মুক্তি পেলেন লতিফ সিদ্দিকী

A latifসাবেক মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। সোমবার বিকালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান।
বিকাল পৌনে ৫টার দিকে হাসপাতালের কেবিন ব্লকের ৫১২ নম্বর কক্ষ থেকে বের হন লতিফ সিদ্দিকী। এ সময় সাংবাদিকরা তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলেও তিনি তা এড়িয়ে যান। পরে তিনি হেঁটে হাসপাতাল থেকে বের হন। গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী।
এর আগে গত ২৬ মে সাত মামলায় ছয় মাসের জন্য হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। পরে গত ২৩ জুন আরো ১০ মামলায় তাকে হাইকোর্ট থেকে জামিন দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে টাঙ্গাইল সমিতির এক মতবিনিময় সভায় হজ, তাবলিগ জামায়াত ও প্রধানমন্ত্রীপুত্র জয় সম্পর্কে বেশকিছু মন্তব্য করেন। ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দেশে তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা দায়ের হয়।
নিউইয়র্কের ওই সভায় লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরবিরোধী। হজে যে কতো ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়।’
তিনি বলেন, ‘হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরব গেছে। তাদের কোনো কাম নাই। তাদের কোনো প্রোডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন করতেছে। শুধু খাচ্ছে আর দেশের টাকা নিয়ে ওখানে দিয়ে আসছে। অ্যাভারেজে যদি বাংলাদেশ থেকে এক লাখ লোক হজে যায়, প্রত্যেকের ৫ লাখ টাকা করে ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়।’
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) সম্পর্কে লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ চিন্তা করলো, এ জাজিরাতুল আরবের লোকেরা কীভাবে চলবে। তারা তো ছিল ‘ডাকাত’। তখন একটা ব্যবস্থা করলো যে, তার অনুসারিরা প্রতিবছর একবার এক সঙ্গে মিলিত হবে এবং এর মধ্যদিয়ে একটা আয়ের ব্যবস্থা হবে।’
তিনি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কেও কটূক্তি করেন। তার এ বক্তব্য বাংলাদেশের বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল, টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় বিভিন্ন ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়।
এরপর ওই বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে ভারত থেকে দেশে ফেরেন লতিফ সিদ্দিকী। দেশে ফেরার পরপরই ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দল তার গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। ২৬ নভেম্বর ধানমণ্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করার পর লতিফ সিদ্দিকীকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ সময় তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেয়া হয় এবং আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়। গত ২৬ মে লতিফ সিদ্দিকী হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান। ওইদিনই হাইকোর্ট মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত করে।
কারণ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৮ ধারা অনুযায়ী দেশের বাইরে সংঘটিত অপরাধ নিজ দেশে বিচার করতে হলে মামলা দায়েরের আগে সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি।
এছাড়া সংবিধানের ৩৫(২) ধারা অনুযায়ী একই অপরাধের ঘটনায় একাধিক মামলা চলতে পারে না। এ বিবেচনায় লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দেয়া হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button