ইউকেবিসিসিআই সেরা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০১৭ অনুষ্ঠিত

ukbcciউৎসবমুখর আয়োজনে গত রোববার লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ইউকেবিসিসিআই বিজনেস অ্যান্ড এন্ট্রেপ্রেনার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৭। গত  বছরের মতো এবারও মর্যাদাকর এ পুরস্কার প্রদান আয়োজনের ভেন্যু ছিল দ্য লন্ডন হিলটন অন পার্ক লেনের সুবৃহৎ চত্ত্বর। ব্রিটিশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের সফলতার স্বীকৃতি স্বরূপ দ্বিতীয়বারের মতো এ আয়োজনে মোট ১২টি ক্যাটাগরিতে সেরাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
বিবিসি সাংবাদিক ও উপস্থাপক জেনি বন্ডের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট বজলুর রশিদ এমবিই। তিনি তার বক্তব্যে পুরস্কার প্রদান আয়োজনকে ব্রিটেন ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন ও যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ক্যাটারিং খাতে ব্রিটিশ অর্থনীতিতে আমরা সাফল্যের চিহ্ন রেখেছি। অথচ পাশাপাশি অন্যান্য খাতে আমাদের মেধা বা কৃতিত্ব থাকলেও তা যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরা হচ্ছে না। বিভিন্ন খাতের এসব উদ্যোক্তার সাফল্য সবার সামনে তুলে ধরাই এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেন ইউকেবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট।
সংগঠনের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ওবিই ডিবিএ বলেন, কমিউনিটির পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মকে তুলে ধরাসহ বাংলাদেশ ও ব্রিটেনের মাঝে যোগসূত্র স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টিতে সব সময় কাজ করছে ইউকেবিসিসিআই। চেয়ারম্যান এ সময় তার বক্তব্যে ব্রিটিশ ভিসা প্রদান পদ্ধতি দিল্লি থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানান। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গত তিন বছরের জরিপ অনুসারে ভিসা প্রাপ্তির হার প্রায় ৭০ ভাগ কমে গেছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ী সংগঠন। যারা আসতে চাচ্ছে তাদের নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি এর ফলে ব্রিটিশ সরকারও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের পলিসি বোর্ডের চেয়ার জর্জ ফ্রিম্যান এমপি বলেন, আমাদের আরো বেশি ব্যবসায়ী প্রয়োজন। এখানে উদ্যোক্তাদের কোনো বিকল্প নেই। ব্রেক্সিট পরবর্তী সরকারের পলিসির কথা উল্লেখ করে ফ্রিম্যান আরো বলেন, ইউরোপ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ৫২ শতাংশ ভোটারের মতামত গুরুত্ব সহকারে দেখছে সরকার। এ কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্রিটিশ সরকার সব সময়ই উদগ্রীব, জানান তিনি।
এ বছর  ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের ১২টি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ইউকেবিসিসিআইয়ের মর্যাদাকর ‘আজীবন সম্মাননা’ পুরস্কার লাভ করেন ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং সিইও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যে ব্রিটেনে বাংলাদেশিদের সাফল্যের স্মারক দেখে একজন বাংলাদেশী হিসেবেও গর্ববোধ করেন বলে জানান। বাংলাদেশ বর্তমানে প্রবাসী বিনিয়োগ বান্ধব উল্লেখ করে ব্রিটেনের তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বাংলাদেশের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান তিনি।
এ ছাড়া ইউকেবিসিসিআই স্পেশাল রিকগনিশন অ্যাওয়ার্ডসে ভূষিত হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রথম ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী এবং সংগঠনের চয়েস অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী হন মুয়াই থাই কিক বক্সিং চ্যাম্পিয়ন রুকসানা বেগম। এছাড়া নতুন প্রজন্মের জন্য ইয়াং এন্ট্রেপ্রেনার অব দ্য ইয়ার, ইন্সপারেশনাল বিজনেস লিডার অব দ্য ইয়ার-সহ ১২টি অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে তাদের সাফল্যের স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার হিজ এক্সেলেন্সি মোহম্মদ নাজমুল কাউনাইন, বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এমপি রুশনারা আলী এমপি, অ্যান মেইন এমপি, পল স্কালি এমপি, ফেস মার্কেট সিইও ডা. জো ম্যানডিচ, লর্ড কারান বিলিমরিয়া, র‌্যাংস প্রপার্টিজের স্বত্তাধিকারী রউফ চৌধুরী, বিসিএ প্রেসিডেন্ট কামাল ইয়াকুবসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
পুরস্কার প্রদানের ফাঁকে ফাঁকে বিরতিতে শীর্ষ শিল্পীদের নাচ ও গানের পরিবেশনায় মুগ্ধ হন অভ্যাগত এবং দর্শকশ্রোতারা।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button