শপথ নিলেন রাজা তৃতীয় চার্লস

যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনিস্টার আবেতে আজ শনিবার দুপুরে শত বছরের রীতি অনুসারে রাজা হিসেবে শপথ নিয়েছেন তৃতীয় চার্লস। যুক্তরাজ্যের রাজতন্ত্রের ৪০তম সিংহাসনআরোহী হিসেবে তিনি শপথ নেন। একই সঙ্গে রাজ্যাভিষেক হয়েছে চার্লসের স্ত্রী কুইন কনসর্ট ক্যামিলারও। একইসঙ্গে কমনওয়েলথভুক্ত আরো ১৪টি দেশেরও রাজা হয়েছেন তৃতীয় চার্লস আনুষ্ঠানিকভাবে। রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর ২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেন। এর আগে জমকালো রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডন পৌঁছেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান।
ক্যান্টারবুরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি রাজা চার্লসের শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, রাজ্যাভিষেক শপথের আইনি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রাজাকে আর্চবিশপ বলেন, নতুন রাজা যেন তাঁর শাসনকালে আইনের শাসন ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের মর্যাদা সমুন্নত রাখেন।
রাজা তৃতীয় চার্লস পবিত্র গসপেলে হাত রেখে শপথ নেন এবং আইনের শাসন ও চার্চ অব ইংল্যান্ডের মর্যাদা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করেন। এ ছাড়া একজন ‘একনিষ্ঠ প্রোটেস্ট্যান্ট’ হিসেবে দ্বিতীয় শপথও নেন রাজা তৃতীয় চার্লস।
আজ সেইন্ট এডওয়ার্ডের ঐতিহাসিক রাজমুকুট রাজা তৃতীয় চার্লসের মাথায় পরিয়ে দেয়া হয়। টাওয়ার অব লন্ডনের বাইরে আনা হয় না এ সোনার মুকুট। রাজা এক ঘণ্টার কম সময় এটি পরে থাকেন এবং পরবর্তী রাজার অভিষেকের আগে আর তা দেখা যাবে না। ২২ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি, ৩৬০ বছরের পুরনো এ রাজমুকুট লম্বায় ৩০ সেমি বা এক ফুট। এর ওজন প্রায় ৫ পাউন্ড বা সোয়া দুই কেজি। এ মুকুটে ৪৪৪টি রত্ন রয়েছে, যার মধ্যে আছে বহুমূল্য স্যাফায়ার, রুবি, অ্যামেথিস্ট এবং টোপাজ। এদের বেশিরভাগই হালকা নীল বা নীলচে সবুজ রংয়ের।
এনামেল ও স্বর্ণের খোপে বসানো হয়েছে এসব রত্ন। এক সময় মুকুটের এসব রত্ন খুলে আলাদা করা যেত এবং অভিষেকের সময় সেগুলো নতুন করে বসানো হত। কুড়ি শতকেই এসব রত্ন মুকুটে স্থায়ীভাবে বসিয়ে দেয়া হয়।
এই অভিষেক অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঐতিহাসিক প্যারেডে অংশ নেন নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য। রাইফেল, তলোয়ার, পতাকা হাতে মহড়ার কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কমনওয়েলথভুক্ত নিউজিল্যান্ড, ব্রুনাই, ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকেও এসেছে সেনারা। অপরুপ সাজে সাজানো হয়েছে বাকিংহাম প্যালেস।
অভিষেক অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। বিশ্বনেতাদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমায়ার, পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেং প্রমুখ।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা উপস্থিত থাকেন। স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ ও রানি লেতিসিয়া, যুবরাজ ফ্রেদেরিক এবং ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্সেস মেরিসহ বিভিন্ন দেশের রাজপরিবারের সদস্যদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button