ত্যাগ ও প্রেরণায় ভাস্বর আশুরা

মাইমুন সুলতানা: “আরবি মহররম মাস, বিশেষ করে আশুরার দিনটি মুসলিম উম্মাহর ন্যায় ইহুদী খ্রীষ্টানদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাসের অনেক যুগান্তকারী ঘটনা ও পালাবর্তনের জন্যই এ দিনটি বিশেষ স্বীকৃতি লাভ করেছে। সাধারণভাবে মুসলমানদের কাছে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রা) এর শাহাদাতের কারণে এই দিনটি বিশেষ পরিচিতি পেয়ে আসছে। তবে যে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য, মহররম বা আশুরার ইতিহাসের সূচনা কারবালার প্রান্তরে নয় বরং মানব ইতিহাসের গোড়া থেকে শত-সহস্র বছর ধরে বিভিন্ন প্রেক্ষাপট ও ঘটনা এর সাথে জড়িয়ে আছে। এ দিকটি বিবেচনায় আমরা আশুরার আলোচনার ২টি দিক বা ধারা খুঁজে পাই। একটি হল, পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে রাসূল (স) ও তাঁর সাহাবাদের যুগ পর্যন্ত। আর অপরটি হলো কারবালার প্রান্তরে ইমাম হুসাইন (রা) এর শাহাদাতের হৃদয়বিদারক ঘটনা।

এই দুটি দিকেরই বিশেষ ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। প্রথম প্রেক্ষাপটের আলোকে আমরা দেখতে পাই যে, আশুরার দিনটিকে স্বয়ং রাসূল (স) ও তাঁর সাহাবারা (রা) বিশেষ সম্মান ও গুরুত্বের সাথে দেখেছেন। এমনকি এ দিনে বিশেষ আমলও করেছেন। আর দ্বিতীয় প্রেক্ষাপটটি ইসলামী শাসনব্যবস্থায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন তথা ইসলামী খিলাফাত ব্যবস্থার পরিবর্তে রাজতান্ত্রিক শাসনের সূচনা করেছে। এই দু’টি প্রেক্ষাপট সামনে রেখে আজ আমরা আশুরার তাৎপর্য, এর আমল ও মুসলমানদের জীবনে এর প্রভাব এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য আশুরায় কি বার্তা ও শিক্ষা রয়েছে-এ বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করব।

শুরুতেই একটা বিষয় স্পষ্ট করে নেয়ার প্রয়োজন মনে করছি। তা হলো- কারবালার নির্মম ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে হিজরী ৬৬১ সনে। অর্থাৎ রাসূল (স) এর ওফাতের প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে। তাই আশুরার দিনের আমলের সাথে কারবালার প্রান্তরের কোন যোগসূত্র নেই। কারণ এ ব্যাপারে প্রতিটি মুসলিম মাত্রই অবহিত যে, রাসূল (স) এর ওফাতের পর শরীয়তে আর নতুন কোন বিধান সংযোজন বা বিয়োজনের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। এজন্যে এই আলোচনায় আশুরার ২টি দিকের অবতারণা করা হয়েছে।

আশুরার প্রসঙ্গ আসলেই সাধারণ মুসলমানদের মানসপটে প্রথমেই কারবালার স্মৃতি ভেসে উঠে। আর আজকের বিশ্বের নিয়তির সাথেও কারবালার ঘটনারই বেশী সম্পৃক্ততা আছে। তাই প্রথমে এই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা করা প্রয়োজন মনে করছি।

এ বিষয়ে আলোচনার শুরুতে স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন উত্থিত হয় কোন্ কারণে কারবালায় মুসলমানদের মাঝে এমন আন্ত:বিরোধ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হলো, আর কেনইবা রাসূল (স) এর প্রাণপ্রিয় পৌত্রকে শাহাদাত বরণ করতে হল? এ প্রশ্নের জবাব পেতে আরো একটু পেছনের ইতিহাসে দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে।

রাসূল (স) এর ওফাতের পর ১ম খলিফা হযরত আবু বরক (রা) থেকে শুরু করে যে সময়টা খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগ হিসেবে স্বীকৃত সে সময়কার খলিফা নির্বাচন পদ্ধতির সাথে কারবালার ঘটনার নায়ক মুয়াবিয়া (রা) এর পুত্র ইয়াজিদের শাসক নির্বাচিত হওয়ার পদ্ধতিতে বড় রকমের একটা পার্থক্য সূচিত হয়। যার পরিণতিই হলো কারবালার প্রান্তে ইমাম হুসাইনের (রা) এর শাহাদাত। এ বিষয়টি যদি মুসলমানদের কাছে স্পষ্ট না হয় তবে ইমাম হুসাইন (রা) এর শাহাদাতের কারণ ও তাৎপর্য সঠিকভাবে অনুধাবন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। রাসূল (স) এর জন্মের সময় মক্কায় গোত্রভিত্তিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ছিল। শুধুমাত্র পারস্য, সিরিয়া, মিশর, চীন, ভারত ইত্যাদি কয়েকটি রাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা চালু ছিল। যার ভিত্তি ছিল রাজতন্ত্র। এ ছাড়া সমগ্র বিশ্বেই গোষ্ঠীপ্রথা প্রচলিত ছিল। রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় রাজা ছিল সর্বাত্মকবাদী শাসক ও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাধারণ জনগণ ছিল তাদের আজ্ঞাবহ প্রজা। এই ব্যবস্থাটি ছিল মানুষের উপর মানুষের প্রভূত্বমূলক। কিন্তু ইসলামের আগমনের পর এই চিরাচরিত শাসনব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। মানুষের উপর মানুষের প্রভুত্বের পরিবর্তে আল্লাহ্র কর্তৃত্ব ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। রাসূল (স) প্রতিষ্ঠিত এই রাষ্ট্রব্যবস্থার কতিপয় মৌলিক বৈশিষ্ট্য ছিল, যেগুলো রাজতান্ত্রিক শাসনকাঠামোয় স্বীকৃত ছিলনা। তদুপরি ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থার কিছু মৌলিক লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আছে, যার বাস্তবায়ন রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সম্ভব নয়।

এক: আল্লাহর সার্বভৌমত্ব : ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থায় সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। “প্রভুত্ব ও সার্বভৌমত্ব শুধুমাত্র আল্লাহর” (আনআম-৫৭)
তাই ইসলামী রাষ্ট্রের শাসক আল্লাহর বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করতে বাধ্য ছিল। এ ব্যাপারে আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতার পূর্ণ অনুভূতি তাদের মধ্যে সদা জাগরুক ছিল। কিন্তু রাজতন্ত্রের প্রচলনের সাথে সাথেই শাসকই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে গেল।

দুই: কুরআনের শাসন: ইসলামী সরকারের দায়িত্ব হলো কুরআনের রাজ কায়েম করা। যেমন কুরআনে এসেছে-
“নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি পূর্ণ কুরআন শরীফ পরম সত্যতার সাথে এজন্যেই নাযিল করেছি যে, তুমি সে অনুযায়ী মানুষের উপর আল্লাহর প্রদর্শিত পন্থায় রাষ্ট্র পরিচালনা করবে এবং বিচার ফায়সালা করবে। (কুরআনকে যারা এ কাজে ব্যবহার করতে চায়নি তারা এ মহান আমানতের খেয়ানত করে) তুমি এ খেয়ানতকারীদের সাহায্য ও পক্ষ সমর্থনকারী হয়ো না। (নিসা-১০৫)
রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সংবিধানে নামসর্বস্ব ‘আল্লাহর আইন’ বহাল থাকলেও কার্যত এর যথাযথ প্রয়োগ ছিল না।

তিন: ইসলামের নির্বাচন পদ্ধতি : ইসলামে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে শাসক নির্বাচিত হবেন। এ ব্যাপারে জনগণকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে এবং কেউ নিজে প্রার্থী হবে না।
“আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন যেন তোমরা আমানত সমূহ বিশ্বস্ত লোকদের কাছে সোপর্দ করো।” (সূরা নিসা-৫৮)
“আল্লাহর শপথ আমরা আমাদের এ রাষ্ট্রীয় কোন দায়িত্বে এমন কোন ব্যক্তিকে নিয়োগ করবোনা যে তা পাওয়ার জন্য আবেদন করে অথবা তা পেতে লালায়িত।” (বুখারী মুসলিম) অথচ রাজতন্ত্র ইসলামের এ নীতির স্পষ্ট লংঘন।

চার: মজলিসে শূরা : ইসলামী রাষ্ট্রের যাবতীয় কাজ পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন হতে হবে।
“হে নবী! আপনি তাদের সাথে (মুসলিম জনগণ) যাবতীয় সামষ্টিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে পরামর্শ করুন।” (আলে ইমরান-১৫৯)
আর রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর পরামর্শ প্রদানের অধিকার রাষ্ট্রীয় তাবেদার স্বার্থান্বেষী মহলের নিকট চলে যায়।

পাঁচ: বায়তুলমাল : ইসলামী রাষ্ট্রে বায়তুলমাল রাষ্ট্র ও জনগণের সম্পদ, শাসক তার সংরক্ষক ও আমানতদার।
“হে বিশ্বাসীগণ তোমরা একে অপরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে বা অবৈধপন্থায় ভক্ষণ করোনা।” (নিসা-২৯)
রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর এই নীতিটি আর টিকে ছিল না। বরং শাসক বায়তুলমালকে নিজস্ব সম্পত্তির ন্যায় ভোগ ব্যবহার করতে লাগল।
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা ও রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উপরোক্ত পার্থক্য সামনে রেখে ইমাম হুসাইনের (রা) আত্মত্যাগের বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করা যায়।

ইয়াজীদ যখন পূর্ণ জনসমর্থনের পরিবর্তে উত্তরাধিকার সূত্রে মুয়াবিয়া (রা) কর্তৃক শাসনভার প্রাপ্ত হন তখন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী হুসাইন (রা) নিশ্চিত বুঝতে পেরেছিলেন যে, রাসূল (স) এর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রকাঠামোতে কতবড় একটি ফাটল ধরতে যাচ্ছে এবং এর পরিণতিতে ইসলামী খেলাফতের প্রাসাদ চিরদিনের জন্য ভেঙ্গে পড়বে। তার এই আশংকা পরবর্তীতে অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হয়। ইয়াজীদ মাত্র ৪ বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকার পর উমাইয়া শাসন শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতার আব্বাসীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবেই ইসলামী খেলাফত ব্যবস্থা চিরদিনের জন্য বিদায় নিয়ে রাজতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এসব শাসকদের আমলে কাগজে-কলমে ইসলামী সংবিধান থাকলেও ক্ষমতা ও প্রতি-পত্তির প্রভাবে তা বাস্তবে রূপলাভ করতে পারেনি। উপরোক্ত আলোচনা থেকে তাই প্রতীয়মান হয় হুসাইনের (রা) মত মর্যাদাবান একজন সাহাবী কোন চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। এবার আশুরার আরেকটি দিক নিয়ে আলোচনা করা যাক। যে কারণে আশুরার দিনটি মুসলিম-অমুসলিম সবার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন হাদীস ও ঐতিহাসিক রেওয়ায়েত থেকে এই দিনে সংঘটিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। যথা :
১। এ দিনে হযরত আদম (আ) এর তাওবা কবুল করা হয়।
২। এ দিনে হযরত নূহ (আ) মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি লাভ করেন।
৩। এ দিনে আল্লাহ তায়ালা ফিরাউন ও তার দলকে নীল নদে ডুবিয়ে মূসা (আ) ও তাঁর অনুসারীদের মুক্তি দেন।
৪। এ দিনে হযরত ইউনুস (আ) কে আল্লাহ মাছের পেট থেকে মুক্তি দেন।
৫। এ দিনে হযরত ইবরাহীম (আ) জন্ম লাভ করেন।
৬। এ দিনে হযরত ইউসুফ (আ) কে কূপ থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
৭। হযরত ইয়াকুব (আ) এর চক্ষু ফিরিয়ে দেয়া হয়।
৮। দাউদ (আ) এর তাওবা কবুল করা হয়।
৯। এ দিনেই হযরত ঈসা (আ) এর জন্ম হয় এবং তাকে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হয়।
১০। এ দিনে রাসূল (স) এর আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।
আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (র) বলেন, উল্লিখিত ১০ জন নবী রাসূলের পাশাপাশি অনেকে আরও অন্যান্য নবী রাসূলের নাম উল্লেখ করেন।
ক. হযরত ইদ্রীস (আ) কে জীবিত অবস্থায় আসমানে উঠিয়ে সম্মানিত করা হয়।
খ. হযরত আইয়ূব (আ) জটিল রোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন।
গ. এ দিনে হযরত সুলাইমান (আ) কে রাজত্ব ফিরিয়ে দেয়া হয়।
(উমদাতুল কারী শরহে বুখারী- ১১/১১৮ পৃ:)
এ সকল ঘটনার প্রেক্ষিতেই আশুরা বা মহররম মাসের ১০ তারিখ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

আশুরার আমল:
হাদীসে ‘আশুরা’ দিবসে রোজা পালনের বিশেষ ফযিলত রয়েছে। রাসূল (স) মক্কায় থাকাকালীন এ রোজা পালন করেছেন। পরে মদীনায় গিয়েও প্রথম বছর এ রোজা পালন করেছেন। ২য় হিজরীতে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার আগে আশুরার রোজা আবশ্যক ছিল। পরবর্তীতে তা রহিত হয়ে যায়। রাসূলূল্লাহ (স) বলেছেন, “রমজানের রোজার পরে আল্লাহর নিকট মহররম মাসের রোজা ফযিলতের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠতম।” (সহিহ মুসলিম: ১/৩৮৮পৃ:)
মহানবী (স) আরো বলেন, “আমি আল্লাহর দরারে আশা রাখি যেন আশুরার রোজা আল্লাহর নিকট পূর্ববর্তী বছরের গুনাহের কাফফারা স্বরূপ গণ্য হয়। (সহিহ বুখারী: ১২৫১, তিরমিযী : ১৩২)
হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (স) যখন আশুরার দিনে রোজা রাখেন এবং অন্যদেরও রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেন, তখন সাহাবীরা অবাক হয়ে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! ইয়াহুদী -নাসারারাও এই দিনটিকে বড়দিন মনে করে। আমরা যদি এই দিনে রোজা রাখি তাহলে তো তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য হবে। উত্তরে রাসূল (স) বললেন, “তারা যেহেতু এ দিন একটি রোজা পালন করে আগামী বছর ইনশাআল্লাহ আমরা এই ১০ তারিখের সঙ্গে ৯ তারিখ মিলিয়ে ২ দিন রোজা পালন করব।” (মুসলিম-১১৩৪)

আশুরায় প্রচলিত বিদআত:
আশুরায় রোজা রাখা ব্যতীত অন্য কোন আমল হাদীসে সমর্থিত নয়।
* আশুরায় শোক পালন, মর্সিয়া পাঠ ও তাজিয়া মিছিল করা বৈধ নয়। এ ব্যাপারে ইমাম হুসাইন অসিয়ত করে যান- (যয়নব এর উদ্দেশ্যে) “আল্লাহর দোহাই দিয়ে আমি তোমাকে অছিয়ত করে যাচ্ছি, আমার শাহাদাতের পর শোকে মুহ্যমান হয়ে কাপড় ছিড়াঁ, মাতম করা, উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি করার মত যাবতীয় শরীয়ত গর্হিত কাজ কঠোরভাবে বর্জন করবে।” (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড: ৮, পৃ- ১৭৬-১৭৮)
* তাজিয়াকে স্পর্শ করা সৌভাগ্যের মনে করা ও তাজিয়ার সামনে সিজদা করা স্পষ্ট শিরক।
* খিচুরী রান্না করা, মিলাদের আয়োজন করা, সুরমা ও খিজাব ব্যবহার করা বিদআত।
* মহররম মাসে বিবাহ-শাদি করা, খাতনা বা সফর ইত্যাদি ভাল কাজকে অশুভ মনে করা বিদআত।
এভাবে সমাজে অনেক কুসংস্কার প্রচলিত আছে যার সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্ক নেই।

আশুরার শিক্ষা:
* আশুরার দিনটি মূলত বাতিলের পরাজয় এবং হকপন্থিদের বিজয়ের দিবস। কারণ ইমাম হুসাইন নিজের জীবন দিয়ে ইসলামের সুমহান বিধানকে সমুন্নত করেছেন। তাই আমাদের শোক না করে তাঁর মহান ত্যাগ থেকে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
* ইমাম হুসাইন (রা) জীবন দিয়ে আমাদের শিখিয়েছেন আল্লাহর বিধানের ব্যাপারে কখনো আপোষ করা যাবে না। প্রয়োজনে জীবন বিলিয়ে দিতে হবে।
* আশুরাকে কেন্দ্র করে প্রচলিত সব ধরনের বিদআত ও কুসংস্কারের মূলোৎপাটন করে যথাযথভাবে আমল করতে হবে।

আল্লাহ আমাদের আশুরা ও কারবালার মহান আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে পৃথিবীতে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের সংগ্রামে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করার মত হিম্মত লাভের তাওফীক দিন। আমীন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button