‘বোগাসকে বোগাসই বলতে হবে, রাবিশকে রাবিশ’

Malআবুল মাল আবদুল মুহিত। আশি পেরিয়ে যাওয়া বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ও সাবেক আমলা দ্বিতীয়বারের মতো অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন রোববার। আশির’ দশকে তিনি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনকালেও একবার অর্থমন্ত্রী ছিলেন। তার প্রিয় (?) শব্দের মধ্যে দুটি শব্দ গণমাধ্যমের কল্যাণে বেশ আলোচিত। এর একটি হচ্ছে ‘বোগাস’ এবং অন্যটি ‘রাবিশ’। হরহামেশাই এ শব্দ দুটি আউরিয়ে তিনি বেশ আলোচিত ও সমালোচিতও হয়েছেন। সোমবারও তিনি বললেন, ‘রাবিশকে রাবিশই’ বলতে হবে এবং বোগাসকে বোগাস।
অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর সোমবার সকালে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাকালে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রণালয়ের নতুন প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানও এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।
নিজের বয়সের কথা উল্লেখ করে মুহিত বললেন, বয়স হলেও গত পাঁচ বছর আনন্দের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি, যদিও রাবিশ ও বোগাস বলা নিয়ে বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় থেকে অনেক সমালোচনা এসেছে। তার বক্তব্য শুনে ইআরডি হলরুমে উপস্থিত কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের কর্মীরা হাসি ঠেকিয়ে রাখতে পারেননি। বেশ মজাই পেয়েছেন এ কথাই।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে মুহিত বলে চলেন, রাবিশকে রাবিশই বলতে হবে; বোগাসকে বোগাসই বলতে হবে।
দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মুহিত বলেন, আমি জীবনে দুটি চাকরি ছাড়া আর কোনো চাকরির মেয়াদ পূর্ণ করতে পারিনি। হয় বিতাড়িত হয়েছি, না হয় বিতাড়ন গ্রহণ করেছি, অথবা পদত্যাগ করে চলে এসেছি।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের এই সদস্য জানান, আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের একটি চাকরির আড়াই বছরের পুরো মেয়াদ তিনি পূর্ণ করেছিলেন। আর এবার গত সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছরের পুরো মেয়াদ তিনি দায়িত্ব পালন করলেন।
গত সরকারের শেষ দিকে মুহিতই বলেছিলেন, স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনায় তিনি আর মন্ত্রী হতে চান না। এরপরও এ দায়িত্বে আসার কারণও তিনি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, আমি তাকে (প্রধানমন্ত্রী) বললাম, বয়েস টয়েস হয়েছে, কিছু সমস্যা তো হয়। কাজের চাপে বিশ্রাম- টিশ্রাম হয় না। তারপরও গত পাঁচ বছর আনন্দের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি।
‘উনি বললেন, সেটা আপনার ওপর নির্ভর করছে। আমার মনে হয়, যতদিন খারাপ না লাগে ততোদিন কনটিনিউ করা যায়।’ এবার নিজের কাজে সহায়তার জন্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি পেয়েছেন আরেক সাবেক আমলা এম এ মান্নানকে।
এ প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানে মুহিত বলেন, শনিবার রাত ৮টার দিকে আমি মতিয়া চৌধুরীকে ফোন করি। মতিয়া আমাকে বললো, সে তখনো কোনো খবর পায়নি। এরপর আমি মোশাররাফকে (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) ফোন করলাম।
মোশাররাফ বললো, মতিয়া চৌধুরীকে সে সকাল থেকে খুঁজছে, কিন্তু ফোনে পাচ্ছে না। আমি বললাম, আমার কাছে একটা নম্বর আছে চেষ্টা করে দেখো। এরপর মোশাররাফ বললো, আমি মান্নান সাহেবকেও পাচ্ছি না।
‘আমি তখন বললাম, কোন মান্নান? মোশাররাফ আমাকে বললো, সুনামগঞ্জের মান্নান। তাকে আপনার ডেপুটি করা হয়েছে। আমি তখন বললাম, তোমাকে মান্নানের ফোন নাম্বার দেয়ার আগে আমি মান্নানকে ফোন করে জানাই। এরপর মান্নানকে ফোন করলাম।’
বেশ কয়েকবছর আগে জেনেভায় মান্নানের সঙ্গে পরিচয় হয় মুহিতের। মান্নান তখন সেখানে বাংলাদেশ মিশনের ইকনোমিক মিনিস্টার ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উল্লম্ফনের এ সময় মাতৃভূমিকে আরো উচ্চপর্যায়ে নিয়ে যওয়ার জন্য আপনাদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হলো।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button