রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে এলো রজব মাস

রজব মাস পবিত্র রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। ‘রজব’ শব্দের অর্থ সম্মানিত। জাহেলি যুগে আরবরা এ মাসকে খুবই সম্মানের চোখে দেখত। এ মাসের মর্যাদা ও পবিত্রতা রক্ষায় তারা নিত্য চলমান হানাহানি, মারামারি ও যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে দিত। এ জন্যই তারা এ মাসকে রজব নামে অভিহিত করেছিল। ইসলাম এসেও এ মাসের মর্যাদার কথা ঘোষণা করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা ১২টি, যা আল্লাহর কিতাব (বিধান) অনুযায়ী সেই দিন থেকেই চালু আছে, যেদিন আল্লাহ আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ।’ (সুরা: তাওবা, আয়াত: ৩৬)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘১২ মাসে বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সর্বাধিক সম্মানিত। তিনটি ধারাবাহিক—জিলকদ, জিলহজ ও মহরম আর চতুর্থটি হলো রজব, যা জুমাদাল উখরা ও শাবান মাসের মাঝখানে অবস্থিত।’ (বুখারি শরিফ: ২/৬৭২)।
উলামায়ে কেরাম বলেছেন, আশহুরে হুরুমের বৈশিষ্ট্য হলো- এসব মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তাওফিক হয় বেশি বেশি। আশহুরে হুরুমে কষ্ট করে গোনাহ থেকে বিরত থাকতে পারলে অন্যান্য মাসেও গোনাহ পরিহার করা সহজ হয়। -আহকামুল কোরআন, জাসসাস: ৩/১১১
হাদিসে আরও বলা হয়েছে, রজব মাস থেকে নবী করিম (সা.) রমজানের প্রস্তুতিস্বরূপ রোজা রাখা শুরু করতেন। বস্তুত হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দোয়ার মাধ্যমে রজব মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেছেন।
রাসুল (সা.) রজব ও শাবান মাসব্যাপী এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান’। অর্থ: ‘হে আল্লাহ! রজব মাস ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন, রমজান আমাদের নসিব করুন।’ (বুখারি)
শেষনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে আরশে আজিমে গমন করেন। যা মিরাজ নামে সমধিক পরিচিত। মিরাজের রাতে মুসলমানদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়। মিরাজের ঘটনা মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যময়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর জীবনের উল্লেখযোগ্য মুজেজা হলো- মিরাজের ঘটনা। রাসূলুল্লাহ (সা.) এ রাতে আল্লাহর দরবারে গিয়েছিলেন। আল্লাহতায়ালা তাকে নিজের সাক্ষাৎ দিয়ে ধন্য এবং নামাজের হুকুম দিয়ে এ উম্মতকে সম্মানিত করেছেন। শবে মিরাজের মূল উপহার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। যা মুসলমানদের আদায় করা ফরজ।
তবে স্মরণ রাখতে হবে যে শরিয়তের পক্ষ থেকে এ মাসের জন্য বিশেষ কোনো নামাজ ও ইবাদতের পদ্ধতি বাতলে দেওয়া হয়নি। তাই ইবাদতের জন্য মনগড়া ও ভিত্তিহীন কোনো পন্থা অবলম্বন করা যাবে না। আল্লাহর প্রিয় বান্দারা রজব মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। তাই এ মাস থেকেই তাওবা-ইস্তেগফার করে আল্লাহর দিকে আরো বেশি মনোনিবেশ করতে হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button