ফ্রান্সে অভিবাসী ছাত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে শত শত শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ

ফ্রান্স থেকে ১৫ বছর বয়সী এক অভিবাসী স্কুলছাত্রীকে বাস থেকে নামিয়ে কসোভোতে বহিষ্কার করা হয়েছে। ফ্রান্সে অভিবাসন প্রশ্নে যে বেদনাদায়ক বিতর্ক চলছে, তার সর্বশেষ দৃষ্টান্ত এ ঘটনা। এ ঘটনায় নিজ দল সমাজবাদী আইনপ্রণেতারাও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভেলের তীব্র সমালোচনা করেছেন। এ বহিষ্কারের প্রতিবাদে ফ্রান্সে শত শত শিক্ষার্থী প্যারিস অঞ্চলের উচ্চমাধ্যমিক স্কুলগুলো ঘেরাও করে এবং রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সরকার যখন অভিবাসন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভেলের অভিযোগ লঘুকরণের চেষ্টা করছে, তখন এই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটল। সরকার কসোভোর বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী লিওনার্দো দিবারনির বিষয়টি পর্যলোচনা করার অঙ্গীকার করেছে।
দিবারনির পরিবার ২০০৯ সালে অবৈধভাবে ফ্রান্সে প্রবেশ করে। তার পরিবার বহিষ্কারের বিরুদ্ধে আপিল করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফ্রান্সের ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় মন্ত্রী ম্যানুয়েল ভেলকে অনেক সমাজবাদী আইনপ্রণেতা অভিবাসন প্রশ্নে কঠোর নীতি অবলম্বন করে বামপন্থী আদর্শের সাথে প্রতারণা করার জন্য দায়ী করেছেন। তার এই নীতির কারণেই কাস থেকে যাওয়ার সময় এই ছাত্রীকে গ্রেফতার করে কসোভোয় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের পৌর ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচনকে সামনে রেখে চরম ডানপন্থী অভিবাসনবিরোধী ন্যাশনাল ফ্রন্টের জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলে জনমত জরিপে দেখা যাওয়ার পর ভেল রোমা অভিবাসীদের বিরোধী বক্তব্য জোরদার করেছেন। রোমারা ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে অবৈধভাবে শিবির স্থাপন করে বসবাস করছে। সরকারের মুখপাত্র নাজাত ভ্যালাউড বেলকাসেম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সমর্থন করে তার পদত্যাগের দাবি জানানোর সমালোচনা করেন। তিনি ঘটনাটির তদন্ত চলার সময়ে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বাসভর্তি সহপাঠীদের সামনে কোনো ছাত্রীকে ধরে নিয়ে বহিষ্কারের ঘটনা সত্যিই বেদনাদায়ক। তবে আসলে কী ঘটেছিল তা স্পষ্ট নয়। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলযোগ তার এ বক্তব্যে দূর হওয়ার নয়। তাকে ও অন্য এক ঘটনায় আরেক বালককে বহিষ্কারের প্রতিবাদে শত শত ছাত্রছাত্রী প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে মিছিল করে ও অন্যরা প্রায় ২০টি স্কুল অবরোধ করে স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ করে। দিবারনি কসোভোয় সরকারের দেয়া একটি ফ্যাটে বাস করছে। সে জানায়, কসোভোর সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই। সে আলবেনীয় ভাষাও জানে না। সে বলেছে, ‘ফ্রান্সই আমার দেশ। সেখানে আমার বন্ধু, শিক্ষকসহ সব কিছুই রয়েছে। আমি ফ্রান্সে আমার বাড়িতে ফিরতে চাই।’ দিবারনি ইতালিতে জন্মগ্রহণ করে। সে তার কসোভান বাবার সাথে ফ্রান্সে আসে এবং রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে। তার বাবা রেসহাত বলেন, দিবারনি রোমা বংশোদ্ভূত হওয়ায় ফ্রান্স সরকার তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে অস্বীকার করে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button