নাগাল্যান্ডে ধর্ষণের নাটক ফাঁস : নিহত যুবক মুসলমান

Nagalandভারতের নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে জেল ভেঙে কথিত ‘ধর্ষক’কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দেশটিতে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। ধর্ষণের ওই ঘটনাটি ছিল আসলে সাজানো। নাগাল্যান্ডে বাঙালিদের উচ্ছেদে স্থানীয় আদিবাসী নাগাদের পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে আসামের বাঙালি মুসলিম যুবক সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন খানকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আসামের দুই জেলায় অবরোধ ডাকা হয়েছে। বিভিন্ন মুসলিম-অমুসলিম সংগঠন এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
আসামের প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক যুগশঙ্খের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর প্রচুর বাঙালি ব্যবসায়ী রয়েছে। এসব বাঙালি ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের জন্য স্থানীয় নাগারা দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এ ঘটনা তাদেরই একটি অংশ। ধর্ষণের ঘটনা ও ‘বাংলাদেশী’ নাগরিকের অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণ সাজানো।
আসামের বাংলা পত্রিকা সাময়িক প্রসঙ্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে মেয়েটিকে ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডিমাপুরে মধ্যযুগীয় ঘটনা ঘটেছে তা যে পুরোপুরি ষড়যন্ত্রমূলক তা ফাঁস হয়ে গেছে। মেডিকেল রিপোর্টে মেয়েটি আদৌ ধর্ষিতা হয়নি বলে জানানো হয়েছে। ডিমাপুরের হাসপাতালের ডাক্তারি পরীক্ষার পর অভিযোগের যথার্থতা প্রমাণিত হয়নি।
এদিকে আসাম রাজ্য সরকারের মন্ত্রী রকিবুল হাসান নাগাল্যান্ডে রাষ্ট্রপতি শাষনের দাবি জানিয়ে বলেছেন, এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনায় প্রমাণ হয় নাগাল্যান্ডে জঙ্গিরা বসবাস করছে। সেখানে আইনের শাষণ নেই। যেখানে প্রশাসনের মদতে একজন কয়েদীকে জেল ভেঙে বাইরে নিয়ে হত্যা করা হয়, সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
আসাম রাজ্যসভার বিধায়ক জামাল উদ্দিন বলেছেন, ফরিদ উদ্দিন একজন ভারতীয় হয়েও তাকে ‘বাংলাদেশি’ অভিযোগ ও ‘ধর্ষণে’র মামলা সাজিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। এটি সভ্য সমাজে মেনে নেয়া যায় না।
বাঙালি যুবক সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন খানের (২৭) বাড়ি আসামের বদরপুরে। তার বাবা সিরাজউদ্দিন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দু’জন ভারতীয় সেনা বাহিনীতে চাকরি করেন। বাকিরা ব্যবসা করেন। ঘটনার সময় ফরিদের ছোট ভাই সুবের উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রাণের ভয়ে আসামের বাড়িতে ফিরে যান।
তিনি জানান, ফরিদ কিছুদিন আগে এক নাগা যুবতীকে বিয়ে করে। কিন্তু যে নাগা যুবতীটি ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছে সে সম্পর্কে ফরিদের শ্যালিকা। ফরিদ মারুতি গাড়ির ডিলার। তার ব্যবসাও ভালো। তাই তার শ্যালিকা তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করে। ফরিদ অস্বীকৃতি জানালে নাগা যুবতী তাকে ধর্ষণের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয়। এতেও সে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটি থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করে। এরপর পুলিশ ফরিদকে আটক করে।
উল্লেখ্য, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর সেন্ট্রাল জেল ভেঙে বাইরে এনে বৃহস্পতিবার কয়েক হাজার স্থানীয় নাগা আদিবাসীরা কথিত ‘ধর্ষণ’ ও ‘বাংলাদেশি’ অভিযোগে সৈয়দ ফরিদ উদ্দিন খান (২৭) নামে এক বাঙালি মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে। -জি নিউজ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button