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে অসামান্য ভুমিকা রয়েছে সী মার্ক গ্রুপ ও এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ওবিইর। ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক সানডে টাইমস পত্রিকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইকবাল আহমদ ব্রিটেনের এক হাজার ধনীর তালিকায় ৪৬৬তম স্থান পেয়েছেন। এক বছরে তার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২০ মিলিয়ন পাউন্ড বেড়ে হয়েছে ২০৫ মিলিয়ন পাউন্ড তথা ২,৪৯৭ কোটি টাকা প্রায়।
ইকবাল আহমদ ওবিই’র জন্ম ১৯৫৬ সালে ওসমানীনগরের বুরুঙ্গায় । তিনি ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ব্রিটেনে এসেছিলেন। ব্রিটেনের ওয়েস্ট মিনিস্টারের সিটি কলেজ থেকে ১৯৭৭ সালে লেখাপড়া শেষ করে জড়িয়ে পড়েন পারিবারিক ব্যবসায়। গড়ে তুলেন সী মার্ক ও ইবকোর মতো সফল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন ম্যানচেস্টারে।
ইকবাল আহমদ ওবিই ২০০৬ সালে সর্বপ্রথম সানডে টাইমসের তালিকায় ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে উঠে আসেন। ব্রিটেনের শীর্ষ ধনীর তালিকায় সে বছর ৫১১ নম্বর স্থান দখল করেন তিনি। তার সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করা হয় ১১০ মিলিয়ন পাউন্ড। ২০১৪ সালে যুক্তরাজ্যের রপ্তানিতে অবদান রাখায় দেশটির বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি বিষয়ক সরকারি তদারকি সংস্থা ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্ট-এর সম্মাননা পান বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদ। যুক্তরাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় রপ্তানির মাধ্যমে প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখায় এক দল ব্রিটিশ ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিনিও ইউকেটিআই এক্সপোর্ট চ্যাম্পিয়ন-২০১৫ নামের ওই পুরস্কার পান।
ইকবাল আহমেদ বলেন, এ ধরনের স্বীকৃতি আমাকে প্রেরণা যোগায়। ব্যবসা বাড়াতেও সহায়তা করে। আমি এ কারণে আরও আনন্দিত যে এর থেকে বাংলাদেশও সুফল পায়।
ইকবাল আহমেদ সিমার্ক গ্রুপ এবং এনআরবি ব্যাংক বাংলাদেশের চেয়ারম্যান। যুক্তরাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর ম্যানচেস্টারে ইকবাল আহমেদ প্রতিষ্ঠিত সিমার্ক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সিমার্ক পিএলসি বিশ্বের ৬০টি দেশে সিফুড ও ফ্রোজেন ফুড রপ্তানি করে থাকে। এছাড়া যুক্তরাজ্যে ইবকো, রেস্টুরেন্ট হোলসেল এবং ভারমিলিয়ন নামের থাই রেস্টুরেন্টও পরিচালনা করে থাকে এই সিমার্ক গ্রুপ। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রপ্তানিতে যুক্তরাজ্যের উত্তর পশ্চিমাঞ্চল এলাকার ব্যবসায়ীদের বছরে গড় আয় ৩০ বিলিয়ন পাউন্ড। এর আগে সিমার্ক পিএলসি ১৯৯৮ সালে কুইনস অ্যাওয়ার্ড এবং ১৯৯৯ সালে এনঅ্যাগোরাল বিজনেস ইন ইউরোপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করে। সিমার্ক পিএলসি রপ্তানি ছাড়াও যুক্তরাজ্যের শীর্ষস্থানীয় সিফুড আমদানিকারক। আমদানি করা ব্ল্যাক টাইগার চিংড়িসহ নানা ধরনের চিংড়ি, বিভিন্ন ধরনের মাছ এবং ফ্রোজেন খাবার আবার প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। ইকবাল আহমেদ বলেন, যুক্তরাজ্য থেকে আমাদের কোম্পানি যেসব সি-ফুড ও চিংড়ি বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে এর অধিকাংশই বাংলাদেশ থেকে আসে এবং এখানেই প্রক্রিয়াজাত হয়। সিমার্ক গ্রুপ সিমার্ক বাংলাদেশ নামে দেশে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করার পর রপ্তানি খাতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেও সম্মাননা পেয়েছে। দেশে বিদেশে সিমার্ক গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রায় সাড়ে চারহাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে। এছাড়া ইকবাল আহমেদ ইকবাল ব্রাদার্স ফাউন্ডেশন নামে একটি দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে নিজগ্রাম বুরুঙ্গায় একটি হাইস্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button