মোবাইলে পরিচয়-প্রেম অতঃপর…পতিতালয়ে বিক্রি

মোবাইলে রং নাম্বারের মাধ্যমে প্রথম পরিচয়। এরপর দুজনের দেখা, তারপর পরিনয়, অবশেষে বিয়ের কিছুদিন পরে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয় স্বামী হাবিব। ঘটনাটি ঘটেছে ফটিকছড়ি উপজেলার মাইজভাণ্ডার গ্রামের এক তরুণীর জীবনে। কথাগুলো বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েটি। গত ৪ মে উপজেলা সোনাপাহাড় এলাকা থেকে মেয়েটির স্বামী হাবিবের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ।
১০ মে রাতে হাবিবের খুনিদের ধরতে চট্টগ্রামের সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালালে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পুলিশের গুলি বিনিময় হয়। এতে জোরারগঞ্জ থানা উপ-পরিদর্শক আলমগীরসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হন। আটক করা হয় ১১ জনকে। খুনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে আরো অনেক অজানা কাহিনী।
মেয়েটি জানায়, প্রায় ছয় মাস আগে মোবাইলে রং নম্বরে পরিচয় হয় নেত্রকোনা জেলার হাবিবের সাথে। তখন সে চট্টগ্রামের সাগরিকা এলাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করত। এক পর্যায়ে হাবিব তাকে দেখা করতে বলে। হাবিব মেয়েটির সাথে দেখা করতে চট্টগ্রাম শহরে আসে। প্রথমে বোন হিসেবে কথা বললেও পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
হাবিব তাকে বিয়ে করবে বলে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে আসে। সেখানে সেভেন স্টার নামে একটি স্টুডিওতে একটি যুগল ছবি তোলে। পরে আবার তারা চট্টগ্রাম এসে বিয়ে করে।
গত ৩০ এপ্রিল হাবিব মেয়েটিকে জানায়, তার ৪০ হাজার টাকা দরকার। মেয়েটি বলে এত টাকা তার কাছে নেই। পরে হাবিব জানায়, সে কয়েক দিন চট্টগ্রামের আকাশ হোটেলে থাকলে তারা হাবিবকে ৪০ হাজার টাকা দেবে। এরপরও মেয়েটি রাজি না হওয়ায় তাকে নির্যাতন করা হয়।
এক পর্যায়ে মেয়েটিকে তালাক দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরে মেয়েটি রাজি হয়। হাবিব গত ২ মে রাতে মেয়েটিকে আকাশ হোটেলে রেখে চলে যায়। ওইদিন রাতে মেয়েটিকে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করে হোটেল মালিক বাহার উদ্দিন বাবুল, শীর্ষ সন্ত্রাসী ব্যাচাইয়া ও তার সহযোগীরা।
মেয়েটি আরো জানায়, হাবিব এর আগেও একটি বিয়ে করেছে, যা সে গোপন রেখেছিল। হাবিব খুন হওয়ার পর পুলিশ যখন আকাশ হোটেলে অভিযান চালায় তখন আটক অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ে স্বামীকে খুঁজতে নারায়ণগঞ্জ গেলে জানতে পারে তার স্বামী খুন হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৫ মে আকাশ হোটেলে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আরো ১৮ জন পতিতাকে উদ্ধার করে। যাদের দিয়ে জোর করে দেহ ব্যবসা চালাতো হোটেলের মালিক বাহার উদ্দিন বাবুল।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button