বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত

কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের আপত্তি সত্ত্বেও জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচসিআর) সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বিভিন্ন অঞ্চলের মোট ১৮টি শূন্য আসনে সদস্য পদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পাঁচটি আসনের সদস্য নির্বাচিত করা হয়।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭৮ ভোট পেয়ে সদস্য নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ। মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হয়ে ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দায়িত্ব পালন করবে।

এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময় বাংলাদেশ তিনবার (২০০৯-১২, ২০১৫-১৭ এবং ২০১৯-২১) এ সদস্য পদে বিজয়ী হল। বাসস এ তথ্য জানিয়েছে।পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এশিয়া-প্যাসিফিক ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ ১৮৮ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছে ভারত। বাকিরা হলো- বাহরাইন, ফিজি ও ফিলিপাইন। বিজয়ী দেশগুলো ১ জানুয়ারি থেকে তিন বছরের (২০১৯-২০২১) জন্য দায়িত্ব পালন করবে।

এদিকে, ভোটের আগের সন্ধ্যায় তিনটি মানবাধিকার গ্রুপ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ১৮টি সদস্য দেশকে নিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়। ওই বিবৃতিতে এসব দেশগুলোর মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে বিশ্লেষণ হাজির করা হয়। বিবৃতিতে বাংলাদেশসহ ছয়টি দেশ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের যে প্রস্তাবের মাধ্যমে মানবাধিকার কাউন্সিল গঠিত তার মানদণ্ড পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়। ব্যর্থ হওয়া অন্য পাঁচটি দেশ হলো বাহরাইন, ক্যামেরুন, ইরিত্রিয়া, ফিলিপাইন ও সোমালিয়া। এই ক্যাটাগরিতে ভারত, বুরকিনা ফাসো, ফিজি এবং টোগোকে রাখা হয় ‘প্রশ্নবোধক’ তালিকায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উল্লিখিত দেশগুলোর মানবাধিকার রেকর্ড সমস্যাগ্রস্ত। বিবৃতিতে মাত্র আটটি দেশকে কাউন্সিলের সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়। দেশগুলো হচ্ছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, বাহমা, বুলগেরিয়া, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, ইতালি এবং উরুগুয়ে।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে অযোগ্য ছয়টি দেশকে ভোট না দেয়ার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন, বিনা বিচারে আটক, সরকারি বাহিনীর মাধ্যমে গুম এবং মতপ্রকাশ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা দেয়ার কারণে বাংলাদেশকে এই অযোগ্য তালিকায় রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ নির্বাচিত হওয়ার ফলে কাউন্সিলের বিশ্বাসযোগ্যতা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

বিবৃতি প্রদানকারী মানবাধিকার সংগঠন তিনটি হচ্ছে ইউএন ওয়াচ, হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এবং রাউল ওয়ালেনবার্গ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস।

২০০৬ সালের সাধারণ অধিবেশনে ৫টি অঞ্চলের ৪৭ সদস্য নিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ গঠন করা হয়। এর মধ্যে আফ্রিকা অঞ্চলের ১৩, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের ১৩, পূর্ব ইউরোপের ৬, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয়ান রাষ্ট্রসমূহের ৮ এবং পশ্চিম ইউরোপ ও অন্যান্য অঞ্চল মিলে ৭ সদস্য পদ রয়েছে।

জেনেভাভিত্তিক এই সংস্থার সদস্যপদ লাভের মাধ্যমে মানবাধিকারের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলল বলে মনে করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button