লাইবেরিয়া সার্ফারদের স্বর্গ

লাইবেরিয়ার সমুদ্রতট সামনের দিনে সার্ফারদের স্বর্গ হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু এখনো বিশ্ব এর খোঁজ পায়নি। ভৌগলিকভাবে লাইবেরিয়ার অবস্থান একেবোরে আটলান্টিক ঘেঁষে, আর বারো মাসই সাগরের ঢেউ সেখানে একই রকম থাকে, অর্থাৎ না উত্তাল না মিইয়ে যাওয়া ঢেউ, মানে সার্ফারদের জন্য যেটাকে একেবারে আদর্শ বলা হয়। এ মুহূর্তে লাইবেরিয়ার সেরা সার্ফারদের একজন প্রিন্সেস, নিজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও স্বীকৃতি পাচ্ছেন এখন। তিনি বলেন, ‘আমি দেখতাম ছেলেরা সারাক্ষণ সার্ফিং করছে। যখনই ওদের দেখতাম, দেখতাম যে ওরা সার্ফিং করছে। তো আমি যেহেতু খেলাধুলা খুব ভালোবাসি, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমিও সার্ফিং করবো।

লাইবেরিয়ার তরুণরা সার্ফিং এ ভীষণ আগ্রহী। দেখা যায়, খেলাধুলার অন্যান্য আয়োজন খুব বেশি না থাকায়, তারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সার্ফিং এ আগ্রহী হয়ে উঠেছে। আর তাদের প্রশিক্ষণ দেবার জন্য এ মুহূর্তে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর বাইরে রয়েছে স্থানীয় তরুণদের এক অংশ, যারা সার্ফিং করেন এবং বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন। এদের একজন ফিলিপ বানিনি বলেন, একজন সার্ফার হিসেবে আপনাকে রোজ সার্ফিং করতে হবে। সেই সাথে পড়াশোনাও ঠিক রাখতে হবে, স্কুলে যেতে হবে। কেবল সার্ফিং করলেই হবে না। আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে, উন্নতি করতে হলে আপনাকে পড়াশোনা চালাতেই হবে। আমরা তাদের এই বলে প্রশিক্ষণ দেই যে সার্ফিং তোমাকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।

যারা সার্ফিং করছেন আর যারা নতুন করে শিখতে আসছেন, তাদের মধ্যে নানা বয়সের মানুষ রয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে পড়া শিশু থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষজনও। স্থানীয় একটি স্কুলে ক্লাস থ্রিতে পড়ে জেমস। তিন বছর আগে যখন তার বয়স ৬ বছর তখন তার বাবার হাত ধরে সে সার্ফিং শুরু করে। নিজেকে লাইবেরিয়ার সর্বকনিষ্ঠ সার্ফার দাবি করে জেমস জানায়, ‘আমি লাইবেরিয়ার সর্বকনিষ্ঠ সার্ফার। আমি রোজ স্কুলের পর সার্ফিং-এ যাই। স্কুল থেকে ফিরে কাপড় বদলে এখানে চলে আসি, তারপর প্রশিক্ষণ শুরু হয়। তারপর পানিতে নামি আমরা, আমার তখন খুব ভালো লাগে।’ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার পর এখানেই দেখা মেলে স্থানীয় তরুণদের বড় অংশটির। সময় কাটানো বা বিনোদন যেভাবেই ভাবুন না কেন, লাইবেরিয়ার মানুষদের এ মূহুর্তে এটাই একমাত্র উপায়। সেই সঙ্গে অনেকে একে পেশা হিসেবেও নিতে চান, অংশ নিতে চান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে। আবার কেউ আছেন, যারা পর্যটকদের গাইড হবেন, সার্ফিং-এর সময় তাদের সঙ্গ দেবেন, এজন্য সার্ফিং এবং ইংরেজি ভাষা ভালো করে শিখছেন। কিন্তু দারিদ্র পীড়িত দেশটিতে সার্ফারদের পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদিও মেলে না সব সময়। দেখা যায়, তারা পরস্পরের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন সার্ফিং এর সময়। অনেক সময় পর্যটকদের ফেলে যাওয়া সার্ফবোর্ড দিয়ে কাজ করে অনেকে।

কিন্তু দেশটির সরকার এখন চাইছে এ খাতে বিদেশী পর্যটক আকর্ষণ করতে। সেজন্য ব্রান্ডিং করা হচ্ছে, দেশটির বিভিন্ন সৈকতকে। বলা হচ্ছে, সোনালী বালুকাবেলায় এমন অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ আর দুটি মিলবে না। -বিবিসি

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button