বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের যাত্রা শুরু

Playবাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন আরেকটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে কয়েক দিন আগেই। শনিবার রাজশানীর একটি হোটেলে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ নামে নতুন সংগঠন। কর্মকর্তারা পরিচিতি সভায় তাদের ভবিষ্যত্ পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এ সময় সংগঠনের সভাপতি মোসাদ্দেক আলী ফালুর সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় বক্তব্য রাখেন সাবেক ফুটবলার ও মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস, সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক মনিরুল হক চৌধুরী, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক। এছাড়া সংগঠনের সহসভাপতি ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক আবদুস সালাম, মহাসচিব মোস্তাকুর রহমান, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি আলী আজগর লবী। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ম্যানেজার লে. কর্নেল (অব.) আবদুল লতিফ খান। এ সময় সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সাদেক হোসেন খোকা বলেন, ‘ক্রীড়া উন্নয়ন করতে হলে রাজনীতির বাইরে থেকে কাজ করতে হবে। আমি আশা করি বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ রাজনীতিনির্ভর হবে না।’ এছাড়া তিনি বলেন, ‘ক্রীড়াকে প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে প্রত্যেক সরকারেরই উচিত এর বাজেট বাড়ানো।’ সভায় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের যারা কৃতী খেলোয়াড় রয়েছেন, তারা যেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকেন, এটাই আশা করব। ক্রীড়াঙ্গনের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আমরা নতুন এই সংগঠনের মাধ্যমেই শেষ করব।’
সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ফজলুর রহমান পটল বলেন, ‘খেলাধুলায় রাজনীতি থাকবে। তবে তা হবে ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য। আমার দায়িত্বকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জন্য একটি টাওয়ার নির্মাণ করেছি, যা থেকে এখন বর্তমান সরকারের আয় হচ্ছে এক কোটি টাকার বেশি।’
এছাড়া তিনি বলেন, ‘শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম করেছি। বিশ্বকাপের ভেন্যু ঠিক করেছি। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, আমাদের তিন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী পনেরো বছরের দায়িত্বকালে ক্রীড়াখাতে সরকার যত টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল, তার চেয়েও অনেক বেশি টাকা খরচ হয়েছে বর্তমান সরকারের দায়িত্বকালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।’
সাবেক কৃতী ফুটবলার ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাবেক সভাপতি মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সত্যি ক্রীড়াঙ্গনের এখন করুণ অবস্থা। এখনকার ক্রীড়া সংগঠকরা উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। বাংলাদেশে এখন ব্যক্তির নামে ক্লাব হয়, যা বিরল ঘটনা। বছরের পর বছর পাতানো খেলা অনুষ্ঠিত হয়, যার কোনো শাস্তি হয় না।’ এছাড়া তিনি বলেন, ‘বিদেশে পাতানো খেলা খেললে আট-দশ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। আমাদের ক্যারিয়ারে কোনোদিন পাতানো খেলা খেলিনি। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ক্রীড়াঙ্গণে ক্যান্সার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এখন খেলোয়াড়রা ক্লাব কর্মকর্তাদের পেছনে ঘোরে। আগে ছিল ঠিক তার উল্টো। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে যখন দেখি একজন ফুটবলারের নামের পাশে রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে, অথচ সে মাঠে খেলতে পারে না। কিন্তু পরিচয়ের কারণে সরাসরি প্রথম বিভাগে সুযোগ পায়।’
সভাপতি মোসাদ্দেক আলী ফালু সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই সংগঠন যেন ক্রীড়া উন্নয়নের কাজ করে যায়। ক্রীড়ার নিয়ন্ত্রণ না করে। ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য ভালো খেলোয়াড়ের পাশাপাশি শক্তিশালী সংগঠকেরও প্রয়োজন রয়েছে। আগামীতে ক্রীড়া উন্নয়নের জন্য বাজেট বাড়াতে হবে। জেলায় জেলায় খেলোয়াড় তৈরির কার্যক্রম হাতে নিতে হবে।’
এছাড়া তিনি বলেন, ‘সব পর্যায়ের খেলা জেলায় জেলায় চালু করতে হবে। তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় উঠে এলে আমাদের ক্রীড়ার উন্নয়ন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, ক্রীড়াঙ্গনের ব্যক্তি ছাড়া এই সংগঠনে অন্য কারো জায়গা হবে না। যদি ক্রীড়ার বাইরের কোনো লোক এখানে থাকে, তবে আমি সভাপতি থাকব না।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button