ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবই তরুণদের বিপথগামী করছে

Scholarফয়েজ উল্লাহ ভূঁইয়া: তরুণ-তরুণীদের মাদকাসক্ত হয়ে পড়াসহ অনৈতিক উচ্ছৃঙ্খল বেপরোয়া জীবনে পা বাড়ানো এবং তা মারাত্মক সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়ার পেছনে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাবকেই প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন ধর্মীয় চিন্তাবিদেরা। তারা বলছেন, নিয়ন্ত্রণহীন আকাশসংস্কৃতির কুপ্রভাব, ইন্টারনেটসহ আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার, মাদকের অতি সহজলভ্যতা তরুণ সমাজকে বিপথে নেয়ার মারাত্মক উপকরণ হিসেবে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষা বিশেষ করে ইসলামি শিক্ষা ও মূল্যবোধ রক্ষাকবচ দেয়াল (প্রটেকশন ওয়াল) হিসেবে কাজ করতে পারত; কিন্তু আজ ধর্মীয় শিক্ষা ও মূল্যবোধ সমাজে শুধু গুরুত্বহীনই নয়, সমাজ থেকে তা বিদায় নেয়ারও পথে। তাদের মতে, ধর্মীয় অনুশাসনই মানুষকে চরিত্রবান করে তুলে। মানুষের মধ্যে বিবেক সৃষ্টি করে। তার মধ্যে খারাপ পথে যাওয়া ও চলার ব্যাপারে ভয়ভীতির সৃষ্টি করে। বিবেকের শাসনে শাসিত হওয়ায় অভ্যস্ত করে এই শিক্ষা। ধর্মীয় শিক্ষা মানুষের মধ্যে মায়া মমতা, ভালোবাসা, সহনশীলতা তৈরি করে। আর সেই ধর্মীয় শিক্ষার শুরু শিক্ষার হাতেখড়ি থেকে শিক্ষার প্রত্যেক স্তরে থাকাটা জরুরি। প্রত্যেক ধর্মেই এই ধরনের শিক্ষা রয়েছে। ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের মতে, বিগত তিন দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে অসংখ্য মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের আধুনিক ও ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষার নামে শিশুকাল থেকেই ধর্মীয় শিক্ষার বাইরে রাখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে যে আরবি শিক্ষা দেয়া হতোও তা-ও দেয়া হচ্ছে না অনেক পরিবারে। পরিবারের মধ্যেও ধর্মীয় অনুশাসনের অনুপস্থিতি ও শিথিলতা মারাত্মক রূপ নিয়েছে। অসংখ্য পরিবার আধুনিকতার নামে পোশাক-আশাক ও চালচলনে পশ্চিমা ও বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ করছে। দেশী-বিদেশী টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত প্রায় উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ চালচলন, জীবন আচার সংবলিত অনুষ্ঠান, নাটক, সিনেমার খুন খারাবির কাহিনী, দৃশ্য প্রভৃতি বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবার ও সমাজে। কিছু টিভি চ্যানেল সিরিয়ালের নামে পরিবারের সদস্যদের অনৈতিক সম্পর্ক, পরকীয়া, পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, বিত্তবৈভবে গা ভাসিয়ে দেয়া, অতি বিলাসী পোশাক, উগ্র সাজসজ্জা, বন্ধুবান্ধবীদের সাথে অবাধ মেলামেশার দৃশ্য ও কাহিনী প্রচার করছে, যা মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশের পারিবারিক ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে সেই ধরনের জীবনে অভ্যস্ত হতে উসকানি দিচ্ছে। এর প্রভাব বেশি পড়ছে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের ওপর। ফলে স্বকীয় এবং অধিকাংশ মানুষের নিজস্ব সংস্কৃতি চাপা পড়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে দেশীয় টিভি নাটকে, উপন্যাস সিনেমায় ব্যঙ্গাত্মকভাবে ইসলামি সংস্কৃতিকে উপস্থাপনের ফলে ইসলাম সম্পর্কে তরুণসমাজে বিরূপ ধারণা তৈরি হচ্ছে। বিভিন্নভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রবণতাও দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে। এভাবে সমাজ ও পরিবার থেকে ধর্মীয় শিক্ষা ও শিক্ষার প্রভাব ক্রমেই কমে আসার কারণেই মূলত মানুষের বিশেষ করে তরুণসমাজের মধ্যে নৈতিক অবক্ষয়ের জন্ম দিচ্ছে। তরুণসমাজ ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, পেথিডিন ইত্যাদি নেশায় আসক্ত হচ্ছে। বিপথগামী তরুণ-তরুণীরা নিজস্ব অন্ধকার জগৎ তৈরি করছে। তারা বন্ধুত্বের নামে অবাধ যৌনাচারেও লিপ্ত হচ্ছে। পরিবারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে নানা অঘটন ঘটাচ্ছে। সর্বশেষ রাজধানীর চামেলীবাগে পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান আপন মেয়ের হাতে খুন হওয়ার মধ্য দিয়ে নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের দিকটি সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। এই পুলিশ কর্মকর্তার ইংলিশ মিডিয়ামে ও লেবেল পড়–য়া মেয়ে মাদকের অন্ধকার জগতে পা বাড়িয়ে বিপথগামী হয়। অনৈতিক উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। বাবা-মা মেয়েকে তা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করলে আপন কন্যাই বখে যাওয়া বন্ধুদের নিয়ে নিজ বাসায় নিজ মা-বাবাকে খুন করার মতো লোমহর্ষক ঘটনার জন্ম দেয়।
সমাজবিজ্ঞানীসহ বিশেষজ্ঞরা বললেন, শুধু ঐশী নয়, এমন অসংখ্য ঐশীর জন্ম হচ্ছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশে স্কুল-কলেজ পড়–য়া বিশেষ করে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল-কলেজে ইংলিশ মিডিয়ামসহ বিভিন্ন মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা মাদকের মরণ নেশায় মত্ত হয়ে পড়ছে। অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হচ্ছে পরস্পর। উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়েরা এ ক্ষেত্রে অতি বেপরোয়া জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। অনেক পরিবারের শেষ পর্যন্ত বোধোদয় ঘটলেও বখে যাওয়া সন্তানকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে পারছেন না। ধর্ম বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অবক্ষ্যয়ের হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করতে হলে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। পরিবার থেকেই সেটা শুরু করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক হবে। এই শিক্ষাকে কোন স্তরের গণ্ডিতে আবদ্ধ করা যাবেন। নিজ নিজ ধর্মের অনুসারীরা তাদের ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ মুসলমান প্রধান হওয়া এখান ইসলামি সংস্কৃতি ও তাহমযীব তমদ্দুন চর্চাকে উৎসাহিত করতে হবে। বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ রোধে টিভি চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাদকের সহজ লভ্যতা বন্ধ করতে হবে। ইন্টারনেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ বিশেষ করে পর্নোগ্রাফি বন্ধ করতে হবে। পিতা-মাতাকে সন্তানের প্রতি অধিক নজর দিতে হবে। সন্তানকে সময় দিতে হবে। সব বিনিয়োগের ওপর সন্তান মানুষ করাকে বড় বিনিয়োগ মনে করতে হবে। ধর্ম বিদ্বেষ বন্ধ করতে হবে। ধর্মের প্রতি অবমাননা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঐশীর ঘটনার ব্যাপারে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ইসলামি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. এম শমসের আলী বলেন, নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই সমাজে আজকে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। ধর্মীয় শিক্ষা ও মূল্যবোধের অভাব নৈতিক অবক্ষয়ের জন্ম দেয়। কারণ ধর্মই মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দেয়। সব ধর্মেই এই শিক্ষা রয়েছে। ধর্মীয় মূল্যবোধ যাদের থাকবে তারা ইয়াবা, ফেনসিডিল বা এই ধরনের মাদক খেতে পারে না। বেপরোয়া উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে পারে না।
তিনি বলেন, এর জন্য পরিবার এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দু’টিই দায়ী। পরিবারের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। শুধু টাকা-পয়সা দিয়ে সন্তানকে মানুষ করা যায় না। সন্তানকে অপত্য স্নেহ ভালোবাসা দিতে হবে। সন্তানকে সময় দিতে হবে। তাকে নৈতিকতা অর্জনের পথে চলার জন্য বোঝাতে হবে, উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পিতা-মাতার যত রকমের ইনভেস্ট আছে সবকিছুর ওপরে বড় ইনভেস্ট হচ্ছে তার সন্তান। এটা সবাইকে বুঝতে হবে, মানতে হবে। পরিবারই হচ্ছে এখানে মূল বিষয়। নিয়ন্ত্রণ পরিবার থেকেই থাকতে হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ সৈয়দ আশরাফ আলী এ ব্যাপারে বলেন, এটা সামাজিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ পরিণতি। সমাজ থেকে আদর্শিক তথা ধর্মীয় মূল্যবোধ একেবারেই চলে গেছে। আকাশ সংস্কৃতি, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যবহার, মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা তরুণ সমাজকে ধ্বংস করছে। কিন্তু যে ধর্মীয় শিক্ষা প্রটেকশন ওয়াল হিসেবে কাজ করার কথা ছিল সেই শিক্ষা তো এখন নেই। ফলে নৈতিক অবক্ষয় মারাত্মক রূপ নিচ্ছে। এখন রাস্তার মোড়ে মোড়ে মাদক পাওয়া যায়। সমাজ, পুলিশ, মসজিদের ইমাম কেউ বাধা দিচ্ছে না। এই মাদকের ছোবল ঘরে ঘরে। ছেলেমেয়েরা বিপথে যাচ্ছে এভাবে। এখন পর্নোগ্রাফির জন্য অন্য কোথাও যাওয়া লাগে না। তরুণ-তরুণীরা ইন্টারনেটে মোবাইল ফোনে ঘরে বসে সেগুলো দেখছে। বিদেশী চ্যালেলে ছেলেমেয়েরা কী দেখছে। অধিকাংশ চ্যানেলে নৈতিক অবক্ষয় ঘটে এমন দৃশ্যও ঘটনাবলী দেখানো হচ্ছে। স্টার প্লাস, টিএলসি ধরনের চ্যানেল এ দেশের তরুণ-তরুণীদের কী শেখাচ্ছে? কেন এগুলো চালু রাখতে হবে? এটাতো মুসলমান প্রধান দেশ। এখানে ইসলাম মানুষের ধর্ম। ধর্মীয় মূল্যবোধ যেখানে প্রাধান্য পাওয়ার কথা সেখানে এসব অপসংস্কৃতি কেন? তিনি বলেন, আজকে পরিবারকে ভাঙা হচ্ছে ছোট করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে ছোট পরিবার সুখী পরিবার। আসলে ছোট পরিবার সুখী পরিবার নয়। আমামাদের বাপ চাচারা একই পরিবারে থাকতেন। ফলে কেউ একটি বিড়ি খেলেও ধরা পড়ে যেত। এখন পরিবারে লোক সংখ্যা না থাকায় অপরাধ করলে, খারাপ কাজে লিপ্ত হলেও কেউ দেখছে না। বেডরুমে কম্পিউটার দেয়া হচ্ছে। সন্তান নাকি রাত জেগে পড়াশোনা করবে। আসলে তো সে পড়াশোনা করে না, অন্য কিছু দেখে। অপসংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। নারীর উলঙ্গ দেহ দেখে কী শেখবে তরুণরা। ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব শিশুকাল থেকে। এটার নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত বা স্তর থেকে শুরু করতে হবে কেন। শিশুকালে ধর্মীয় শিক্ষার ফলে যে নৈতিকতা গড়ে তুলে সেটার প্রভাব চিরকাল থাকে। সেই শিক্ষাই মানুষকে চরিত্রবান করে তুলে। ছেলে সন্তানকে ছেড়ে দেয়া যাবে না। তাদের সময় দিতে হবে। বাবা-মা সময় না দিলে সন্তান কখনো ভালোভাবে গড়ে উঠতে পারবে না।
বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের মহাসচিব বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা আব্দুল জব্বার জাহানাবাদী এ ব্যাপারে বলেন, আজকের সমাজে এমন অবক্ষয় ঘটছে যে, সন্তান বাবা-মাকে পর্যন্ত হত্যা করছে। পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে গেলে এমন হয় ভাবতেই অবাক লাগে।
তিনি বলেন, এর একমাত্র কারণ হচ্ছে ইসলামি শিক্ষার অভাব। ব্রিটিশদের চালু করা প্রচলিত শিক্ষার উদ্দেশ্য ছিল কেরানী তৈরি করা। এই শিক্ষা মানুষকে কী দেবে ? ইসলামি শিক্ষা যখন সমাজে ছিল তখন মানুষ দরজা খুলে ঘুমাত। ইসলামি শিক্ষা জ্ঞানের শিক্ষা। আল্লাহকে ভয় করার শিক্ষা। এই শিক্ষা নৈতিক চরিত্র ও মানুষ তৈরির শিক্ষা। তিনি বলেন, ইসলামি শিক্ষাকে ব্রিটিশ আমল থেকেই দূরে রাখা হয় মূল শিক্ষাব্যবস্থা থেকে; কিন্তু বিভিন্নভাবে মানুষ শিশুদের ইসলামি শিক্ষা দিত। সন্তান কিছুটা হলেও সঠিকপথে থাকার শিক্ষা পেত। কিন্তু টেলিভিশন, ইন্টারনেটসহ অন্যান্য মাধ্যমের কারণে তরুণসমাজ এখন বেশি বিপথগামী হচ্ছে । এই ক্ষেত্রে ইসলামি শিক্ষা থাকলে তারা এগুলো থেকে বিরত থাকার জন্য বিবেকের তাড়না অনুভব করত। কিন্তু সেই শিক্ষা আজ আমাদের দেশ থেকে বিদায় করা হচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ধর্মকে প্রায় উঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা যে মাধ্যমেই হোক তাতে অবশ্যই ইসলাম শিক্ষা রাখতে হবে। শুধু রাখলেই হবে না ভালোভাবেই রাখতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা ইসলামের আলোকে চরিত্র গঠন করতে পারে। অনৈতিক কাজে পা বাড়ানো থেকে বিরত থাকতে পারে। তিনি বলেন, তরুণরা আসলে কোনো আদর্শ খুঁজে না পাওয়ায় নেশা করছে, খারাপ পথে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবারে ইসলামের অনুশাসনের ব্যাপারেও বাবা-মাকে জোর দিতে হবে। বিজাতীয় সংস্কৃতির প্রভাবে প্রগতির নামে পরিবারে অন্য সদস্যদের অনৈসলামিক জীবনযাপনও সন্তানকে খারাপ পথে যাওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করে। বাবা-মাকেও ইসলামের অনুশাসন ও শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জীবনযাপন করতে হবে। সন্তানকে শিশুকাল থেকেই সময় দিয়ে ইসলামি শিক্ষার ভিত্তি তৈরি করে দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান বিশ্ব বৌদ্ধ ফেডারেশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সভাপতি অধ্যাপক সুকোমল বড়–য়া বলেন, আজকে সমাজের অবক্ষয়ের জন্য প্রধানত দায়ী নৈতিক ও ধর্মীয় অনুশাসনজনিত মূল্যবোধের অভাব। পাশাপাশি আকাশসংস্কৃতি আমাদের নিজস্ব মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিতে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ফলে মাদাকাসক্তি থেকে শুরু করে খুন-খারাবি, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করার প্রভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি গুলশান, বনানীতে বাস করেন এমন লোক আছেন যাদের প্রাচুর্যের অভাব নেই; কিন্তু তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ না থাকায় পরিবারে নানা অঘটন বিপত্তি ঘটছে। তিনি বলেন, ধর্মীয় অনুশাসন মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ও বিবেকবোধের সৃষ্টি করে। বিবেকই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে। বিবেকের তাড়না বা নিয়ন্ত্রণ না থাকলে মানুষের পাশবিক গুণাবলি প্রাধান্য পাবে। সেটিই এখন ঘটছে।
তিনি বলেন, নৈতিকতা ও ধর্মীয় শিক্ষা জীবনের প্রাথমিক পর্যায় থেকেই অপরিহার্য। এই শিক্ষাই মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ করে তোলে। তার মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন, ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের জন্ম দেয়।
তিনি বলেন, আজকে আমরা শুধু তরুণদের অবক্ষয়ের কথা বলছি। ধর্মীয় অনুসশাসনের অনুপস্থিতিতে এই অবক্ষয় তরুণ, যুবক, পৌঢ় যেকোনো বয়সেই ঘটতে পারে। মানুষের মনে খারাপ প্রবৃত্তি জন্ম নিতেই পারে। আর সেটি থেকে তাকে ধর্মীয় ও নৈতিক অনুশাসনই তাকে বিরত রাখবে। ধর্মই মানুষকে আত্মশাসনের শিক্ষা দেয়। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে সমাজ ও পরিবারকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button