বিক্ষিপ্ত ভাংচুরের মধ্য দিয়ে সিলেটে হরতাল পালিত

বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই জামায়াত-শিবির ও গণজাগরণ মঞ্চের ডাকা সকাল সন্ধা হরতাল গতকাল মঙ্গলবার পালিত হয়েছে। সকালে ও দুপুরে নগরীর কয়েকটি স্থানে ঝটিকা মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াত শিবির। এসময় তারা ১০/১৫টি গাড়ি ভাংচুর করে এবং রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। এদিকে, সকাল ১০ টা থেকে হরতালে সমর্থনে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হতে থাকে গণজাগরণ মঞ্চেরকর্মীরা । পরে তারা শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করে এবং সমাবেশ করে। তবে নগরীতে দিনভর জামায়াত শিবিরের দাপট পরিলক্ষিত হয়। জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ট্রাইব্যুনালের দেয়া ৯০ বছরের সাজার আদেশ প্রত্যাখান করে সারাদেশে জামায়াত দ্বিতীয় দিনের মত গতকাল সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। পাশাপাশি গণজাগরণ মঞ্চও এই রায়কে প্রত্যাখান করে মৃত্যুদন্ডের দাবীতে সারা দেশে সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৯টার পর নগরীর ওসমানী মেডিকেল রোড, মদিনা মার্কেট, পাঠানটুলা ও আম্বরখানা এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে জামায়াত শিবির। মিছিলকারীরা প্রথমে ওসমানী মেডিকেল রোডে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে তারা মদিনা মার্কেট ও পাঠানটুলা এলাকায় একটি পিকআপ ভ্যান, আটোরিক্সা সহ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। বেলা দেড়টায় নয়াসড়ক পয়েন্ট থেকে মোটর সাইকেল যোগে জামায়াত শিবিরের অপর একটি ঝটিকা মিছিল বের হয়। এসময় পিকেটাররা নয়াসড়ক কুমার পাড়া, মীরা বাজার শিবগঞ্জ পয়েন্টে বিভিন্ন যানবাহনে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। তারা নয়াসড়ক পয়েন্টে একটি মাইক্রোবাস, নাইওরপুল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের অফিসের সামনে একটি কার সহ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। ভাংচুর করলেও তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির কারণে হরতাল চলাকালে বড় ধরনের কোন গোলযোগ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এদিকে হরতালের সমর্থনে সকাল ১০টা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে জড়ো হয় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় শহীদ মিনার থেকে আম্বরখানা হয়ে কোর্ট পয়েন্টে মিছিল নিয়ে যায় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। পরে কোর্ট পয়েন্ট থেকে আবার শহীদ মিনারে আসে। পরে বেলা ১টায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে সমাবেশ করে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক প্রণব জ্যোতি পালের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু, রজত কান্তি গুপ্ত, জয়দীপ সরকার, মতিউর রহমান, পাপলু বাঙ্গালী প্রমুখ। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যা সহ বিভিন্ন অপরাধে গোলাম আযমের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ মদদ রয়েছে। এসব অপরাধে গোলাম আযমের মৃত্যুদন্ড হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু যে রায় দেয়া হয়েছে এটা প্রহসনের রায়। বক্তারা মানবতা বিরোধি অপরাধে গোলাম আযমের মৃত্যু দন্ড দাবী করেন। গতকাল হরতাল চলাকালে নগরী ঘুরে দেখা যায়, হরতালে যেকোন ধরনের নাশকতা ঠেকাতে নগরীর গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। পাশাপাশি রয়েছে র্যা ব ও বিজিবির টহল। সকাল থেকে নগরীতে স্বল্প সংখ্যাক সিএনজি অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করলেও ভারী যানবাহন চলেনি। সিলেট থেকে ছেড়ে যায়নি দুরপাল্লার কোন বাস। তবে যথাসময়ে ট্রেন ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সিলেট রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মুহিবুর রহমান । কোতোয়ালী থানার ওসি নাসির উদ্দিন জানান, গতকাল হরতাল চলা কালে কোন গ্রেফতার নেই। হরতালে কোন বড় ধরনের ঘটনাও ঘটেনি। শান্তিপুর্নভাবে হরতাল পালিত হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button