গাজার বাতাসে লাশের উৎকট গন্ধ

Palasগাজা উপত্যাকায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে ভেঙে যাওয়া ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির শুরুতে আলজাজিরার সংবাদদাতারা সেখানকার বিধ্বস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন করতে যান। তারা সেখানে ধ্বংস্তূপের নিচে অনেক পচা লাশ আটকে থাকার কথা জানিয়েছেন।
গতকাল ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি শুরুর প্রথম দিকে সাংবাদিক ও গাজার বাসিন্দারা বিভিন্ন এলাকায় যান। তারা সেখানে এখনো ধ্বংস্তূপের নিচে অসংখ্য পচা লাশ পড়ে থাকার কথা জানান। এ ঘনবসতিপূর্ণ ফিলিস্তিনি ছিটমহলে চার সপ্তাহের ইসরাইলি বর্বর হামলায় তারা নিহত হয়েছে। ইসরাইল ও হামাস ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য শান্ত অবস্থা বিরাজ করেছিল। প্রায় চার সপ্তাহের হামলার পর সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য গাজাবাসী শ্বাস নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। এ হামলায় এক হাজার ৪০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশ নিরীহ সাধারণ মানুষ।
গাজার পূর্ব প্রান্তের শেজাইয়া জেলাটি ইসরাইলি বর্বরতার বড় সাক্ষ্য হয়ে রয়েছে। সেখানকার জীবিত বাসিন্দারা যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই কাছাকাছি এলাকায় ছুটে যান। অনেকে দেখতে পান যে ইসরাইলি হামলায় তাদের বাড়িঘর মাটির সাথে মিশে গেছে। আলজাজিরার সংবাদদাতা ইমতিয়াজ তাইয়েব সেখান থেকে বলেন, শেজাইয়ার ধ্বংসলীলা ‘ভাষায় বর্ণনা করা সম্ভব নয়।’ তিনি জানান, ‘আমি অনেক ভূমিকম্পের খবর সংগ্রহ করেছি। আমি অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের খবরও সংগ্রহ করেছি কিন্তু এমন ভয়াবহ অবস্থা কোথায়ও কখনো দেখিনি। …এখানকার বাতাসে উৎকট লাশের গন্ধ।’ গত ২০ জুলাই ইসরাইল অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ শেজাইয়া জেলায় ভয়াবহ হামলা চালায়। তাতে অসংখ্য লোক নিহত হয়। সেই থেকে এলাকাটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
‘হামলার হাত থেকে কবরস্থানও রেহাই পায়নি’
গাজার উত্তর-পূর্বের বেইত হানুনের অবস্থাও ভয়াবহ। শহরটির সব ক’টি রাস্তায় ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে রয়েছে। ইসরাইলি বোমা হামলায় এখানকার অন্তত ১০টি ভবন একেবারে মাটির সাথে মিশে গেছে। আলজাজিরার ওয়ায়েল দাহদাউ সেখান থেকে জানান যে, সেখানকার অন্যান্য অনেক ভবনও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বেইত হানুনের কবরস্থানও ইসরাইলি হামলার হাত থেকে রক্ষা পায়নি। বাসিন্দারা জানান কবরস্থানে ব্যাপক বোমাবর্ষণের কারণে মাটির নিচ থেকে লাশের হাড়গোড় বেরিয়ে এসেছে।’ আনুষ্ঠানিভাবে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই গাজার দক্ষিণের খান ইউনুসের কাছে খুজা গ্রামে গোলাবর্ষণের শব্দ শোনা যায়। রাস্তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হওয়ায় আহতদের উদ্ধারে ওই এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াত সম্ভব হয়নি। ওই এলাকা পরিদর্শনকারী আলজাজিরার তামের মেশাল জানান, তিনি সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২০টি লাশ উদ্ধার করতে দেখতে পেয়েছেন। এখনো সেখানে আরো অনেক লাশ আটকা পড়ে আছে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button