আমেরিকায় এক দশকে মসজিদের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ

Mosqueআমেরিকা একটি সম্পদশালী দেশ। তবে এখানকার মুসলমান সম্প্রদায় তুলনামূলকভাবে অনগ্রসর। তা সত্ত্বেও আমেরিকায় এক দশকের ব্যবধানে মসজিদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশন্স কাউন্সিল প্রকাশিত এক রিপোর্টে জানা যায়, আমেরিকায় ২০০০ সালে মসজিদের সংখ্যা ছিল ১,২০৯টি এবং ২০১১ সালে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২,১০৬ টিতে। একই সময় নিউহ্যাম্পশায়ারে মুসলিম বাসিন্দার সংখ্যা ৩,৭৮২ জন থেকে কমে ১,৬১৬ জনে নেমে আসে।
নিউ হ্যাম্পশায়ারে বর্তমানে ভাড়া ভবনে ৩টি ইসলামিক সেন্টার আছে যেখানে মুসলিমরা নামাজ পড়েন। আমেরিকার অন্য স্টেটগুলোর মধ্যে আলাস্কা, নর্থ ডাকোটা এবং ওয়াইওমিংয়ে ৩টি করে, মেইন ও দক্ষিণ ডাকোটায় ৫টি করে, ইদাহোয় ৬টি এবং নেভাদায় ৭টি ইসলামিক সেন্টার আছে। তবে তুলনামূলকভাবে নিউইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ায় মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারের সংখ্যা বেশি। নিউইয়র্কে ২৫৭টি এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় ২৪৬টি ইসলামিক সেন্টার আছে। ছোট ইসলামিক সেন্টারে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মতো বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারেন না নিউহ্যাম্পশায়ারের মুসলমানরা। ১৭,০০০ বর্গফুটের নবনির্মিত মসজিদটি নিজেদের সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার ঘোষণা দিয়েছেন নির্মাতারা।
১৯৮৭ সালে নিউহ্যাম্পশায়ারের এক মুসলিম ছাত্র ম্যানচেস্টারের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে অস্থায়ীভাবে ইসলামিক সেন্টারের কার্যক্রম চালু করে। ১৯৯৮ সালে কম্যুনিটির সদস্যরা ২.৭৫ একর জায়গা ক্রয় করে ৩ তলা বিশিষ্ট বড় মসজিদ তৈরির পরিকল্পনা করেন। জমি ক্রয়ের ৮ বছর পরে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং এখনো দান সংগ্রহের কাজ চলছে। মসজিদটি নির্মাণের প্রথম থেকেই প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন নির্মাতারা। বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দারা শুরু থেকেই মসজিদ নির্মাণের বিরোধীতা করছিল। ২০১৩ সালে কিছু দুর্বৃত্ত মসজিদের গ্লাস ভাংচুর করলে প্রায় ৩০,০০০ ডলার ক্ষতি হয়। ২০০৬ সালে গিলফোর্ডের একজন ব্যবসায়ী ৫১ বছর বয়সী ডগলাস ল্যাম্বার্ট একটি উপ-সম্পাদকীয়তে বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সব মসজিদগুলো সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের আশ্রয়স্থলে পরিণত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নতুন উপদ্রব হিসেবে আইএসের আবির্ভাব ঘটেছে। আমি বিশ্বাস করি আইএস জনজীবনের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।’ এ ব্যাপারে মসজিদ নির্মাণ কমিটির নেতা জনাব ইসলাম বলেন, ‘আমরা ১৯৯৮ সাল থেকে এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছি এবং এমন কিছুই ঘটেনি। তার মানে আমরা সৌভাগ্যবান তা নয় বরং এগুলো আমাদের সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত নয়। আমরা শান্তির জন্যই এটা নির্মাণ করছি।’ নিউহ্যাম্পশায়ারের মুসলিমরাই প্রথম প্রতিরোধের সম্মুখীন হননি। আমেরিকাসহ পশ্চিমা অনেক দেশেই মুসলিমরা তাদের প্রার্থনাগৃহ মসজিদ নির্মাণ করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই বাঁধার মুখে পড়েন। নিউ হ্যাম্পশায়ারের মুসলিমরা বলছেন, তারা এই মসজিদ দিয়ে অন্যদের সাথে সেতুবন্ধ রচনা করবেন। মসজিদ কমিটির একজন সদস্য ডক্টর সুজা বলেন, ‘আমাদের নতুন জায়গা তাদেরকে আমাদের ধর্ম বিশ্বাসের সাথে পরিচিত করতে সাহায্য করবে। আমরা সংলাপ চালু করতে চাই। আমরা চাই না মানুষ অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে আমাদের বিচার করুক।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button