সংস্কারপন্থিদের জয়জয়কার

জামায়াতের নবগঠিত কমিটিতে স্থান পেলেন যারা

ডা. শফিকুর রহমান জামায়াতে ইসলামীর আমীর নির্বাচিত হওয়ার পর সেক্রেটারি জেনারেল নিয়োগ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, নির্বাহী পরিষদ ও কর্মপরিষদের কমিটি গঠন সম্পন্ন করেছেন। কমিটিতে অধিকাংশই নতুন মুখ ও ৭১-এর পরবর্তী প্রজন্মের নেতা। রয়েছে সংস্কারপন্থিদের জয়জয়কার। তবে কিছু নেতার কমিটিতে স্থান পাওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। তাদের ভূমিকা নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। গত ৫ই ডিসেম্বর জামায়াতের নির্বাচিত আমীর হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন ডা. শফিকুর রহমান। সেক্রেটারি জেনারেল নিয়ে টানাপড়েন সৃষ্টি হওয়ার পর সবার পরামর্শক্রমে গত ২৬শে ডিসেম্বর সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারকে মনোনীত করেন। এরপর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি হয় কারা আসছেন অন্যান্য পদে।

দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক এমপি ও আগের কমিটির নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি এবার অভিমান নিয়ে কমিটিতে থাকতে চাচ্ছিলেন না। অভিমানের বিষয়ে জানা গেছে, তার এবার আমীর নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান যখন ১৯৮৬ সালে কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন তখন শফিকুর রহমান সিলেট জেলা আমীর হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এ ছাড়াও স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতিতে মুজিবুরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০০৯ সালের পর দলের দুর্দিনে মূল কাঠামোকে ধরে রাখা ও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল। কেন্দ্রীয় আমীর নির্বাচিত না হওয়ায় তিনি যেমন রুষ্ট তেমন রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের নেতা ও কর্মীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

এ ছাড়াও নায়েবে আমীর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অধ্যাপক তাসনীম আলম, সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, সাবেক এমপি মাওলানা শামসুল ইসলাম, সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুস সোবহান ও সাবেক এমপি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মাওলানা এটিএম মাসুম, যাকে ঘিরে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছিল সেই নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম, এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জেলে অবস্থানরত দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ৯ জন। তারা হলেন- শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আ.ন.ম আব্দুর জাহের, নুরুল ইসলাম বুলবুল, মো. সেলিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ, রফিক উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রব, ইজ্জত উল্লাহ ও শিবিরের সাবেক সভাপতি দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা থাকা সাইফুল আলম খান মিলন। মিলন ইবনে সিনার সাবেক পরিচালক ছিলেন।

কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবার সংস্কারপন্থিদের জয়জয়কার রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে দলের মধ্যে কোণঠাসা অবস্থায় ছিলেন। কিন্তু, এবার তারা কেন্দ্রীয় পদে এসেছেন। কট্টরপন্থিরা এবার কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, অধ্যাপক তাসনীম আলম, ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, মাওলানা শামসুল ইসলাম, এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, মতিউর রহমান আকন্দ, সাইফুল আলম খান মিলন ও অধ্যক্ষ সানাউল্লাহ।

সূত্র জানায়, দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কয়েকজন নেতা নির্বাচিত হওয়ায় তাদের নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। মানবতাবিরোধী অপরাধে যারা অভিযুক্ত তাদের দলে রাখতে চাচ্ছিলেন না একটা পক্ষ। কিন্তু, আমীরের হস্তক্ষেপে এটিএম আজহারুল ইসলাম, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মাওলানা আব্দুস সোবহানকে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button