শ্বেত পাথরে সাজানো শেখ জাইদ মসজিদ

Shaik Jaidমুহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান: শ্বেত পাথর দিয়ে সাজানো শেখ জাইদ গ্র্যান্ড মসজিদ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে বড় মসজিদ। অবস্থান রাজধানী আবুধাবীতে। মুসল্লিদের জন্য খুলে দেয়া হয় ২০০৭ সালের রমজান মাসে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দেশটির মানুষের মূল্যবোধ ও আবেগকে সম্মান জানাতে।
এখানে একসাথে নামাজ আদায় পারে প্রায় ৪০ হাজার মুসল্লি। মূল ঘরে নামাজ আদায় করতে পারে ১০ হাজার। মহিলাদের জন্য রয়েছে দুটি পৃথক কক্ষ। যেখানে প্রতিটিতে একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে দেড় হাজার মুসল্লি।
মসজিদটির নাম দেয়া হয়েছে জাইদ বিন সুলতান আন নাহিয়ানের নামে। আরব আমিরাতের ৩৩ বছরের শাসক ছিলেন তিনি। তিনিই মসজিদটির নামফলক স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু উদ্বোধন করতে পারেন নি। এর আগেই ইন্তেকাল করেছেন। এই মসজিদের পাশেই তাঁর কবর।
মসজিদের ডিজাইনে সমন্বয় করা হয়েছে আরব, মোঘল ও মরিশ নকশার। মূল মসজিদের চার কোনায় রয়েছে চারটি বড় মিনার। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা প্রায় ১১৫ মিটার। ভেতরে ও বাইরে আরো রয়েছে ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের ৮২টি ডোম। সবগুলো ডোম সাজানো হয়েছে শ্বেত পাথর দিয়ে।
অনেকগুলো বিশ্ব রেকর্ডও রয়েছে মসজিদটির। নামাজ কক্ষে বিছানো কার্পেটটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় হাতে বোনা কার্পেট। ৪৭ টন ওজনের কার্পেটটি লম্বায় পাঁচ হাজার ৬২৭ বর্গমিটার। বানিয়েছেন ২০ জন টেকনিশিয়ান, ৩০ জন কর্মচারি আর এক হাজার ২০০ বুননকারী মিলে। বানাতে সময় লেগেছে প্রায় ২০ মাস। এর মধ্যে ১২ মাস লেগেছে সেলাই করতে আর আট মাস লেগেছে ডিজাইনে। ডিজাইন করেছেন ইরানের বিখ্যাত ডিজাইনার আলি খালিকী। কার্পেটটির ৭০ শতাংশ উল আর ৩০ শতাংশ সুতা দিয়ে তৈরি।
আলোক সজ্জার জন্য জার্মান থেকে আনা হয়েছে সবচেয়ে বড় ঝাড়বাতি। যার ওজন প্রায় ১২ টন। আরো ছয়টি ঝাড়বাতি রয়েছে ভেতরে। সবগুলোই সাজানো হয়েছে কপার ও স্বর্নের প্রলেপ এবং লক্ষাধিক ক্রিস্টাল দ্বারা। রাতে মসজিদটির বাইরের দেয়াল ঘিরে বিচ্ছুরিত হয় নীলাভ-ঘিয়ে আলো। চাঁদের আলোর সাথে যে আলো পরিবর্তিত হয়।
৩৮ জন ঠিকাদার এবং দেশ ও বিদেশের সহস্ত্রাধিক শ্রমিক কাজ করেছেন মসজিদটি নির্মাণে। নির্মাণসমাগ্রী আনা হয়েছে গ্রিস, ইতালি, জার্মানি, চীন, অস্ট্রিয়া, ভারত ও নিউজিল্যান্ড থেকে। এটি মূলত বিশ্বখ্যাত হয়েছে বিভিন্ন ইসলামিক স্থাপত্য শৈলী ও নির্ভেজাল সাদা রংয়ের জন্য।
মসজিদটি একটি আধুনিক শিক্ষা কেন্দ্র আবার ভ্রমণপিয়াষীদের জন্য চমকপ্রদ বিনোদন কেন্দ্রও। চাইলে আপনিও যেতে পারেন পরিবারের সব সদস্যকে নিয়ে মসজিদটি দেখতে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button