প্রাথমিক সমাপনী-ইবতেদায়ী পরীক্ষা বাতিল

এ বছর পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ইবতেদায়ী পরীক্ষা হচ্ছে না। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এমন প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন।
গত মঙ্গলবার সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও ইবতেদায়ী পরীক্ষা বাতিলে সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠানো হয়। এতে এই দুই পরীক্ষার পরিবর্তে স্কুল ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষা বাতিল করা হলে এ বছরের জন্য মেধাবৃত্তিও না দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে সেটি আজ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

পিইসি ও ইবতেদায়ী পরীক্ষা এ বছরের জন্য বাতিল করে সময় থাকলে স্কুলে ও মাদ্রাসায় বার্ষিক পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। তিনি গত মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেছিলেন, প্রস্তাব অনুমোদন পেলে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে সম্ভব হলে স্কুলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস ও বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হবে। আমরা অটো পাস না দেয়ার চিন্তাই করছি।
উল্লেখ্য, মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রস্তাবে মন্ত্রণালয় বলেছে, ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকায় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৭১টি কর্মদিবস নষ্ট হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীদের ৪০৬টি বিষয়ভিত্তিক পাঠদান ক্ষতিগ্রস্ত। ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত সিলেবাসের মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পড়ানো সম্ভব হয়েছে। পাঠ্যবইয়ের অবশিষ্ট অংশ শেষ করতে কমপক্ষে ৫০ কর্মদিবস দরকার। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে পাঠদান কার্যক্রম চালানো সম্ভব হলেও ৫০ কর্মদিবস পাওয়া যাবে না।
এতে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাসের বিদ্যমান প্রাদুর্ভাবে সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব হবে কিনা সে সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি। খুলে দেয়া হলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে নাও পাঠাতে পারেন। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর ভাইরাস পরিস্থিতিতে পুনরায় বন্ধ করে দিতে হয়েছে। অন্যদিকে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর টেলিভিশনে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাত্র ৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী টেলিভিশন পাঠদানের সুযোগটি গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি বেতারে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে ৯৭ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাঠদানের আওতায় আসতে পারে। এছাড়া ৭৬ শতাংশ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে লেখাপড়ার বিষয়ে কথা বলতে পেরেছে।
এদিকে স্কুল-কলেজে আরও ছুটি বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় বর্তমান ছুটি শেষে এটি আরও বাড়ানো হতে পারে। নতুন করে আরও ১৫ দিন ছুটি বাড়ানো হতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button