সৌদিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক সংকট

Saudiসৌদি বাদশার বিশেষ ক্ষমার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩ নভেম্বর। ৪ নভেম্বর থেকে অবৈধদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। যেসব শ্রমিক এখনো পুরোপুরি বৈধ হতে পারেন নি তারা গ্রেফতার এড়াতে নিজ নিজ বাসায় অবস্থা করছেন। এর আগে বিশেষ ক্ষমার সুযোগে একেবারে সৌদি আরব ছেড়েছেন ১০ লাখেরও বেশি বিদেশি। এর ফলে লোকবল সংকটে বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কল কারখানার মালিকরা।
সৌদিতে বিশেষ ক্ষমার অধীনে উমরাহ, হজ, ভ্রমণ এবং বিভিন্ন কারণে কফিল থেকে পালিয়ে যাওয়া অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ করার বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বৈধ হবার ক্ষেত্রে নানা শর্ত এবং কাগজপত্র প্রসেসিং এর দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক অবৈধ অভিবাসী এখনো বৈধ হতে পারেননি। যার ফলে অনেকে দূতাবাস থেকে জরুরি সনদ সংগ্রহ করে ফাইনাল এক্সিট স্ট্যাম্প লাগিয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষা করছেন। অনেকে এখনো লুকিয়ে আছেন।
সৌদি চেম্বার অফ কমার্সের একটি সূত্র জানায়, বিদেশি শ্রমিক স্বল্পতার কারণে এরই মধ্যে ২৫ শতাংশ বেকারি বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান হুকমির মুখে রয়েছে।
আল সামরানি কোম্পানির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আল তাহকিক বলেন, শ্রমিকের এতবড় ঘাটতি এর আগে কখনো ঘটে নি। আমরা বেশ ঝুঁকির মধ্যে আছি। লোকবল কম থাকায় পণ্যের সরবরাহ যথাসময়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আমাদের ভোক্তা সাধারণ আমাদের এই সমস্যা বুঝতে চাচ্ছেন না।
জেদ্দার একটি এক ব্যস্ত রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা যায় ওয়েটারের সংখ্যা অনেক কম। ওয়েটারের স্বল্পতার কারণে তারা সঠিকভাবে গ্রাহকের চাহিদা পূরণ করতে পারছেন না।
ওই রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, লোকবলের অভাবে ব্যবসাতে প্রায় ৩০ শতাংশ প্রভাব পড়েছে। সময়মত কোনো কিছুই সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।
ফয়সালিয়া এলাকায় বিল্ডিং’র কেয়ারটেকারের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আমার খাওয়া দাওয়া ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। আমি আমার ইকামার জন্য চার হাজার রিয়াল দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইকামা হাতে পাই নি।
তিনি আরও বলেন, আমি লেবার ভিসায় এক গ্রাম্য এলাকায় এসেছিলাম। কিন্তু অমানুষিক পরিশ্রম আর সময়মত প্রাপ্য মজুরি না পাওয়ায় আমি সেখান থেকে পালিয়ে জেদ্দায় চলে আসি এবং এখানে কেয়ারটেকারের চাকরি নিই।
আমি খুব অল্প পরিমাণ টাকা নিজের জন্য রেখে বাকি টাকা দেশে পরিবারের জন্য পাঠাই। ইকামা যথাসময়ে হাতে না পেলে আমাকে দেশে চলে যেতে হবে।
বিশেষ ক্ষমার দ্বিতীয় কিস্তির মেয়াদ শেষ হওর সঙ্গে সঙ্গে সৌদি আরবের সর্বত্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button