কুরআনের ভাষা মুসলিমদের জন্য বিদেশি নয়

আল্লাহ, কুরআন, দীন, সালাত, ঈমান, ইবাদত, সিয়াম, হজ এ শব্দগুলো পৃথিবীর কোনও ভাষায়ই সঠিকভাবে অনুবাদযোগ্য নয়

কুরআন আরবি ভাষায় নাযিল হয়েছে। আর কুরআন শিক্ষা মুসলিমদের জন্য ফরজ অর্থাৎ অত্যাবশ্যক। এর এমন কিছু শব্দ রয়েছে, যেগুলোর অনুবাদ কোনও ভাষাতেই যথাযথভাবে হয় না। কয়েকটির উদাহরণ দেয়া যায়। যেমন: আল্লাহ, কুরআন, দীন, সালাত, ঈমান, ইবাদত, সিয়াম, হজ। এ শব্দগুলো পৃথিবীর কোনও ভাষায়ই সঠিকভাবে অনুবাদযোগ্য নয়। এমন আরও অনেক শব্দ আছে। বরং অনুবাদের চেষ্টা করলে তা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। সৃষ্টি হতে পারে গুরুতর ফিতনারও। কাজেই কুরআনের মৌলিক শব্দগুলো অক্ষুণ্ণ রাখবার চেষ্টা করা সচেতন মুসলিমদের ঈমানি দায়িত্ব বলে গণ্য করা যেতে পারে।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, অন্যান্য ভাষার মতো কুরআনের ভাষা আরবিকেও ‘বিদেশি ভাষা’ আখ্যা দিয়ে একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে তা বর্জনের আয়োজন করছে। এ মহলটি আল্লাহ, দীন, ঈমান, সালাত, সিয়াম ইত্যাদি কুরআনের মৌলিক শব্দসমূহ পরিবর্তন করে স্রষ্টা বা সৃষ্টিকর্তা, ধর্ম, বিশ্বাস, নামায, রোযা প্রভৃতি শব্দমালা প্রতিস্থাপন করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ কুরআনের উল্লিখিত মৌলিক শব্দমালা বুঝতে বা অনুধাবন করতে কোনও মুসলিমেরই সমস্যা হয় না। এমনকি নিরক্ষর হলেও অসুবিধে হলেও না। তাহলে আল্লাহকে স্রষ্টা, সৃষ্টিকর্তা বা প্রভু ; দীনকে ধর্ম, ঈমানকে বিশ্বাস, সালাতকে নামায, সিয়ামকে রোযা বা উপবাস বানানোর কসরত কেন? আসলে এসবই উদ্দেশ্যমূলক। মুসলিমদের কীভাবে মৌলিকতা তথা দীনের মূল থেকে দূরে সরানো যায়, তারই আয়োজন ব্যতীত কিচ্ছু নয়। এমন ভয়ঙ্কর এবং সুদূরপ্রদারী ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ে অনেক আলেমও নির্দ্বিধায় আল্লাহকে স্রষ্টা বা সৃষ্টিকর্তা, দীনকে ধর্ম, সালাতকে নামায বা উপাসনা, রোযাকে উপবাস বলতে শুরু করেছেন। এ প্রবণতা যে কতটা আত্মবিনাশী তা উপলব্ধি করতেও যেন অক্ষম তাঁরা। কাজেই এমন সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসবার চেষ্টা করা মুসলিমদের জন্য খুব জরুরি।
কুরআন পৃথিবীর সব মানুষের সার্বিক কল্যাণে অবতীর্ণ হলেও এটা মনে রাখা প্রয়োজন যে, এর ভাষা আরবি মুসলিমদের আধ্যাত্মিক ভাষা। ইবাদতের ভাষা। কাজেই কুরআনের ভাষা বিকৃত করবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মুসলিমদের প্রকৃত বন্ধু নন। আর আরবি ভাষা মুসলিমদের কাছে বিদেশিও নয়। কুরআনের ভাষা তাঁদের অনিবার্য সংস্কৃতির অংশ। এ ভাষা থেকে তাঁদের বিচ্ছিন্ন করবার প্রয়াস একটি সুগভীর ষড়যন্ত্র।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button