ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা

নির্বাচনী জরিপে লেবার পার্টির সমর্থন ক্রমেই বাড়ছে

জনসনের সাথে করবিনের ব্যবধান কমছে

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রিটেনে হওয়া পাঁচটি নির্বাচনী জরিপের মধ্যে চারটিতেই পয়েন্টে এগিয়েছে লেবার পার্টি। এর একটি জরিপ নির্বাচনে ঝুলন্ত পর্লামেন্টের আভাস দিয়েছে। অর্থাৎ, ব্রিটেনের জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণার ক্ষেত্রে কনজারভেটিভ পার্টির সমর্থন ক্রমেই কমছে। বিপরীতে বেড়ে যাচ্ছে লেবার পার্টির সমর্থন। প্রচারণায় ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছেন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। এক বিশেষ জরিপের পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, শেষ পর্যন্ত বরিস জনসনের দল সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেলেও ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা রয়েছে।

আগামী ১২ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলো। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ভোটার নিবন্ধন। চলমান নির্বাচনী প্রচারণা ও বিতর্কে ইসলাম বিদ্বেষ ও ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির মতো বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ জরিপে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দল কনজারভেটিভ পার্টি লেবার পার্টি থেকে মাত্র ৬ পয়েন্ট এগিয়ে আছে। সপ্তাহখানেক আগের জরিপে কনজারভেটিভরা ১৩ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল। জরিপগুলোতে ক্ষমতাসীনদের সাথে বিরোধী লেবার পার্টির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

স্বনামধন্য জরিপ সংস্থা বিএমজি রিসার্চের জরিপে দেখা গেছে, জেরেমি করবিন ক্রমেই ভোটারদের সমর্থন আদায়ে সমর্থ হচ্ছেন, যা অন্য দলগুলোর জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জরিপ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখা এবং জানুয়ারি ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে চাইলে অন্তত ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থাকতেই হবে বরিস জনসনকে। বিএমজির জরিপ প্রধান রবার্ট স্ট্রুদার বলেন, ১২ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে এমন আলামত স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যে পরিবর্তন দেখছি তাতে করে কনজারভেটিভ পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পার্লামেন্ট হবে ঝুলন্ত।’

এমন এক সময়ে এই জরিপের ফলাফল সামনে এলো, যখন সমালোচনায় জর্জরিত জনসন। অবিবাহিত মা ও কর্মজীবী পুরুষদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে শুরু করে অ্যান্ড্রু নিলকে নিয়ে কথা বলেও সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি। এ ছাড়া লন্ডন ব্রিজে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাতেও চাপে রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ দলের স্ট্র্যাটেজিস্টরা মঙ্গলবার লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অংশগ্রহণ নিয়েও একটু চিন্তিত। কারণ ট্রাম্প কখন কী বলে বসেন, সে ব্যাপারে কিছুই বলা যায় না। শুক্রবার বরিস জনসন নিজেই ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যেন তিনি নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করেন।

বিএমজি জরিপে দেখা যায়, লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা তাদের সমর্থন হারাচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে গেছে তারা। ব্রেক্সিট পার্টি মাত্র চার শতাংশ সমর্থন নিয়ে আছে সবার নিচে। আর তাদের থেকে একটু এগিয়ে পাঁচ শতাংশ সমর্থন গ্রিনদের। জো নের দল লিবারেল ডেমোক্র্যাট আরো বেশি জনপ্রিয়তা আশা করছিল। তবে জরিপের তথ্য অনুযায়ী লেবার পার্টিই এগিয়ে চলছে। গত সপ্তাহের ৩৯ শতাংশ থেকে এখন তাদের স্কোর ৪৬ শতাংশ।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের জনপ্রিয়তা হারানোয় কনজারভেটিভরা শঙ্কিত কারণ এতে করে লেবার পর্টি এগিয়ে যাচ্ছে এবং ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত গণভোটের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে। স্ট্রুদার বলেন, লেবার ভোটাররা ফিরছেন। ২০১৭ সালে যারা তাদের ভোট দিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ এবারো একই পথে হাঁটতে চান। এক সপ্তাহ আগেই এই সংখ্যা ছিল ৬৭ শতাংশ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button