লন্ডনে কামারুজ্জামানের গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত

Qamaruzzaman Janazaবাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারি সেক্রেটারী জেনারেল, ইসলামী চিন্তাবিদ, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানকে হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংগঠন সেভ বাংলাদেশ ইউকে। নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য অবৈধ আওয়ামীলীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কামারুজ্জামানকে হত্যা করেছে। সংগঠনের উদ্যোগে রোববার বাদ জোহর পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে অনুষ্ঠিত গায়েবানা জানাযায় নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। কমিউনিটির বিভিন্নস্থরের মানুষ উপস্থিতিতে গায়েবানা জানাযায় ইমামতি করেন শায়েখ মওদুদ হাসান।
সেভ বাংলাদেশ ইউকের চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা বদরে আলম দিদারের পরিচালনায় এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক, জমিয়তে উলামা ইউরোপের সভাপতি  মুফতি শাহ সদরুদ্দিন, সেভ বাংলাদেশ ইউকের কো-অর্ডিনেটর ব্যারিষ্টার আবু বক্কর মোল্লা, সিটিজিনে মুভমেন্ট ইউকের আহ্বায়ক এম এ মালেক, খেলাফত মজলিস ইউকের আমির অধ্যাপক আব্দুর কাদির সালেহ, কমিউনিটি নেতা আবুল হাসনাত চৌধুরী প্রমূখ।
জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জাতিসংঘ, ইইউ, এ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সমগ্র বিশ্বের আপত্তির পর মিথ্যা অভিযোগে ও প্রহসনের বিচারের মাধ্যমে কামারুজ্জামানকে ফাঁসি দিয়েছে সরকার। অন্যায় অবিচারের কাছে মাথা নত না করে আর রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করে তিনি তার শক্ত ঈমানের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রক্ত বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিকট অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। মহান আল্ল্হা তার শাহাদাত কবুল করুন।
সভাপতির বক্তব্যে সেভ বাংলাদেশ ইউকের চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর একজন ছাত্রকে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার যে ব্যবস্থা আওয়ামী সরকার করেছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, জনগণের প্রিয় নেতা মুহাম্মাদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে করে সরকার দলীয় লোকদের দিয়ে সাক্ষ্য প্রদান করায়। সাক্ষীদের পরস্পরবিরোধী ও অসঙ্গতিপূর্ণ বক্তব্য থেকে তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বিষয়টি বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীর নিকট উন্মোচিত হয়েছে। চক্রান্তমূলক ও বিভৎস এই হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যারিষ্টার নজরুল ইসলাম বলেন, মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রক্ত বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিবে ইনশাল্লাাহ। যারা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হত্যা করেছে ইতিহাস কখনো তাদেরকে ক্ষমা করবে না। এই জালেম সরকারকে পরিকল্পিত এ হত্যাকান্ডের জন্য জনতার আদালতে একদিন জবাবদিহি করতে হবে।
জামায়াতে ইসলাম ইউরোপের কো-অর্ডিনেটর ব্যারিষ্টার আবু বক্কর মোল্লা বলেন, যে সোহাগপুরের কথিত ঘটনার অভিযোগে কামারুজ্জামানকে ফাঁসি কার্যকরের নামে হত্যা করা হলো তার সাথে কামারুজামানের কোন সম্পর্ক নেই। তিনি জীবনে কোনদিনও সোহাগপুর যাননি। ওই এলাকায় কোনদিন তাকে দেখেছে এ ধরনের কথা কেউ বলতে পারবে না। সরকার পরিকল্পিতভাবে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে বিচারের নামে প্রহসনের করেছে। কামারুজ্জামানের শহীদি মৃত্যুতে ইসলামের পক্ষে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষে নেতৃত্ব দিবে উল্লেখ করে ব্যারিষ্টার আবু বক্কর মোল্লা বলেন, ইনশাল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের আদালতে কামারুজ্জামানকে অন্যায়ভাবে হত্যার বিচার একদিন অবশ্যই হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে যার বয়স কুড়িও পেরোয়নি, তাকে নানান কিসসা সাজিয়ে হত্যা করেছে সরকার। এদের রুখে না  দাঁড়ালে  ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সামনের দিনে আরো হাজারো নিরপরাধ মানুষকে অবিচারের মাধ্যমে হত্যা করবে। বক্তারা কামারুজ্জামানকে নন্দিত আর বর্তমান সরকারকে ধিকৃত মন্তব্য করে বলেন,  কামারুজ্জামান ছিলেন গণমানুষের প্রিয় নেতা। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম হয়ে থাকবেন। ইসলামের সেবায় ও গণতন্ত্রের পক্ষে কামারুজ্জামানের ভূমিকাই তাঁকে ফ্যাসিবাদী সরকারের শত্রুতে পরিণত করেছিলো। কামারুজ্জামানকে অন্যায়ভাবে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে সরকার সারাদেশের ইসলামপ্রেমী ও গণতন্ত্রকামী মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button