মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ৫৯ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শেষ করার লক্ষ্যে তার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আজ এই লক্ষ্য পূরণে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধুদের সহায়তা কামনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকারীদের চার দশকের বেশী সময় পরে বিচারের সম্মুখীন করা একটি খুবই কঠিন কাজ। তবে, আমরা দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ এবং এই কাজ শেষ করার জন্য আমরা আপনাদের সমর্থন চাই।’
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা প্রদানকারী বিদেশী বন্ধুদের সম্মানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন। অনুষ্ঠানে ৫৯ জন বিদেশী বন্ধু ও একটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ৪২ বছর আগে একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় লাভের প্রয়াসে তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন ও অবদানের জন্য বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা এবং মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা প্রদান করা হয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬০ জন ‘বিদেশী বন্ধু’ বা তাদের প্রতিনিধিদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পদক তুলে দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপটেন (অবঃ) এ বি তাজুল ইসলাম এবং পদক গ্রহনকারীদের বুদ্ধিজীবী ও সমাজকর্মী প্রণব রঞ্জন রায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম মোশাররফ হোসেন ভূইঞা পদকপ্রাপ্তদের সম্মাননাপত্র পাঠ করেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীবর্গ, প্রধানমন্ত্রী উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যবর্গ, কূটনীতিকবর্গ, এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ বর্ণ্যাঢ্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জাতির ওপর চাপিয়ে দেয়া অপরাধীদের রেহাই দেয়ার সংস্কৃতির অবসান ঘটানোর একটি প্রক্রিয়ার সূচনা করতে সম হয়েছে। তিনি বলেন,‘এই উদ্যোগ দোষী ব্যক্তিদের সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচারের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রত্যাখ্যান করার পরিবর্তে বরং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করেছে।’
বিচার প্রক্রিয়া স্বাধীনভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করেন যে, এই বিচার প্রক্রিয়া দেশের ইতিহাসের একটি কাল অধ্যায় বন্ধ করতে সহায়ক হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া আমাদের নিজ নিজ ভূমিকা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরকে সুযোগ করে দিয়েছে।’ শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার প্রয়াসে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধুদের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন,‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের বছর ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে আমাদের প্রয়াসে আমরা আপনাদের শুভ কামনা চাই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবে রূপায়িত করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার জনগণের সম্ভাবনা ও মেধা কাজে লাগানোর জন্য নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন,‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক নীতি সমুন্নত রাখার এবং নজিরবিহীন প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির যুগে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে এই নীতি থেকে অনুপ্রেরণা লাভের প্রয়াস চালিয়ে যাবো।’ – বাসস।



