ব্রিটেনে ইমার্জেন্সি করোনাভাইরাস বিল: মৃতদেহের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয়

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় মৃতদেহ সৎকারের ক্ষেত্রে মানুষের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। লাশের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কবরের জায়গা সংকট দেখা দেবে। তাই জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে করোনায় মৃতদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হবে- এমন একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

মুসলিম এনগেইজমেন্ট অ্যান্ড ডেভোলাপমেন্ট (মেন্ড) নামে সংস্থাটি তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, ‘ইমার্জেন্সি করোনাভাইরাস বিল ২০১৯-২১’ নামে একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করেছে সরকার। এই বিলের খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। এরইমধ্যে বিলটি নিয়ে সংসদে এক দফা আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৩ মার্চ সোমবার তা পাসের লক্ষ্যে আবারো পার্লামেন্টে তোলা হবে।
বিলটি পাস হলে বর্তমানে ব্রিটেনের বহু ধর্মের মানুষের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার যে অধিকার রয়েছে তা খর্ব হবে। স্থানীয় কাউন্সিলের ইচ্ছা অনুযায়ী দাফন করা হবে। কাউন্সিল চাইলে ধর্মমতে দাফনের অনুমতি দিতে পারে, নতুবা মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে পারবে।
বর্তমান ‘পাবলিক হেলথ ১৯৮৪ ধারা ৪৪ (৩)’ আইনে মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তাদের নিজ নিজ ধর্মমতে লাশ দাফনের অধিকার দেওয়া আছে। ফলে স্থানীয় কাউন্সিল চাইলেই কারও মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে পারে না। তাই পার্লামেন্ট চাচ্ছে এই আইনকে পরিবর্তন করতে।
করোনা ভাইরাসে ব্রিটেনে এ পর্যন্ত মৃত ২৩৩ জনের মধ্যে কয়েকজন মুসলিমসহ তিনজন বাংলাদেশী মারা গেছে। এই তিন বাংলাদেশীর মধ্যে ইতোমধ্যে দু‘জনের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী। একজনের লাশ এখনো দাফনের জন্য অপেক্ষমান। গার্ডেন অব পিস ফিউনারেল সার্ভিস মুসলিমদের জানাজা ও দাফন প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন করছে।
মুসলিম এনগেইজমেন্ট অ্যান্ড ডেভোলাপমেন্ট এর ওয়েবসাইটে আরো বলা হয়েছে, হিউম্যান রাইট আইন ১৯৯৮ অনুসারে মানুষের ধর্মীয় অধিকার উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তাই মুসলমানসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় এমপিদের সোচ্চার হতে হবে। সংস্থাটি ব্রিটেনের সর্বস্তরের মুসলমানদেরকে তাদের নিজ নিজ এলাকার এমপির কাছে চিঠি লিখতে অনুরোধ জানিয়েছে। আগামী ২৩ মার্চ বিলটিতে যেন প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হয়। মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় অধিকার যাতে রক্ষা হয়।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনে সাড়ে ৬ কোটি মানুষের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যা ৩০ লাখ। মুসলমান ছাড়াও ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের লাশ দাফন করা হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button