শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে কাজ করার প্রতিশ্রুতি

নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলেন করবিন

লন্ডনসহ সম্পদশালী অঞ্চলে ‘ওয়েলথ ট্যাক্স’ আরোপের ঘোষণা

আগাম নির্বাচনের প্রচারণা শুরু করেছে বৃটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। দলটির প্রধান জেরেমি করবিন বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে দেশে সত্যিকারের পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন। যুক্তরাজ্যের বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে তিনি ‘কারচুপির ব্যবস্থা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এর কঠোর আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা চালাচ্ছে সুবিধাভোগী অভিজাত কর ফাঁকিবাজ, কোটিপতি ব্যবসায়ী ও দুর্বৃত্ত মালিকরা। তাই আসন্ন নির্বাচন হচ্ছে দেশকে বদলে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ, যাতে করে কোনও সম্প্রদায়কে পিছিয়ে থাকতে না হয় এবং সত্যিকার পরিবর্তন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে এটাই করবিনের প্রথম ভাষণ।

মুষ্টিমেয় সংখ্যক মানুষের জন্য নয় বরং বেশিরভাগ মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে সত্যিকার পরিবর্তন আনতে চান লেবার নেতা জেরেমি করবিন। পশ্চিমা পুঁজিবাদী ঐক্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শ্রমিকদের শোষণকারী, জনগণকে হেয় করা এবং পরিবেশ দূষণকারী অভিজাত দুর্নীতিগ্রস্তদের উৎখাত করতে এই নির্বাচন একটি সুবর্ণ সুযোগ। নির্বাচনি ভাষণে রেল, ডাক ও পানি সেবার রাষ্ট্রীয়করণেরও প্রস্তাবনা দিয়েছেন করবিন। ব্যাংকারদের উপর উচ্চহারে করা আরোপের কথাও বলেছেন এ রাজনীতিবিদ। লেবার নেতা বলেন, অনেকে বলেন পরিবর্তন সম্ভব নয়, সত্যিই কি তাই? এমন একটি স্বাস্থ্যসেবা যেখানে লোকজনকে অপেক্ষা করতে হবে না এবং বিনামূল্যে ব্যবস্থাপত্র পাওয়া যাবে। এটি কি খুব বেশি চাওয়া? বিনামূল্যে ব্যক্তিগত সেবাযত্নসহ একটি লালন-পালন ব্যবস্থা কি খুব বেশি চাওয়া হয়ে যায়? ১৬ বছরের তরুণ থেকে শুরু করে সবার জন্য বাঁচার মতো মজুরির প্রত্যাশা কি খুব বেশি চাওয়া? কষ্ট করে ঘুমানো বন্ধে সামর্থ্যের মধ্যে ঘর কেনা ও সঞ্চয়ের মধ্যে ঘর ভাড়ার ব্যবস্থা করা কি বেশি কিছু? শিশুদের জন্য ৩০ ঘণ্টা যত্ন, উন্নত শিক্ষা থেকে সমাধিতে মোমবাতি কি খুব বেশি চাওয়া? না, এসব খুব বেশি চাওয়া নয়। কারণ ঝুঁকিপূর্ণ ও মৃতপ্রায় পৃথিবীতে বসবাস এড়াতে হলে আমাদের বৈপ্লবিকভাবে পরিবর্তনের পথে এগুতে হবে।

করবিন জানিয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে তার সরকার লন্ডনসহ সম্পদশালী অঞ্চলে ‘ওয়েলথ ট্যাক্স’ বা সম্পদ-কর আরোপ করবে। এ থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে দেশজুড়ে অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর অঞ্চলের উন্নয়নে ব্যয় করবে তার সরকার। এখন করবিনের ঘোষিত ওয়েলথ ট্যাক্স এড়াতেই দেশ ছাড়তে চাইছেন অতি ধনী ব্রিটিশরা।

উল্লেখ্য, ব্রেক্সিট নিয়ে দীর্ঘ টানাপড়েন আর অনিশ্চয়তার পর আগামী ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের জুনে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নির্বাচনে ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৬৪৮টি আসনের ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেছে লেবার পার্টি পেয়েছে ২৬১টি আসন। আর কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ৩১৭টি আসন। কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ছোট দলের সমর্থনে সরকার গঠন করে কনজারভেটিভ পার্টি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button