আবারও পতনের কবলে শেয়ারবাজার

এখনও আতঙ্ক তাড়া করছে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারিদের। এতে করে বড় ধরনের পতনের কবলে দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল রোববার সপ্তাহের প্রথম দিনে উভয় বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় ৮০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হয়েছে। এর মধ্যে ৪ শতাংশেরও বেশি দর কমেছে ১৭ শতাংশ কোম্পানির। পতনের ধারা অব্যাহত থাকাতে আতষ্কে বিনিয়োগকারিরা।
ব্যাপকহারে কোম্পানিগুলোর দর কমে যাওয়ায় দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসই ব্রড ইনডেক্সের (ডিএসইএক্স) পতন হয়েছে ৬৮ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। দর পতনের এ হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ফলে দিনশেষে সূচক গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬০৮ দশমিক শূন্য ৩ পয়েন্টে। গত সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে এটিই সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে গত ৯ জুলাই সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান ছিল ৪৫৯৯ পয়েন্টে।
এর আগে গত সপ্তাহের প্রথম ও শেষ কার্যদিবসে বড় ধরনের দরপতন হয়েছিল শেয়ারবাজারে। ফলে গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে ডিএসই সূচকের পতন হয়েছিল ১০৪ পয়েন্ট। দরপতনের সে ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহের প্রথম দিনও বড় ধরনের দরপতন হয়েছে বাজরে।
দরপতনের বিষয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, গত সপ্তাহের আতঙ্ক থেকে এখনো বের হয়ে আসতে পারেনি বাজার। আতঙ্কগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা তাদের লোকসান কমাতে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে বাজারে দর পতনের ঘটনা ঘটছে। তিনি আরও বলেন, লাফার্জ সুমরা, মবিল যমুনার মতো বড় মূলধনী কিছু কোম্পানির শেয়ারের দরপতন অব্যাহত থাকার কারণেও বাজারে তার প্রভাব পড়ছে।
লেনদেনে অংশ নেয়া ৩১৭টি ইস্যুর মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ৪৪টির, কমেছে ২৫০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির দর। এদিকে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরু হওয়া কেডিএস এক্সেসরিজের শেয়ারের দর রোববার ১৬ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে দিনশেষে ৭১ দশমিক ৩০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন শুরুর প্রথম দিনে কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছিল ৩২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ। এদিকে রোববার থেকে ডিএসই ব্রড ইনডেক্সে অন্তর্ভুক্ত হওয়া অলিম্পিক এক্সেসরিজের শেয়ারের দর ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমেছে। দিনের শুরুতে এ কোম্পানির শেয়ারের দর ছিল ৪৬ দশমিক ৩ টাকা। দিনশেষে তা কমে হয়েছে ৪২ দশমিক ৭০ টাকা।
এদিকে দরপতনের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বৃহস্পতিবার ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেও রোববার তা ফের ৩০০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৩১০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। বৃহস্পতিবারের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট। দিনশেষে কোম্পানিটির ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিএসআরএম স্টিলের লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। ১১ কোটি ৪৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সাইফ পাওয়ারটেক।
লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে কেডিএস এক্সেসরিজ, বেক্সিমকো ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, বিএসআরএম লিমিটেড, গ্রামীণফোন, ইউনাইটেড এয়ার, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল।
দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএসসিএক্স ১৪৩ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ৮৫৬৭ দশমিক ৯৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৯৩ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৩টির, কমেছে ১৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির দর।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button