ড্রোন নিষিদ্ধের পথে ইউরোপ

Dronযুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাবের পক্ষে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে এক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য রাষ্ট্রগুলো কখনোই ড্রোন হামলার মতো বেআইনি হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করবে না এবং এরকম হত্যাকাণ্ডে অন্য রাষ্ট্রকে সহায়তা করবে না- ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে এমন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে রেকর্ড ৫৩৪টি। আর বিপক্ষে পড়েছে মাত্র ৪৯টি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত ড্রোন হামলায় ইয়েমেন এবং পাকিস্তানে এ যাবত কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। জঙ্গিদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয় বলে দাবি করা হলেও নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নিরীহ মানুষ। বৃহস্পতিবার ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে এধরনের হামলার বিরোধিতা এবং এই বিচারবহির্ভুত হত্যা নিষিদ্ধ করার পক্ষে রেকর্ড সংখ্যক ভোট পড়েছে।
গ্রিন এমইপি (মেম্বার অব ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট) এবং পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক সাব-কমিটির চেয়ারম্যান বারবারা লোচবিলার বলেন, ‘সামরিক ড্রোন ব্যবহার এবং এর ফলে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় পার্লামেন্ট আজ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ঘোষিত যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে এভাবে টার্গেট করে আকাশ থেকে হামলা চালিয়ে হত্যা করার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন ইইউ পার্লামেন্টের সদস্যরা। এছাড়া যুদ্ধকালীন আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর বাইরে গিয়ে সশস্ত্র ড্রোন ব্যবহারেরও বিরুদ্ধে তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘ড্রোনের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারে যে আইনি, নৈতিক এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলো সামনে আসছে ইইউ’র সেগুলো বিবেচনায় নেয়ার সময় এসেছে। এছাড়া এ ব্যাপারে এখনই স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।’
যুক্তরাষ্ট্র বা এর মতো অন্য দেশের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করাসহ নানাভাবে এধরনের বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করা থেকে ইইউ সদস্যভুক্ত দেশগুলোকে বিরত থাকার ব্যাপারেও ওই প্রস্তাবে জোর দেয়া হয়েছে।
এ প্রস্তাবের ফলে এখন যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি চাপের মুখে পড়বে। কারণ তারা জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন অভিযানে নানাভাবে সহযোগিতা করে। তাদের সহযোগিতার রূপটা এবার প্রকাশ করতে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে।
এ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট সদস্যদের সংগঠন গ্রিন গ্রুপ। এ গ্রুপে সব দেশের ও দলের সদস্য রয়েছেন। তারা মনে করেন, যথাযথ অনুমতি ছাড়া কোনো দেশের সীমানায় ড্রোন হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইন এবং ওই দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। এছাড়া এসব অভিযানে হাজার হাজার বেসামরিক হতাহত হয়েছেন। স্বচ্ছতা এবং তদন্তে নানা বাধার কারণে এসব হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিরূপণও কঠিন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button