মধ্যপ্রাচ্য থেকে কমছে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয়

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় সেটির ধাক্কা বাংলাদেশের রেমিট্যান্স আয়ের ওপর পড়তে শুরু করেছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে সে তুলনায় জানুয়ারি মাসে প্রায় ১২% কম এসেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিমাসে রেমিট্যান্স বাবদ বাংলাদেশে প্রায় গড়ে ১.২ বিলিয়ন ডলারের আসে। সামপ্রতিক বছরগুলোতে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেশ উর্ধ্বমুখী ছিল।
কিন্তু গতমাস অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে এসে সে উর্ধ্বমুখী প্রবণতায় বড় একটি ধাক্কা লাগলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ বিরূপাক্ষ পাল জানান, বাংলাদেশের রেমিট্যান্স সবচেয়ে বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে।
এক্ষেত্রে সৌদি আরব প্রথম স্থানে এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর পরেই আছে যুক্তরাষ্ট্র। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে তারপরেই আবার মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থান।
মি. পাল বলেন, তেলের দাম কমে যাওয়ায় সৌদি আরব ৯৮ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে যেটি বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় অর্ধেক।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দার বিষয়টি বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমে যাবার একটি কারণ বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই প্রধান অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বাংলাদেশের শ্রমিকরা তাদের নির্ধারিত কর্ম ঘণ্টার বাইরে যে ওভারটাইম কাজ করতেন সেটিও কমে গেছে। যে কারণে অনেকে আগের তুলনায় দেশে কম পরিমাণ টাকা পাঠাচ্ছেন।
দুবাই থেকে সাংবাদিক সাইফুর রহমান জানান, তেলের দাম কমে যাবার কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনেক ছোট-খাটো কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে অনেকেই চাকরি হারাবে বলে মি: রহমান বলেন।
তিনি বলেন, তেলের দাম কতদিন নিচে থাকে সেটা দেখার বিষয়। কিছু কোম্পানি হয়তো টিকে থাকবে। কিন্তু এই প্রবণতা দীর্ঘায়িত হলে হয়তো বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
তেলের দাম কমে যাওয়ায় রেমিট্যাটেন্সের প্রবাহ কমলেও বাংলাদেশ আরেকটি উপায়ে লাভবান হচ্ছে। তেল আমদানি বাবদ অনেক ডলার সাশ্রয় হচ্ছে।
রেমিট্যান্স কমে যে ক্ষতি হচ্ছে সেটি পুষিয়ে যাচ্ছে তেল আমদানি থেকে অর্থ সাশ্রয় করে।
বিরূপাক্ষ পাল বলেন, যোগ-বিয়োগে সমান হলেও বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স আসার বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে।
তিনি বলেন, রেমিট্যান্সটা যখন আসে সেটা গ্রামে-গঞ্জে চলে যায়। রেমিট্যান্স কমে আসুক সেটা আমরা চাই না। কারণ এটা গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভোগ প্রবণতার ব্যাপক শক্তি বাড়ায়। -বিবিসি বাংলা

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button