নানসেন পুরস্কার পেলেন আফগান নারী

Aqilaজাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বার্ষিক নানসেন পুরস্কার পেয়েছেন আকিলা আসিফি নামের এক আফগান নারী। পাকিস্তানে আফগান শরাণার্থী মেয়েদের শিক্ষায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি এ পুরস্কার পেয়েছেন।
মঙ্গলবার ইউএনএইচসিআর এর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আফগান শরণার্থী মেয়েদের শিক্ষায় সাহসী ও নিরলস ভুমিকার জন্য আসিফি সম্মানজনক এ পুরস্কার পাচ্ছেন।
১৯৯২ সালে আসিফি তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে পালিয়ে আসেন। তিনি পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে মিয়াঁওয়ালীর কোট চন্দনা শরণার্থী গ্রামে বসবাস করেন। তিনি এ গ্রামে আসার আগে কঠোর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রথার কারণে মেয়েরা ঘরেই আবদ্ধ থাকত।
তবে আস্তে আস্তে তিনি এলাকার পরিবার গুলোকে মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করাতে সক্ষম হন। এভাবে তিনি উদ্বাস্তু মেয়েদের শিক্ষাদানের সুযোগ তৈরি করেন। প্রথমে একটি তাঁবুতে কয়েক জন মেয়েকে নিয়ে শিক্ষাদান শুরু করেন তিনি। শুরুতে পাঠ কার্যক্রম হাতে লিখে দিতেন।
শরণার্থী মেয়েদের শিক্ষায় আসিফির প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে ইউএনএইচসিআর বলেছে, ‘সীমিত সম্পদ ও সাংস্কৃতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আসিফি প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে এক হাজার শরণার্থী মেয়েকে শিক্ষার আলো দিয়েছেন।’
আসিফি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আপনাদের শিক্ষিত মা থাকলে আপনাদের ভবিষ্যত প্রজন্মও নিশ্চিতভাবেই শিক্ষিত হবে। তাই মেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার অর্থ আপনারা পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষা দিলেন। আমি সেই দিনটি কামনা করি যেদিন লোকজন আফগানিস্তানকে যুদ্ধের জন্য নয়, মানসম্মত শিক্ষার জন্য মনে রাখবে।’
জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, যেসব দেশের বিপুল সংখ্যক শরণার্থী রয়েছে তাদের মধ্যে আফগানিস্তান অন্যতম। দেশটির ২৬ লাখ লোক বর্তমানে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তাদের অর্ধেকের বেশি শিশু।
বিশ্বব্যাপী যেখানে প্রতি দুই শরণার্থী শিশুর একজন প্রাথমিক স্কুল ও প্রতি চার জনে একজন মাধ্যমিক স্কুলে যায় সেখানে পাকিস্তানে বসবাসরত আফগান শরণার্থী শিশুদের অবস্থা ভয়াবহ। সেখানে থাকা প্রায় ৮০ শতাংশ শিশু স্কুলে যায় না বলে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে।
অপর এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শরণার্থী প্রধান অ্যান্টোনিও গুটেরেস বলেন, মানসম্মত ও নিরাপদ শিক্ষা অর্জন শিশুদের বড় হয়ে চাকরির নিশ্চয়তা দেয়। ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু ও তাদের সম্প্রদায় গঠনে সহায়তা করে। এমনকি তাদেরকে বঞ্চনা ও অপব্যবহার থেকে রক্ষা করে।
শরণার্থীদের সেবায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য জাতিসংঘের প্রথম শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ও মেরু অঞ্চল পাড়ি দেওয়া নরওয়ের নাগরিক ফ্রিডজফ নানসেনের সম্মানে ১৯৫৪ সাল থেকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
আগামী ৫ অক্টোবর জেনেভায় এক অনুষ্ঠানে আসিফির হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। পুরস্কার হিসেবে তিনি একটি মেডেল ও এক লাখ মার্কিন ডলারের চেক পাবেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button