প্রবাসীদের কল্যাণে প্রবাসীকল্যাণ বোর্ড আইন অণুমোদন

বিদেশে কর্মরত প্রবাসী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণের বিধান রেখে ‘প্রবাসীকল্যাণ বোর্ড আইন-২০১৭’ নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন, ২০১৭’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অধিকার সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিতের জন্য আমাদের একটা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন আছে। সেটা হলো ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন দ্য প্রটেকশন অব দ্য রাইটস অব অল মাইগ্রেন্টস ওয়ার্কার্স অ্যান্ড মেম্বারস অ্যান্ড দেয়ার ফ্যামিলিজ ১৯৯০’। এটা জাতিসংঘের একটি কনভেনশন। আমরা যেহেতু এ কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী তাই এ কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের একটি আইন করার বাধ্যবাধকতা ছিল, তাই একটি নতুন আইন করা হয়েছে।
সচিব বলেন, আমরা এ কাজ এতোদিন করে এসেছি একটি বিধিমালার মাধ্যমে। তার নাম হলো ‘ওয়েজ ওনার্স কল্যাণ তহবিল ২০০২’। সেটাকে একটু গুছিয়ে এ আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি জানান, এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু জায়গা রয়েছে। যেমন- ‘অভিবাসী’ শব্দটি আমাদের অন্য একটি আইনে আছে। সেটা হলো ‘বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন-২০১৩’। ওখানে অভিবাসী বলতে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, নতুন আইনেও বিষয়টিকে সেভাবেই বুঝতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আইনে একটি বোর্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর নাম ‘প্রবাসীকল্যাণ বোর্ড’। এ বোর্ডের অনেকগুলো কাজের মধ্যে রয়েছে, বিদেশগামীদের জন্য প্রাক বহির্গমন ব্রিফিং সেন্টার স্থাপন পরিচালনা ও ব্রিফিং দেওয়া, সহায়তা দেওয়া, তাদের নির্ভরশীলদের কল্যাণ স্বার্থে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ, প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা, প্রবাসে কেউ মারা গেলে তাদের মৃতদেহ আনা, সৎকারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ ও আর্থিক সহায়তা, কেউ যদি আহত বা শারীরিকভাবে অক্ষম হন তবে সেসব প্রবাসীদের দেশে আনা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা ইত্যাদি অনেকগুলো দায়িত্ব দেওয়া আছে এ বোর্ডকে। মোট দায়িত্বের সংখ্যা ২১টি।
তিনি বলেন, আইনের সাত নম্বর ধারায় বিদেশে অবস্থানরত নারী অভিবাসী কর্মীদের ক্ষেত্রে বোর্ডকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া আছে। বিদেশে অবস্থানরত কোনো নারী অভিবাসী কর্মী কোনো অপরাধের শিকার হলে বা কোনো দুর্ঘটনা বা অসুস্থতা বা দুর্দশাগ্রস্ত বা বিপদগ্রস্তের ক্ষেত্রে তাদের উদ্ধার, আইনগত সহায়তা দেওয়া ও ক্ষতিপূরণ আদায়, চিকিৎসা দেওয়াসহ আরো কয়েকটি দায়িত্ব নেবে এ বোর্ড। বিষয়টি ওই দেশগুলোতে অবস্থিত দূতাবাসের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগ করে, যিনি এমপ্লয়ার তার সঙ্গে নেগোশিয়েট করে, আইনি নোটিশ প্রদান ছাড়াও নানা উপায়ে বোর্ড এ কাজ করবে। কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হবেন পরিচালক প্রবাসীকল্যাণ তহবিল।
তিনি আরো বলেন, কল্যাণ বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদ হবে ১৬ সদস্যের। এর মধ্যে বোর্ডের প্রধান হবেন সচিব প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। যিনি মহাপরিচালক থাকবেন তিনি হবেন সদস্য সচিব। এর মধ্যে নারী সদস্য থাকবেন বাধ্যতামূলক দু’জন। বোয়েসেলের সদস্য ধাকবেন, বায়রার সভাপতি থাকবেন, বিদেশ থেকে প্রত্যাগত দু’জন প্রবাসী কর্মী থাকবেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button